যুবলীগ চেয়ারম্যান দায় এড়াতে পারেন না: মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ

Slider ফুলজান বিবির বাংলা


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: যুবলীগ নেতা-কর্মীদের অপকর্মের দায়ভার সংগঠনের চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদকের ওপরও বর্তায়—এমন অভিযোগ তুলে তাঁদের পদত্যাগ দাবি করেছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। একই সঙ্গে তাঁদের সব সম্পদের হিসাব জাতির সামনে প্রকাশের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

আজ শনিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের পক্ষ থেকে এই দাবি জানানো হয়। সংগঠনটি মনে করে, যুবলীগের চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদক পদে থাকার নৈতিক যোগ্যতা হারিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আ ক ম জামাল উদ্দীন।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘যুবলীগে অনুপ্রবেশকারী হাইব্রিড নেতারা দলের নাম ভাঙিয়ে অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর খোলস পাল্টে বিএনপি নেতা থেকে যুবলীগ নেতা বনে যাওয়া জি কে শামীমরা একের পর এক টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, হত্যা ইত্যাদি করে দেশরত্ন শেখ হাসিনার উন্নয়নমূলক কাজগুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে, দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে। এরা কখনোই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার চর্চা করে না। টাকা দিয়ে পদ নিয়ে নানান অপকর্ম করে এরা দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে।’

মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের আহ্বায়ক অভিযোগ করেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হওয়া যুবলীগ নেতারা সংগঠনে নাম ভাঙিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অপকর্ম করে এলেও যুবলীগের শীর্ষ নেতৃত্ব তাঁদের বিরুদ্ধ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। জি কে শামীম ও খালেদ ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তারের পর যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী গণমাধ্যমে ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন। বলেছেন, যুবলীগের কেউ গ্রেপ্তার হলে তাঁরা বসে থাকবেন না। এ ধরনের বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি রাষ্ট্রকে হুমকি দিয়েছেন, যা দেশের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার জন্য হুমকিস্বরূপ।’

গতকাল র‌্যাবের অভিযানে গ্রেপ্তার ঠিকাদার গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীমের সঙ্গে যুবলীগের কোনো সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী। যদিও শামীমকে গ্রেপ্তারের পর যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী, নারায়ণগঞ্জের সাংসদ শামীম ওসমান, যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী, সাবেক ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়ের সঙ্গে তাঁর বিভিন্ন সময়ের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের পক্ষ থেকে আজ অভিযোগ করে আরও বলা হয়, ২০১২ সালে যুবলীগের কমিটি হয়েছে। অনেক বছর আগেই কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হলেও সম্মেলন করে নিয়মিত নেতৃত্বের পরিবর্তন না হওয়ায় ক্ষমতা কুক্ষিগত করে যুবলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা অপকর্ম করে বেড়াচ্ছেন। যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক হারুনর রশীদ বিতর্কিত নেতাদের এসব অপকর্মের দায়ভার কোনোভাবেই এড়াতে পারেন না। ব্যর্থতার দায়ভার নিয়ে অবিলম্বে যুবলীগের দায়িত্ব থেকে তাঁদের পদত্যাগ করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল ও সাধারণ সম্পাদক আল মামুন উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *