বগুড়া: বগুড়ার ধুনট উপজেলায় এক গৃহবধূর (১৯) শরীর সিগারেটের আগুন দিয়ে ঝলসে দেওয়া হয়েছে। যৌন উত্তেজক ওষুধ সেবন না করায় তাঁর স্বামী এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি গাজীপুরে ঘটলেও ভিকটিম জীবন রক্ষায় বাবার বাড়িতে পালিয়ে গিয়ে এখন বগুড়ার ধুনট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন।
ওই গৃহবধূর বাড়ি উপজেলার ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নের একটি গ্রামে। তিনি ও তাঁর স্বামী দুজনই গাজীপুরে একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। আহত অবস্থায় ওই গৃহবধূকে গত বৃহস্পতিবার রাতে ধুনট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
ওই গৃহবধূর বাবার বাড়ি ধুনট পৌর এলাকায়। প্রায় পাঁচ বছর আগে তাঁর বিয়ে হয়। তাঁদের একটি মেয়েসন্তান আছে। বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রী মিলে গাজীপুরের জিরানি এলাকার একটি পোশাক কারখানায় চাকরি নেন। সেখানে তাঁরা ভাড়া বাসায় বাস করেন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই গৃহবধূ বলেন, প্রায় দুই মাস ধরে তাঁর স্বামী তাঁকে একধরনের বড়ি কিনে সেবন করিয়ে আসছিলেন। ওই ওষুধ সেবন করলে শরীর সুস্থ থাকবে বলে তাঁকে জানানো হয়। পরে ওই ওষুধের বিষয়ে তাঁর মনে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে তিনি কৌশলে জানতে পারেন, ওই বড়ি হলো যৌন উত্তেজক ওষুধ।
এ নিয়ে গত বুধবার রাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে তাঁর মুখ বেঁধে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জ্বলন্ত সিগারেটের ছ্যাঁকা দেন ও মারধর করেন তাঁর স্বামী। নির্যাতন সইতে না পেরে তিনি গাজীপুর থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে ধুনটে বাবার বাড়িতে ফিরে আসেন। পরে পরিবারের সহযোগিতায় তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওই গৃহবধূর স্বামী বলেন, ‘পারিবারিক বিষয় নিয়ে স্ত্রীকে চড়থাপ্পড় মেরে শাসন করেছি। তাঁর শরীরে সিগারেটের ছ্যাঁকা দেওয়া হয়নি।’
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রিপন কুমার বলেন, ওই নারীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে আগুন দিয়ে ছ্যাঁকা দেওয়ায় ফোসকা পড়েছে। ধুনট থানার ওসি ইসমাইল হোসেন বলেন, খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার রাতেই একদল পুলিশ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়েছিল। মেয়েটির চিকিৎসার খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। যেহেতু ঘটনাটি গাজীপুর এলাকায় ঘটেছে, তাই তাঁকে সেখানকার থানায় আইনি ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।