দেশ-বিদেশ যেখানেই থাকুন, সমস্যা নেই। কারণ, যে কোন স্থান থেকে মোবাইল ফোন দিয়েই নিজ ঘরের দরজা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। সাধারন মোবাইল ফোন হলেই চলবে। নির্দিষ্ট নম্বরে কল করলেই দরজা খুলবে। আবার কল করলে দরজা বন্ধ হয়ে যাবে। দারোয়ান অথবা অন্য কাউকে আর দরজা খুলে দিতে হবে না।
বগুড়ার ধুনট উপজেলার চৌকিবারি ইউনিয়নের মোবাইল টেলিফোন মেকানিক হুজাইফা খান সম্রাট এই ডিভাইস আবিস্কার করেছেন। তিনি রীতিমত তাক লাগিয়ে দিয়েছেন স্থানীয় লোকজনকে। এলাকাবাসী তাকে এখন মোবাইল সম্রাট নামে ডাকেন।
আড়াই বছর গবেষণা করে সম্রাট মোবাইল ফোন নেটওয়ার্কিংয়ের মাধ্যমে ঘরের দরজা নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি আবিস্কার করেন। এটি তার পরীক্ষামূলক আবিস্কার। প্রথমে স্বল্প খরচে একটি ৩ ফুট দৈর্ঘ্য ও ২ ফুট প্রস্থ্যের একটি কাচের ঘর তৈরি করেন। এই ঘরে ১ ফুট দৈর্ঘ্যরে কাঁচের দরজার দুটি পাল্লা লাগানো হয়। এরপর মোবাইল ফোনের ব্যাটারীচালিত দুটি মোটর, দুটি সিম কার্ড, ম্যাগনেট এবং সার্কিট ব্যবহারের মাধ্যমে মোবাইল নেটওয়ার্কিং দরজা তৈরি করা হয়। এরপর দূর থেকে মোবাইল ফোন সেটে নম্বর টিপে রিমোট কন্ট্রোলের মত দড়জা খোলা হয়। এতে তার খরচ হয়েছে ৬ হাজার টাকা।
সম্রাট জানান, স্বাভাবিক বাড়ি-ঘরের জন্য এ ধরণের দড়জা তৈরির ক্ষেত্রে ব্যয় হবে লক্ষাধিক টাকা।
সম্রাট ওই ইউনিয়নের বাহালগাছা গ্রামের কৃষখ খায়রুজ্জামানের ছেলে। তিন ভাইয়ের মধ্যে সে মেজো। স্থানীয় হাজী কাজেম জোবেদা টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের ২য় বর্ষের ছাত্র। নিজেদের বাড়ির কাছে বিশ্বহরাগাছা বাজারে মোবাইল টেলিফোন মেকানিকের কাজ করে নিজের লেখাড়ার খরচ যোগান। পাশাপাশি সংসারের দেখভাল করেন।
সম্রাট রাইজিংবিডিকে জানান, ছোটবেলা থেকেই কিছু আবিস্কারের চিন্তা তার মাথায় ছিল। মোবাইল ফোনের ব্যবহার কিভাবে বাড়ানো যায় এটি নিয়ে আড়াই বছর গবেষণার পর সফলতা এসেছে। সহজে এই দরজা কেউ ভাঙতে পারবে না।
তিনি বলেন, ‘আর্থিক সহযোগিতা পেলে দরজাটি আরো উন্নত করা সম্ভব। যেমন, দরজাটি কেউ খোলার চেষ্টা করলে মোবাইল ফোনে ম্যাসেজ আসবে। এতে চুরি প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। এটি নিয়েও গবেষণা চলছে।’
সম্রাট বলেছে, ‘সরকারি কিংবা বেসরকারি সংস্থার সহযোগিতা পেলে এ ধরণের দরজা তৈরি করে রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব। এমনকি দেশেও এর অনেক চাহিদা রয়েছে। অর্থের অভাবে তা করা সম্ভব হচ্ছে না।’