ডেস্ক | বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির কড়া সমালোচনা করেছে এশিয়ান লিগ্যাল রিসোর্স সেন্টার (এএলআরসি)। জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের ৪২তম নিয়মিত অধিবেশনে বাংলাদেশের সার্বিক অবস্থা তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, এ দেশে ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের ৯ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জোরপূর্বক গুম করা হয়েছে ৫৩৬ জনকে। বিচারবাহির্ভূত হত্যাকা- হয়েছে ২১৮৮টি। নিরাপত্তা হেফাজতে নির্যাতনে মারা গেছেন ১২৮ জন। আর খেয়ালখুশিমতো গ্রেপ্তারের শিকার হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। এ জন্য যারা জড়িত তাদেরকে দেয়া হয়েছে দায়মুক্তি। এ বিষয়ে মানবাধিকার পরিষদকে গুরুত্ব দিয়ে দৃষ্টি দেয়া উচিত বলে মন্তব্য করা হয়েছে। জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে এএলআরসির পক্ষে ১৮ই সেপ্টেম্বর এ বক্তব্য উত্থাপন করেন মো. আশরাফুজ্জামান। এএলআরসির এক বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়েছে।
জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে তিনি বলেছেন, জাতীয় প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধির দাবি দেখে মাঝে মাঝেই ভুল করছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। যদি জাতীয় প্রবৃদ্ধিই মানুষের বাস্তব জীবনের উন্নয়নের সত্যিকার নির্দেশক হতো, তাহলে কেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ দেশের হাজার হাজার তরুণ, যুবক বোটে করে ভূমধ্যসাগর হয়ে তাদের ভবিষ্যতের জন্য ইউরোপের দিকে পা বাড়ায়? এএলআরসি প্রশ্ন উত্থাপন করে বলেছে, দেশ যদি সবার বাসযোগ্য হয় তাহলে কেন এই দেশটির (সাবেক একজন) প্রধান বিচারপতি, সংবাদপত্রের সম্পাদক এবং মানবাধিকারের পক্ষের কর্মীদেরকে নির্বাসনে থাকতে হয় এবং রাজনৈতিক আশ্রয় চাইতে হয়? একটি দেশ যখন দাবি করে তারা গণতান্ত্রিক, তাহলে সরকার কেন ভোটারদের ভোট দিতে বাধা দেয় এবং নির্বাচনের প্রাক্কালে কেন রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করে ব্যালটবাক্স ভরাট করায়? যে ঘটনার মুখোশ মিডিয়া ও টান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের মতো অন্য সংগঠনগুলো উন্মোচন করে দিয়েছে। যদি রাষ্ট্রের মৌলিক প্রতিষ্ঠানগুলো কার্যকর থাকে তাহলে কেন মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার যেসব ভিক্টিম তাদেরকে প্রতিকার দেয়ার ক্ষেত্রে বিচার বিভাগের প্রচেষ্টা শূন্য? মিয়ানমারের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জনমানবহীন একটি দ্বীপে পুনর্বাসন করার পরিকল্পনায় সমর্থন করেনি জাতিসংঘের এজেন্সি। তাহলে কেন তাদেরকে বহিষ্কার করার হুমকি দেন এই রাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী? এসব কি এমন ইঙ্গিত দেয় যে, এই দেশটি জাতিসংঘের সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ সহযোগিতা ও তাদেরকে সম্মান করছে? বাংলাদেশের এসব মানবাধিকারের বিষয়ে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের গুরুত্ব দিয়ে দৃষ্টি দেয়া উচিত বলে মন্তব্য করা হয়।