কলকাতা: আজ শনিবার প্রকাশিত আসামের চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা থেকে বাদ পড়েছে ১৯ লাখ ৬ হাজারেরও বেশি মানুষের নাম। ভারতের আসাম রাজ্যে নাগরিক তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে শনিবার। এই তালিকায় নাম না থাকায় শনিবার আসামের সনিতপুর জেলায় সায়েরা বেগম (৬০) নামে এক নারী আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা গেছে। তার বাড়ি জেলার তেজপুরের কাছে ডোলাবাড়ি গ্রামে।
স্থানীয়রা জানান, আসামের নাগরিকদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর এতে নিজের নাম না থাকায় একটি কুয়ায় লাফিয়ে পড়েন সায়েরা।
এদিকে শনিবার প্রকাশিত এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা ঘিরে উত্তপ্ত আসাম। জানা গেছে, তালিকা থেকে বাদ পড়াদের মধ্যে হিন্দুদের সংখ্যাই বেশি।
সাবেক অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের বিধায়ক এবং বর্তমান কংগ্রেস নেতা আতাউর রহমান মাঝহার ভুইয়াঁর নামও এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। এমনকি তার ছেলের নামও তালিকায় পাওয়া যায়নি। এছাড়া তালিকায় নেই ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাবেক এক সদস্যের নামও। তার নাম বিমল চৌধুরী। হাবিলদার হিসেবে সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেওয়ার পর বর্তমানে তিনি রেল পুলিশে কর্মরত। বিমল চৌধুরীর পরিবারের অন্যদের নাম আছে এনআরসিতে। নিজের নাম না থাকায় এনআরসি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছেন এই সাবেক সেনা সদস্য।
শনিবার প্রকাশিত তালিকায় আসামের ৩ কোটি ১১ লাখ ২১ হাজার ৪ জনের নাম আছে। তালিকা থেকে বাদ পড়েছে ১৯ লাখ ৬ হাজার ৬৫৭ জনের নাম। এই বাদ পড়া মানুষগুলো এখন তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন।
ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যাদের নাম তালিকা থেকে বাদ পড়েছে তাদের পক্ষে যুক্তি শোনার জন্য পর্যায়ক্রমে কমপক্ষে এক হাজার ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হবে। এর মধ্যে ১০০টি ট্রাইব্যুনাল ইতিমধ্যেই খুলে দেওয়া হয়েছে এবং আরও ২০০টি আগামী সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই স্থাপন করা হবে। ট্রাইব্যুনালে কেউ মামলা হারলেও তারা উচ্চ আদালত এবং তারপরে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করতে পারবেন। সকল আইনি বিকল্প শেষ না হওয়া পর্যন্ত কাউকেই বিদেশি হিসেবে ঘোষণা করা হবে না।
এদিকে সরকার ট্রাইব্যুনাল খোলার কথা বললেও তাতে মানুষ আদৌ উপকার পাবেন কি-না তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন আসামের বাঙালিদের অন্যতম মুখপাত্র আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য তপোধীর ভট্টাচার্য। জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে বাঙালিদেরই টার্গেট করা হচ্ছে দাবি করে তিনি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।