ফেসবুক লক করেই পালাচ্ছেন তারা

Slider জাতীয় টপ নিউজ


ঢাকা: ক্যাসিনোকাণ্ডে জড়িত, টেন্ডারবাজ ও চাঁদাবাজ নেতাদের অনেকে এরই মধ্যে গাঢাকা দিয়েছেন। কেউ কেউ দেশও ছেড়েছেন। অনেকে দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করছেন। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের বেশির ভাগ কাউন্সিলরকে তিন ধরে কার্যালয়ে দেখা যাচ্ছে না। বন্ধ রয়েছে ঢাকা শহরে যুবলীগের কার্যালয়গুলোও। গতকাল মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে যুবলীগ কার্যালয়ে গিয়ে কোনো নেতাকে পাওয়া যায়নি। অফিস সহকারী দীনেশকে একা বসে থাকতে দেখা গেছে। যুবলীগ ঢাকা দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশের একটি সূত্র।

যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের ব্যাংক হিসাব তলব করার খবরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যেও। একটি গোয়েন্দা সূত্র জানায়, যুবলীগ-স্বেছাসেবক লীগ ও আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আদেশ সংশ্লিষ্ট স্থানগুলোতে পাঠানো হয়েছে। ঢাকার যুবলীগ নেতারা তাঁদের নামে ছাপানো পোস্টার, ব্যানার, বিলবোর্ড নিজেদের উদ্যোগে রাতের আঁধারে সরিয়ে নিচ্ছেন। অন্যদিকে দেখা গেছে, যুবলীগ নেতারা তাঁদের সব ফেসবুক ওয়াল লক করে দিয়েছেন।

আওয়ামী লীগের একজন সংসদ সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘প্রথমে মনে করেছিলাম যুবলীগের উচ্ছৃঙ্খল কয়েকজনকে ধরা হবে অন্যদের ভয় দেখানোর জন্য, কিন্তু শাওনের ব্যাংক হিসাব তলব করার পর আতঙ্কেই আছি। মান-ইজ্জতের প্রশ্ন হয়ে দাঁড়াচ্ছে।’

একটি গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, ক্যাসিনো, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে মানুষের জায়গা-জমি দখলের রিপোর্ট পেয়ে প্রধানমন্ত্রী প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়ে এসবের সঙ্গে জড়িতদের তালিকা করে আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দেন।

ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের ঘনিষ্ঠ বেশ কয়েকজন নেতা এরই মধ্যে দেশ ত্যাগ করেছেন। দক্ষিণ যুবলীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য জাকির হোসেন ইয়ংমেনস ক্লাবে অভিযানের পরদিনই দেশ ছেড়েছেন। তিনি বর্তমানে সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছেন। জাকির হোসেনের একজন নিকটাত্মীয় জানান, সম্রাটের প্রায় ৩০০ কোটি টাকা গচ্ছিত রয়েছে জাকিরের কাছে। গতকাল জাকির হোসেনের পল্টনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, পরিবারের কেউ বাসায় নেই। লোক ভাড়া করে রাতারাতি সেগুনবাগিচা, পল্টন লাইন এলাকায় সাঁটানো তাঁর পোস্টারগুলো ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে, বিলবোর্ড, ফেস্টুন সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের অন্যতম দাপুটে নেতা গুলিস্তান এলাকার ২০ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিনকে মুক্তিযোদ্ধা ক্লাবে অভিযানের পর থেকে আর প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। গুলিস্তান, বঙ্গবাজার, ফুলবাড়িয়াসহ পাঁচটি মার্কেট নিয়ন্ত্রণ করেন শাহাবুদ্দিন। মুক্তিযোদ্ধা ক্লাবের ক্যাসিনোর মালিক আলী হোসেন ও সম্রাটের ঘনিষ্ঠ শাহাবুদ্দিনকে ওই ক্লাবের ক্যাসিনোর আয় থেকে প্রতিদিন দেওয়া হতো ৩০ হাজার টাকা। এলাকা থেকে শাহাবুদ্দিনের বিলবোর্ডও সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের ঘনিষ্ঠ যে কজন যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা নিয়মিত সিঙ্গাপুরে গিয়ে জুয়া খেলেন তাঁদের অন্যতম রবিউল ইসলাম সোহেল। তিনি ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগ উত্তরের সাবেক সভাপতি। আগামী দিনে ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি পদপ্রত্যাশী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *