ডেস্ক: ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, সড়ক নিরাপদ করতে হবেই। তা না হলে জন-রোষানল থেকে মালিক-শ্রমিক, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ পরিত্রাণ পাব না। সড়কে সিগন্যাল বাতি চালু করতে না পারা বড় ব্যর্থতা বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইন অডিটোরিয়ামে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে করণীয় শীর্ষক এক সভায় ডিএমপি কমিশনার এ সব কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, যদি নিরাপদ সড়ক আমরা তৈরি করতে না পারি, তাহলে জনগণের যে ক্ষোভ অতীতে দেখেছি সেটা কিন্তু থেমে থাকবে না। যখন বিস্ফোরণ হবে, আমরা যারা সংশ্লিষ্ট আছি মালিক-শ্রমিক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সরকার কেউ জন- রোষানল থেকে পরিত্রাণ পাব না।
বাস টার্মিনালগুলো বাস ডিপোতে পরিণত হয়েছে জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে রাজধানীর মহাখালী ও সায়দাবাদ বাস টার্মিনালগুলো শহরের বাইরে নেয়ার সময় এসেছে। এগুলো সরাতে হবে। কারণ টার্মিনালগুলো এখন বাস ডিপোতে পরিণত হয়েছে। তাই এই ডিপোগুলোতে পরিবর্তন আমাদের আনতে হবে।
বিষয়টি ভাবার দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের।
ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, পৃথিবীর একমাত্র দেশ আমাদের দেশ, যেখানে হাত উঁচিয়ে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এখনও পর্যন্ত সিগন্যাল বাতি চালু করতে না পারা বড় ব্যর্থতা মনে করি। যার কারণে সড়কে শৃঙ্খলা আসছে না।
চালকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, চালকরা মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে গাড়ি চালায়। কেনো তাদের ভেতর নাগরিক দায়িত্ববোধ থাকবে না। এটা তো দণ্ডণীয় অপরাধ। দেশে আইন তৈরি হয় দেশের সভ্য মানুষ আইন মানবে সে জন্য। কিন্তু এদেশে হয় উল্টোটি। কেউ আইন মানতে চাই না। তাই আইন মানার সংস্কৃতি সৃষ্টি করতে হবে।
অহেতুক পরিবহন মালিক-শ্রমিককে হয়রানি করলে কোনও পুলিশ সদস্যকে ছাড় দেয়া হবে না জানিয়ে কমিশনার বলেন, আমরা নির্দেশ দিয়েছি যেন অহেতুক কোনো পরিবহনকে রেকার করা না হয়। অহেতুক হয়রানি করা না হয় বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দেখবেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমরা বলেছি, গাড়ির দরজাটা বন্ধ রাখুন। তা মানা হচ্ছে না। আমরা বলেছি হেলপারের একটা পোশাক দেন। তাও মানা হচ্ছে না। অথচ এটির জন্য প্রয়োজন শুধুমাত্র আন্তরিকতা। কেন আমরা সেটি করছি না। পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের সেটিও ভাবতে হবে।
পরিবহন খাতের মালিক শ্রমিক প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, পরিবহনখাত শুধু ব্যবসা না, এটি একটি সেবাও। তাই সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে আপনারা আন্তরিক হোন। সড়কে বিশৃঙ্খলা প্রতিরোধে শুধুমাত্র আন্তরিকতা দরকার। এটি হলেই যথেষ্ট। আপনারা যদি সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে নিজেরা উদ্যোগী হোন তাহলে আমরা আপনাদের পূর্ণ সহযোগিতা করব।
ট্রাফিক বিভাগের উদ্দেশ্যে ডিএমপি কমিশনার বলেন, যারা সিগন্যাল অমান্য করে চলাচল করবে তাকে দুই ঘণ্টা আটকে রেখে মোটিভেশন করান। এতে ফল আসবে। কারণ যেভাবে হুট করেই গাড়ির সামনে দিয়ে পার হচ্ছে, ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার না করে কাটা তার ভেঙে পার হওয়া এসবও দুর্ঘটনার জন্য দায়ি।
সভায় উপস্থিত ছিলেন ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার মফিজ আহমেদ, ঢাকা পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েতুল্লাহ। এছাড়া বিভিন্ন পরিবহনের শ্রমিক ও পুলিশের বিভিন্নস্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।