ইবি প্রতিনিধি | ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীরা পাল্টাপাল্টি মামলা করেছে। অভ্যন্তীরণ কোন্দলে চাঁদাবাজির উভয় মামলায় ৬ জন করে আসামি করা হয়েছে। ইতিমধ্যে একটি মামলায় সাবেক দুই ছাত্রলীগ নেতা আটক হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে মামলাটি মিথ্যা ও বানোয়াট দাবি করে ক্যাম্পাস অবরোধ করে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। এ নিয়ে ক্যাম্পাসে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরজ করছে।
এর আগে গত ২০শে সেপ্টেম্বর রাতে ইবি থানায় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি আল আমিন জোয়ার্দ্দার বাদি হয়ে ৬ জনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা করে। ওই রাতেই ইবির সাবেক নেতা ও বর্তমান কুষ্টিয়া সদর থানা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজু ও কুষ্টিয়া শহর শাখা যুবলীগের আহ্বায়ক আশরাফুজ্জামান সুজন আটক হন। মামলায় সাবেক নেতা তুহিন, আনিছুর রহমান বিকাশ, সাইফুল ইসলাম ও আনিচুর রহমান আনিসকে আসামি করা হয়।
পরে মঙ্গলবার পাল্টা চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেছেন শামসুজ্জামান তুহিন। তার বিরুদ্ধে মামলাকারীকে প্রধান আসামি করে ৬ জনের নামে ঝিনাইদহে পাল্টা মামলা করেন তিনি। এতে আল আমিন জোয়ার্দ্দার, মোহাম্মদ আলী শিমুল, জুয়েল রানা হালিম, শিশির ইসলাম বাবু, মো. নাজমুল ও মিজানুর রহমান লালনের নাম উল্লেখ করা হয়। এর মধ্যে লালন শাখা ছাত্রলীগের বর্তমান নেতা ও বাকিরা সাবেক নেতা ছিলেন। বর্তমানে তারা শাখা ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
অভিযোগ উঠেছে, ক্যাম্পাসে চলমান ছাত্রলীগের অবৈধ কমিটি ও প্রক্টর বিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে এসব পাল্টাপাল্টি মামলা হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তুহিন ক্যাম্পাসের চলমান মেগা প্রকল্পের অধীনে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের একটি কাজের দেখভাল করছেন। অন্যদিকে মিজানুর রহমান মিজু শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিবকে হাতে রেখে টেন্ডার হাতিয়ে নেয়ার পাঁয়তারা করছেন বলে বিদ্রোহীদের অভিযোগ।
এদিকে মামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে পদবঞ্চিত গ্রুপের বিক্ষুব্ধ কর্মীরা। পরে ভিসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে প্রতিকার চেয়ে ফিরে আসেন তারা। এ সময় তারা বিশ^বিদ্যালয়ের মেইন গেট বন্ধ করে ক্যাম্পাস অবরোধ করে রাখে। প্রায় ১ ঘণ্টা অবরোধ করে তারা মামলা তুলে নেয়ার আল্টিমেটাম দিয়ে ফিরে যান। একইসঙ্গে আজ দুপুরে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে তারা।
দ্বিতীয় মামলার বাদী শামসুজ্জামান তুহিন বলেন, অভিযুক্তরা আমাকে অস্ত্র ঠেকিয়ে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছে। প্রাণভয়ে তাদের ৫০ হাজার টাকা দিয়েছি। বাকি টাকা না দিলে ক্যাম্পাসে চলমান ব্যবসায় অনুষদের কাজ বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দেয়। তাই নিজের নিরাপত্তা ও জোরপূর্বক চাঁদা আদায়ের মামলা করেছি।
মামলার আসামি ও ছাত্রলীগের সাবেক কমিটির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক মিজানুর রহমান লালন বলেন, মিথ্যা মামলার বিষয়টি শুনে ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রধান ফটক অবরোধ করেছে। প্রক্টর অপসারণের আন্দোলন করায় এ মামলা হয়েছে বলে আমি মনে করি। আর আমাকে বিতর্কিত করার উদ্দেশ্যেই এ মামলা হয়েছে। যেসব অভিযোগে আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও হাস্যকর। অবিলম্বে এ মামলা প্রত্যাহার করার দাবি জানাই।