মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিক সুমন, উত্তরা প্রতিনিধিঃ বৃহত্তর উত্তরা আওয়ামী লীগের মর্যাদাপূর্ন দুটি ওয়ার্ড উত্তরা পূর্ব ও উত্তরা পশ্চিম। এ দুটি ওয়ার্ডে এবার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রকাশ্যে এবং অপ্রকাশ্যে প্রায় ১৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
আগামী ২০ সেপ্টেম্বর শুক্রবার উত্তরা আজমপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে বৃহত্তর উত্তরা যুবলীগের ৮টি ওয়ার্ডে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এর আগে ২০১৭ সালে রাজধানীর কামার পাড়া হাইস্কুল মাঠে তুরাগের চারটি ওয়ার্ডের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এবারের সম্মেলনে সবার্ধিক সংখ্যক ওয়ার্ড জড়িত থাকায় জমজমাট একটি সম্মেলনের ইঙ্গিত দিয়েছেন আয়োজকরা। যুবলীগের চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদক এতে উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে স্থানীয় এমপি এ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বলে জানানো হয়েছে।
বৃহত্তর উত্তরা যুবলীগের একাধিক সূত্র জানায়, এবারের সম্মেলন শেষ হওয়ার কয়েক দিনের মাথায় স্থানীয় ওর্য়াডগুলোর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হবে। একই সাথে প্রতিটি ওয়ার্ডে সুপার ফাইভ কমিটির ঘোষণাও থাকতে পারে। উত্তর সিটির ১ নং ওয়ার্ডটি মডেল টাউন হিসেবে পরিচিত। আগে এখানে একটি কমিটি থাকলেও এবার প্রশাসনিক থানা হিসেবে এখানে সাংগঠনিক দুটি ওয়ার্ড ঘোষনা করা হয়েছে। ১ নং ওয়ার্ড (উত্তরা পূর্ব থানায়) এ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে অনেকেই নিজেদের সিভি জমা দিয়েছেন নগর নেতাদের কাছে। পদ পাওয়ার জন্য এখানে রয়েছে ব্যাপক প্রতিযোগিতাও। নগরের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বলয়ে বেশ কয়েকজন প্রার্থী এখানে জোরালো প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলেছেন। শেষ পর্যন্ত কার হাতে উঠে যুবলীগ এ ওয়ার্ডে দায়িত্ব তা নিয়ে তৃন্যমূল নেতারাও বেশ তৎপর। নিজেদের পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে বড় ধরণের শো-ডাউনের প্রস্তুতিও রয়েছে তাদের।
এখানে প্রার্থী হিসেবে চমক দেখাতে পারেন মডেল টাউন থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাইদুল ইসলাম সোহেল। বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামের তার সরব উপস্থিতি এবং স্থানীয় ও নগর নেতাদের সাথে ঘনিষ্ঠতা তাকে অনেকের থেকেই এড়িয়ে রেখেছে। যুবলীগের উত্তরা পশ্চিম এলাকায় ব্যাপক সমাগম করতে সক্ষম এ নেতা এবার এ ওয়ার্ডে সভাপতি হিসেবে একজন শক্তিশালী প্রার্থী বলেই মনে করছেন তৃন্যমূল নেতারা। তবে এবিষয়ে তিনি প্রতিবেদককে বলেন, শক্তিশালী প্রার্থী কিনা জানি না, তবে যুবলীগ আমার প্রানের সংগঠন তাই এই সংগঠন ও এর নেতারা আমাকে কখনো নিরাশ করবে না এটা আমার বিশ্বাস। বাকীটা সৃষ্টি কর্তার ইচ্ছা।
এখানে আরো যে কয়জন প্রার্থী সভাপতি পদে আসতে চান, তাদের মাঝে অন্যতম হচ্ছেন সাবেক এ ওয়ার্ডের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির, সাংগঠিক সম্পাদক বুলবুল আহমেদ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক, আছাদুজ্জামান খান চন্নু, একই কমিটির অর্থ সম্পাদক মহিউদ্দিন আহম্দে মাহী। এছাড়া যুবলীগের কেন্দ্রিয় কমিটির এক নেতার আর্শীবাদে এখানে প্রার্থী হয়েছেন ব্যবসায়ী আব্দুল আউয়াল। তিনি গত ১৫-১৬ বছর থেকে উত্তরা যুবলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। সর্বশেষ তিনি উত্তরা ১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য হিসেবে কাজ করছেন। এবারের কাউন্সিল উপলক্ষে তিনি কেন্দ্রীয় এক নেতার পরামর্শে এবার উত্তরা পশ্চিম থানা যুবলীগের সভাপতি হিসেবে নিজের সিভি জমা দিয়েছেন। ব্যাক্তি জীবনে এ নেতা বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িয়েছেন। তিনি বৃহত্তর উত্তরা ব্যবসায়ী সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেছেন। এবার তিনি ১ নং ওয়ার্ড যুবলীগের একজন শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে নিজেকে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন।
সভাপতি প্রার্থী বুলবুল আহম্দে বলেন, আমার ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক এস এম ফারুক হোসেন আকাশ নগরে রাজনীতি করবেন, তাই এ ওয়ার্ডের সাবেক নেতাদের মধ্যে আমার অবস্থান আল্লাহর রহমতে ভালো।
এখানে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী আছেন, ইঞ্জিনিয়ার আব্দুর রাজ্জাক, রতন দেওয়ানও মুহিতুল আলম। ধারণা করা হচ্ছে এখানে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে এমন দুইজনকে বেচে নেওয়া হতে পারে যারা সার্বক্ষনিক দলের জন্য নিবেদিত এবং যে কোন ধরণের কলঙ্ক থেকে মুক্ত। সেই বিবেচনায় শেষ পর্যন্ত কার হাতে দায়িত্ব যায়, তা আগাম বলাও যাচ্ছে না।
অন্যদিকে মডেল টাউন ১ নং ওয়ার্ড (পূর্ব থানা) এ প্রার্থীতা জমে উঠেছে। বেশ কয়েকজন যোগ্য প্রার্থী একই এলাকায় পদ দাবি করায় নেতাদের জন্যও বিষয়টি অসস্তির কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। এ ওয়ার্ড থেকে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, সাবেক মডেল টাউনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আজাহার। তিনি নগর সভাপতির ব্লকে রাজনীতি করেন। সভাপতির নিজ জেলায় বাড়ী হওয়ার সুবাধে তিনি একটু রিল্যাক্স আছেন বলে শোনা যায়। তবে দলের অপর প্রার্থীরাও কোন অংশেই প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আজহার-এর থেকে কম নয়। এখানে সভাপতি পদে আসতে চান উত্তরা আজমপুর কাঁচা বাজার এলাকার ব্যবসায়ী শাওন সরকার, সাবেক এ ওয়ার্ডের নেতা আব্বাস আলী মোল্লা ও ইব্রাহিম খলিল হিরো। সাধারণ সম্পাদক পদে এখানে আসতে চান সাবেক ছাত্রলীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন রুবেল ও মেহেদি হাসান মিজান।
সভাপতি পদে জোরালো প্রার্থী আব্বাস আরী মোল্লা প্রতিবেদককে বলেন, যুবলীগের রাজনীতি করি দীর্ঘ প্রায় ২০-২২ বছর। এ দীর্ঘ জীবনে পার্টিকে ব্যবহার করে কোন সুবিধা নেওয়ার কথা চিন্তা করিনি। দলের সুদিন-দূর্দিন সব সময় পাশের থাকার চেষ্টা করি। আশা করি আমার প্রানের সংগঠনের নেতারা আমাকে সঠিক ভাবে মূল্যায়ন করবেন। এখানে সাধারণ সম্পাদক পদে একমাত্র শক্তিশালী প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন রুবেল। তিনি এ পদে আসার ব্যপারে শতভাগ আশাবাদি। সাবেক এ ছাত্র নেতা স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতার সু-নজরে থাকায় তার এ পদে আসতে তেমন অসুবিধা হওয়ার কথা নয় বলে জানিয়েছন তার ব্লকে রাজনীতি করা একাধিক সুভাকাঙ্খি।