রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব আব্দুল লতিফ হলে রাউডার (ওয়াইফাই সংযোগ যন্ত্র) চুরির ঘটনায় কক্ষ তল্লাশি করতে গিয়ে ছাত্রলীগের এক কর্মীর হাতে হল প্রাধ্যক্ষ লাঞ্চিত হয়েছেন। শুক্রবার হলের ২০৬ নম্বর কক্ষের সামনে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক বিশ্বনাথ শিকদারকে ছাত্রলীগ কর্মী মুহম্মদ হাফিজ চাপাতি নিয়ে মারতে যান বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।ঃ
হল সূত্রে জানা গেছে, ছাত্রলীগ কর্মী হাফিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান রানার এলাকার (রাজশাহীর বাঘা উপজেলা) ছেলে হওয়ায় প্রভাব খাটিয়ে অবৈধভাবে দীর্ঘদিন হলের ২০৬ নম্বর কক্ষে দুই সিট দখল নিয়ে থাকছেন।
এই ঘটনায় হলের প্রত্যক্ষদর্শী আবাসিক শিক্ষার্থীরা জানান, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে হলের উত্তর ব্লক থেকে ছয়টি রাউডার হারিয়ে যায়। এ কারণে হল প্রাধ্যক্ষ এবং আবাসিক শিক্ষকরা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে শুক্রবার সকালে হলের বিভিন্ন কক্ষে তল্লাশি শুরু করেন। এ সময় হলের দ্বিতীয় তলার পশ্চিম-দক্ষিণ ব্লকে ২০৬ নম্বর কক্ষে তল্লাশি করতে চাইলে ছাত্রলীগ কর্মী হাফিজ প্রাধ্যক্ষকে প্রথমে বাধা দেন। কিন্তু প্রাধ্যক্ষ বাধা না মানলে এক হাতে চাপাতি ও অন্য হাতে একটি রড নিয়ে তাকে মারতে আসেন হাফিজ।
পরে হলের আবাসিক শিক্ষক ও ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী হাফিজকে থামান। তবে পরবর্তীকালে ওই কক্ষ তল্লাশি করলেও চাপাতি ও রড উদ্ধার করেনি হল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ।
ওই হলের একাধিক ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী জানান, হাফিজ চাপাতি নিয়ে প্রাধ্যক্ষ স্যারকে মারতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাদের কয়েকজন ও হলের আবাসিক শিক্ষকরা তাকে থামান। পরে পুলিশ ও প্রাধ্যক্ষ মিলে তার কক্ষসহ হলের বিভিন্ন কক্ষ তল্লাশি করেন।
এ বিষয়ে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক বিশ্বনাথ শিকদার অভিযোগ করে বলেন, হাফিজ তার কাছে বিষয়টি নিয়ে ক্ষমা চেয়েছে। তবে সে যেহেতু হলের অনাবাসিক, তাই তার পরিচয়পত্রটি হলের অফিসে রেখে দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের কাছে অভিযোগ পেশ করবেন।
তবে ছাত্রলীগ কর্মী মুহম্মদ হাফিজ বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘আমার কক্ষ তল্লাশি করতে দিতে না চাওয়ায় হলের প্রাধ্যক্ষ অনেক শিক্ষার্থীর সামনে আমায় ধাক্কা মারেন। চাপাতি নিয়ে তাকে মারতে যাওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়।’
হল প্রাধ্যক্ষকের কাছে ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যেহেতু তিনি আমার পরিচয়পত্রটি রেখে দিয়েছিলেন, তাই তার কাছে পরিচয়পত্রটি চাইতে গিয়ে নিজের ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়েছি।’
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান রানা বলেন, তার সঙ্গে হল প্রাধ্যক্ষের কথা হয়েছে। কিন্তু তিনি চাপাতি দিয়ে মারতে যাওয়ার বিষয়টি বলেননি।