অপহরণের ৩০ ঘণ্টা পর কলেজশিক্ষককে উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৫

Slider জাতীয় ফুলজান বিবির বাংলা

ঢাকা: নারায়ণগঞ্জের সরকারি তুলারাম কলেজের সহযোগী অধ্যাপক সারোয়ার জাহানকে (৫২) অপহরণের অভিযোগে পাঁচ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। পাশাপাশি অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ভাড়া বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে এই কলেজশিক্ষককে।

র‍্যাব জানিয়েছে, অপহরণের ৩০ ঘণ্টার মাথায় শুক্রবার ভোরে রাজধানীর দক্ষিণ মণিপুর এলাকার একটি বাসা থেকে ওই কলেজশিক্ষককে উদ্ধার ও অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত বুধবার সন্ধ্যায় মিরপুরের ৬০ ফুট সড়ক এলাকা থেকে সারোয়ার জাহানকে অপহরণ করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মোরশেদ আলম (৩৫), ফাহিজ সাদমান (২০), নাফিজ খান (২০), সাহানা নাজনীন (৩৫) ও সাবিহা নাজনীন (২৮)। তাঁদের মধ্যে ফাহিজের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লায়, অন্য চারজনের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায়।

র‍্যাব সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার সময় নিজের মোটরসাইকেলের করে কল্যাণপুরে বন্ধুর বাসায় বেড়াতে আসছিলেন সারোয়ার জাহান। পথে ৬০ ফুট সড়কে একটি অটোরিকশা তাঁর বাইকের গতিরোধ করে। এরপর অটোরিকশা থেকে অপরিচিত কয়েক যুবক নেমে তাঁকে অপহরণ করে দক্ষিণ মণিপুর এলাকার ওই বাসায় নিয়ে যান। তাঁরা সারোয়ারকে মারধর করে তাঁর পরিবারের কাছে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। পরে পরিবারের কাছ থেকে বিষয়টি জানতে পারে র‍্যাব-৪।


র‍্যাব-৪ এর জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক (মিডিয়া কো-অর্ডিনেটর) মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা ঢাকার বাইরে কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা থেকে অপহরণের কাজ করে থাকেন। তাঁরা প্রথমে কোনো ব্যক্তিকে লক্ষ্য করেন। একপর্যায়ে তাকে অপহরণ করে দক্ষিণ মণিপুরের ভাড়া করা একটি বাসায় আটকে রাখতেন।

মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম বলেন, চারতলা ভবনের নিচতলার ওই ফ্ল্যাটে আটকে রাখার পর সারোয়ার জাহানের পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে পেটানো হয়। অপহরণকারীরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মারধরের শব্দ শুনিয়ে পরিবারের কাছে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। সারোয়ারের পরিবার দুটি বিকাশ নম্বরের মাধ্যমে ৪০ হাজার টাকা দেন। অপহরণকারীরা সারোয়ার জাহানের ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও টাকা তোলেন। কিন্তু একপর্যায়ে সারোয়ার জাহানের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে র‌্যাব-৪ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অপহরণকারীদের অবস্থান শনাক্ত করে। সারোয়ারকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

র‍্যাব-৪ এর কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম আরও বলেন, অপহরণকারী চক্রটি এর আগেও এই বাসায় লোকজনকে এনেছে বলে প্রতিবেশীরা জানিয়েছে। এরা সাত-আট দিন পরপর বাসায় আসত। কিছুদিন থাকার পর আবার চলে যেত। তিন কক্ষের এই ফ্ল্যাটের আলাদা একটি কক্ষে অপহৃতদের আটকে রাখা হতো। আশপাশের লোকজনের দৃষ্টি এড়াতে নারীদের সঙ্গে রাখত তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *