ডেস্ক: বিলাতের প্রভাবশালী সাপ্তাহিক দ্য ইকোনমিস্ট ব্র্যাকের ওপর একটি বিশেষ রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, স্বাধীনতার পরে বাংলাদেশের সরকার যখন টাকা পয়সা খরচ কম করতে পারতো, মানুষের বেশি অভাব ছিল, তখন স্যার ফজলে হাসান আবেদ ব্র্যাক প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি চরম দরিদ্রদের উপরে তুলতে সফল হন। কারণ, বহু ক্ষেত্রে সরকার অনুপস্থিত ছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার বাংলাদেশকে সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। ব্র্যাকের মতো সংস্থাগুলো যা করতো সেটা করতে এখন রাষ্ট্র এগিয়ে আসছে। তাই ব্র্যাক ভবিষ্যতে কি করবে, সেটা একটা চ্যালেঞ্জ বয়ে এনেছে। সেকারণে তার উন্নয়ন কৌশলে পরিবর্তন আনছে। দ্য ইকোনমিস্টের প্রতিবেদনটি শুরু এভাবে: নয় বছর আগে সেলিনা আক্তারের দুঃখে গড়া জীবন ছিল। জীবন নিয়ে তিনি আফসোস করতেন। পশ্চিম ঢাকার একটি গ্রাম চরমতো। সেখানেই তিনি তার স্বামীকে নিয়ে বসবাস করতেন। কিন্তু ভালো কাজ পেতেন না। অল্প টাকার বিনিময়ে ফুটফরমাশ খাটা ছাড়া তার আর কোনো গতি ছিল না। তিনি প্রেম করে বিয়ে করেন। তার পরিবার সেটা ভালোভাবে নেয়নি। এমনকি তাদের গ্রহণ করতে অস্বীকার করে তারা। এই দম্পতির জীবন কাটতো দারিদ্র্যসীমার নিচে। চরম দারিদ্র্যতার মানে হলো, তাদের নিজেদের খাবারই যোগাড় করতে কষ্ট হতো। একদিন সেলিনা ব্র্যাক কর্মীদের নজরে পড়লেন। ব্র্যাক বাংলাদেশের এমন একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান, যা অসাধারণ।
গ্রামাঞ্চলে এমন অনেক এলাকা রয়েছে, যেখানে গোলাপি এবং শাদা রঙ আপনার চোখে পড়বে। ব্র্যাক তাকে কাজের আমন্ত্রণ জানালো। আর সেই আমন্ত্রণ নাকচ করা তার পক্ষে কঠিন ছিল। বলা হল, তোমাকে একটা গরু দেয়া হবে। আর পশু পালন কিভাবে করতে হয় সে বিষয় তোমাকে শেখাতে পরিদর্শক দল প্রতি সপ্তাহে একবার তোমার কাছে আসবে। তোমাকে বোঝানো হবে কি করে টাকা বাঁচাতে হয়। আর বাল্যবিবাহের অভিশাপ কি। যখন সে নিশ্চয়তা পেলেন যে তার ভালো খাবার জুটবে, ব্র্যাক থেকে কিছু খাদ্যসামগ্রী এবং কিছু নগদ টাকা বৃত্তি পাবে।
বাংলাদেশের গ্রামীণ জীবনের মানের আলোকে বলা যায়, সেলিনা আর দরিদ্র ছিলেন না। তার দুটি গরু, তারা একটি বৈদ্যুতিক পাখার নিচে থাকে। সেলিনাদের বসবাস ভালো। ইতিমধ্যে তাদের জীবনে পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে। সেলিনা টাকা জমাতে পারছেন। স্বামীর জন্য কিনে দিতে পেরেছেন একটা অটোরিকশা। তার যাত্রীর অভাব নেই। এলাকায় সরকার ভালো সড়ক নির্মাণ করেছে। ঢাকা সেদিকটায় প্রসারিত হচ্ছে। সেলিনার জীবনের গল্প ব্র্যাকের প্রতি শ্রদ্ধার গল্প। সেলিনা অবশ্য ইঙ্গিত দিলেন, কেন এখন এই বিরাট ব্যাপক দাতব্য প্রতিষ্ঠানকে একটু সমস্যায় ফেলে দিয়েছে।
স্যার ফজলে হাসান আবেদ একজন হিসাবরক্ষক। তিনি ১৯৭২ সালে ব্র্যাক প্রতিষ্ঠা করেন। কারণ, সেই সময়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি ভালো ছিল না। তা দেখে তিনি বিচলিত হয়েছিলেন। বছরের পর বছর ধরে এই চার অক্ষরের প্রতিষ্ঠানটি বহু কিছু স্মৃতি বয়ে বেড়াচ্ছে। আগে এই প্রতিষ্ঠানটিকে বহু ক্ষেত্রে থমকে দাঁড়াতে হয়েছে। কিন্তু আজ কিছুর জন্যই তাকে থামতে হচ্ছে না। এটি ইতিমধ্যে বিশ্বের বৃহত্তম বেসরকারি সংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। এটিই একমাত্র প্রতিষ্ঠান, একটি দরিদ্র দেশ থেকে, যারা নিচ থেকে উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছেছে। ব্র্যাকের এখন প্রায় ১ লাখ পূর্ণকালীন কর্মী। এর মধ্যে ৮০০০ কাজ করেন দেশের বাইরে। ২০১৮ সালে ব্র্যাক ঋণ দিয়েছিল প্রায় ৮০ লাখ মানুষকে। ১০ লাখের বেশি শিশুকে তারা দিয়েছে শিক্ষা। বাংলাদেশ এবং আরো দশটি দেশের মানুষ এর আওতায় রয়েছে। এই সংস্থাটির হাতে রয়েছে একটি বিশ্ববিদ্যালয়, একটি ব্যাংক, একটি বীজ কোম্পানি, একটি আর্টিফিশিয়াল ইন্সেমিনেশন আউটফিট, একটি মুরগির প্রতিষ্ঠান, একটি ড্রাইভিং স্কুল এবং অন্যান্যের মধ্যে ২১টি ফ্যাশন বাটিকের একটি চেইন।
ব্র্যাক একইসঙ্গে বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ দাতব্য প্রতিষ্ঠান। তার করপোরেট সংস্কৃতিকে একটা পুরোনো জমানার ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্মের সঙ্গে তুলনা করা চলে। ব্র্যাকে যারা কাজ করেন তারা বুদ্ধিজীবী ঘরানার নন, তারা সংকটের সমাধানকারী। তারা ভালো যোগাযোগ করতে পারেন। তৃণমূলের কর্মীদের কাছ থেকে তথ্য এবং সমালোচনার ভিত্তিতে তাদের কর্মসূচিকে অব্যাহতভাবে পরিবর্তন আনতে পারেন। তাদের কিছু উদ্ভাবনী বিষয় রয়েছে, যা ছড়িয়ে আছে সারা বিশ্বে। দারিদ্র বিরোধী কর্মসূচি তারা সৃষ্টি করেছে, যেখানে সব থেকে অভাবগ্রস্তদের হাতে সম্পদ তুলে দেয়ার বিষয় রয়েছে। নারীকে প্রশিক্ষণ তার অন্যতম। দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো তাকেই অনুসরণ করে। ইথিওপিয়া এই প্রতিষ্ঠানকেই নকল করেছে।
কিন্তু ব্র্যাক এখন সমস্যায় পড়েছে। সে সমাধান তার হাতে নাও থাকতে পারে। এজন্য অবশ্য রেমিটেন্স এবং গার্মেন্ট শিল্প অনেকটা দায়ী। গত ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশের উপরে। গড়ে প্রতি বছরে এটাই নিশ্চিত হয়েছে। আর এটা ভারত বা পাকিস্তান থেকে উন্নত। বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই একটা নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। আর তারা শিগগিরই এতটা ধনী দেশে উন্নত হবে, যা কিনা তাদেরকে বিশ্বব্যাংকের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহায়তা ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে যোগ্য করে তুলবে। বাংলাদেশ কখনো বৈদেশিক সাহায্যে ভেসে যায়নি। কারণ কৌশলগতভাবে বৈদেশিক সাহায্য তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়। দেশটি অত্যন্ত জনবহুল। ক্ষুদ্র দেশগুলোতে মাথাপিছু বৈদেশিক সাহায্য স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা বেশি। গত শতাব্দীর আশির দশকের গোড়া থেকে এবং ২০১৬ সালের মধ্যবর্তী সময় বাংলাদেশকে দেয়া সামগ্রিক বৈদেশিক সাহায্য যা ছিল বাংলাদেশের জিএনআই-এর ৫ শতাংশের বেশি, সেটা থেকে এখন শুধুই এক দশমিক ১ শতাংশে নেমে এসেছে। এর পরবর্তী বছরে ২০১৭ সালে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে এসে পৌঁছায় রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুরা। এর ফলে জিএনআইর অনুপাতে বৈদেশিক সাহায্য বেড়ে দাঁড়ায় ১.৪% কিন্তু সম্ভবত নিম্নমুখী ধারাই চলমান থাকবে। কারণ, এই সাহায্যের একক বৃহত্তম উৎস ব্র্যাক, যার সঙ্গে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া ও বৃটেনের কৌশলগত অংশীদারিত্ব, তার ইতি ঘটবে ২০২১ সালে। এদিকে অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় রাষ্ট্রের তহবিলে অনেক অর্থ জমা হয়ে আছে। ২০০০ সাল এবং ২০১৮ সালের মধ্যবর্তী সময়ে সরকারের বার্ষিক ব্যয়ের পরিমাণ তিন গুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। আর এটা বয়ে এনেছে ব্রাকের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ।
সরকারগুলো তার দুর্বলতার কারণে ১৯৭০ সালের প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় এবং ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ এটাই দেখিয়েছে, সরকারি সেবা খাতসমূহ জনগণের পাশে দাঁড়াতে অসমর্থ। আর এই অক্ষমতার কারণে তারা অন্যদের এগিয়ে আসতে সুযোগ দিয়েছিল। এরকম একটি শূন্যতায় ব্র্যাক প্রতিষ্ঠা করেছিলেন স্যার ফজলে হাসান আবেদ এবং একই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউনূস পরীক্ষামূলকভাবে নারীদের হাতে ক্ষুদ্র অর্থ তুলে দিয়েছিলেন। প্রফেসর ইউনূস ক্ষুদ্র ঋণের সংগঠন গ্রামীণ ব্যাংক সৃষ্টি করেছিলেন। আর এই সময়ে যদিও শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ডিজিটাল শিক্ষা, শর্তসাপেক্ষ অর্থ স্থানান্তর এবং আরও অনেক কিছু নিয়ে সরকার জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে।
ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ যেহেতু সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হচ্ছে এবং সরকার একটি নতুন সীমায় পৌঁছে যাচ্ছে, তাই দেশটির দাতব্য প্রতিষ্ঠানগুলো সংকুচিত হয়ে পড়ছে। ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ বলেছেন, অধিকাংশ এনজিও নিজেদের গুটিয়ে আনছে। কারণ, তারা সম্ভবত এক পাশে হারিয়ে যাবে। ভিক্টোরিয়া এবং এডওয়ার্ড যুগের বৃটেনের বৃহত্তম দাতব্য প্রতিষ্ঠান ছিল। ওইসব প্রতিষ্ঠানগুলো যুক্ত ছিল চার্চের সঙ্গে। যারা পরিচালনা করত স্কুল-হাসপাতাল এবং দরিদ্রের জন্য তৈরি করে দিত পারত উত্তম প্রকল্প। আজো তাদের কিছু অংশ রয়ে গেছে রাষ্ট্র পরিচালিত প্রতিষ্ঠানগুলোর সৃষ্টি হওয়ার পরেও। কিন্তু তিনি মনে করেন ব্র্যাকের পক্ষে সে ধরনের একটি ভবিতব্য এড়ানো সম্ভব হতে পারে। বাংলাদেশে যদি বিদেশি অর্থ সাহায্য না আসে, তখন হয়তো যেখানে অর্থ সাহায্য দরকার হতো সেখানে পৌঁছে যেতে পারত ব্র্যাক। ২০০২ সালে ব্র্যাক প্রথমবারের মতো পৌঁছে গিয়েছিল আফগানিস্তানে। এখন এশিয়ার পাঁচটি এবং আফ্রিকার ৬টি দেশে তাদের অবস্থান রয়েছে। এর মধ্যে এমন কিছু কর্মসূচি রয়েছে, যা উন্নত করা হয়েছিল বাংলাদেশেই। সেলিনা আক্তারের মতো মানুষের ওপর যা পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে, সেই একই সফল মডেল বিদেশেও ভালো কাজ দিয়েছে। সমপ্রতি বিশ্বব্যাংক আফগানিস্তানে চরম দারিদ্র কর্মসূচির উপর একটি সমীক্ষা প্রকাশ করেছে। এতে দেখা গেছে ওই কর্মসূচি উন্নয়নের পরিমাণ বাড়িয়েছে এবং নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। উগান্ডায় স্কুল সম্পন্ন হওয়া পরবর্তী ক্লাবগুলো কিশোরীদের গর্ভপাত নিরুৎসাহিত করেছে এবং মেয়েদের কর্মমুখী করে তুলতে উৎসাহিত করেছে।
গাজীপুর জেলা রাজধানী ঢাকার উত্তরে অবস্থিত। ব্র্যাকের একটি স্কুলে ৩০ জন শিশু গান গাইছে। তাদের মুখে ওই সব দেশের নাম, যারা ফুটবল ভালো খেলে। এই স্কুলগুলো বিনামূল্যে পরিচালিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখন তারা মাসে ৩৫০ টাকা চার্জ করছে। স্কুল শিক্ষিকা আক্তার বললেন এই টাকা আরোপ করার কারণে সুফল মিলেছে। এর আগে দেখা গেছে বাচ্চারা যখন খুশি আসতো, আবার স্কুলে আসতো না। কিন্তু টাকা ধার্য করার পর অভিভাবকরা তাদের বাচ্চাদের স্কুলে উপস্থিতি নিশ্চিত করছে।
ব্র্যাক থেকে স্কুল: ২০১৬ থেকে ব্র্যাক প্রায় আট হাজার ৭০০ প্রাথমিক স্কুল তৈরি করেছে কিংবা এগুলোকে স্কুলে রূপান্তর করেছে। এগুলোর বেশিরভাগই এক কক্ষবিশিষ্ট ছিল। শিক্ষা কর্মসূচি পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন শফিকুল ইসলাম। তিনি বললেন, দীর্ঘ সময় ধরে ব্র্যাক স্কুল বিনামূল্যে চলেছে। কিছু পিতামাতা ভাবতেন শিক্ষকরা দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন। এখন তারা স্কুলের ফি পরিশোধ করছেন এবং আশা করছেন স্কুলে টেবিল চেয়ার এবং বৈদ্যুতিক পাখা থাকবে। এমনকি তারা এখন যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক আশা করছেন। এর আগে সাধারণত স্থানীয় মেয়েদের প্রশিক্ষণ দিয়ে শিক্ষকতা করিয়েছে। শফিকুল ইসলাম বললেন, বাচ্চা মানুষ করার ক্ষেত্রে বাবা-মায়ের এটা ভালো লক্ষণ। কিন্তু সেটা পূরণ করা ব্যয়বহুল। যেসব স্কুল এখন ছেলে মেয়েদের কাছ থেকে ফি নিচ্ছে তার ফল দাঁড়িয়েছে এই যে, স্কুলগুলো পরিচালনায় মোট যা খরচ হচ্ছে, এখনো তার মাত্র এক-তৃতীয়াংশ উঠে আসছে।
দ্য ইকোনমিস্টের রিপোর্ট বলেছে, এই ফির পরিমাণ ধীরে ধীরে বাড়ানো হবে। গত জানুয়ারিতে সংস্থাটি ব্র্যাক একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেছে গাজীপুরে। সাধারণ স্কুলে পড়তে হলে যে খরচ দিতে হয় ব্র্যাকের একাডেমিতে পড়তে হলে তার চেয়ে খরচ তিনগুণ বাড়ানো হয়েছে। যদি দেখা যায় এটা জনপ্রিয় হচ্ছে, তাহলে ব্র্যাকের শাখা অন্যত্র বাড়ানো হবে। ব্র্যাক মেডিকেল ক্লিনিকগুলোতে অল্প হলেও ধার্য করেছে ফি। বিদেশে যেতে আগ্রহী বাংলাদেশিদের কাগজপত্র পরীক্ষা করার ক্ষেত্রেও তারা ধার্য করেছে ফি। ব্র্যাক বহু ক্ষেত্রে গভীর অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। ১৯৮৫ সালে প্রাক-প্রাথমিক স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছিল তারা। বাংলাদেশ সরকার সেটা অনুসরণ করেছে ২০১২ সালে। এটা শিখেছে যে কি করে গ্রামে গিয়ে সব থেকে দরিদ্রতম মানুষের কাছে পৌঁছা যায়। এটা কল্পনা করার চেয়ে বাস্তবে খুব কঠিন। মিস্টার সালেহ বলেছেন, কেনিয়া সরকার সমপ্রতি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি চালু করেছে। আর সেটা করতে গিয়ে তারা যাতে সঠিক লোক বাছাই করতে পারে, সেই সহায়তা জন্য তারা ব্র্যাকের শরণাপন্ন হয়েছে। সুতরাং, বাংলাদেশ সরকারও ব্র্যাকের কাছে সাহায্য চাইতে পারে। পত্রিকাটি উপসংহার টেনেছে এই বলে, বাংলাদেশের মতো দেশে রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়া একটি ‘ট্রিকি বিজনেস’। এমনকি বাংলাদেশি রাজনীতিকরা নির্দয়, প্রতিশোধপরায়ণ। ২০০৭ সালে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী হওয়ার পর পরই ড. মুহাম্মদ ইউনূস একটি রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছিলেন। চার বছর বাদে রাজনৈতিক শোধ নিয়েছে। গ্রামীণ ব্যাংকের নেতার আসন থেকে তাকে অপসারিত করা হয়।
ব্র্যাকের পথচলাও কঠিন। দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি তার জন্য যে চ্যালেঞ্জ বয়ে এনেছে, সেটা সে স্বীকার করে নিয়েছে। এবং এখন থেকে তার পরিবর্তিত গন্তব্য কি হবে, তাও তারা চিহ্নিত করছে। তারা যেখানেই যাক, অন্যান্য বৃহৎ দাতব্য প্রতিষ্ঠানগুলো তাকেই অনুসরণ করতে বাধ্য হবে।