ডেস্ক: পঞ্চগড় জেলা কারা হেফাজতে আইনজীবী পলাশ কুমার রায়ের মৃত্যুর ঘটনা ও কারাগারের অব্যবস্থাপনা বিষয়ে ১৫ই অক্টোবরের মধ্যে স্বরাষ্ট্র সচিব ও আইজি প্রিজনকে ব্যাখ্যা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আজ বুধবার বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মোহাম্মদ বদরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এর আগে ৬ই মে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইয়েদুল হক সুমন জনস্বার্থে এ রিট দায়ের করেন। রিটে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইজি প্রিজন, পঞ্চগড় কারা কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছিল।
৫ই মে পঞ্চগড় জেলা কারাগারে (কারা হেফাজতে) থাকা অবস্থায় আইনজীবী পলাশ কুমার রায়কে পরিকল্পিতভাবে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ করেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন। তাই এ বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছিলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত ২৫শে মার্চ দুপুরে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে তার বিরুদ্ধে কোহিনুর কেমিকেল কোম্পানি নামে একটি প্রতিষ্ঠানের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে পরিবারের লোকজন নিয়ে অনশন শুরু করেন পলাশ কুমার রায়। পরে সেখান থেকে উঠে তারা জেলা শহরের শের-ই-বাংলা পার্ক সংলগ্ন মহাসড়কে এসে মানববন্ধন শুরু করেন।
একপর্যায়ে রাস্তা বন্ধ করে হ্যান্ডমাইকের সাহায্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে কটূক্তি করেন পলাশ। এছাড়া প্রশাসন ও পুলিশ বাহিনী সম্পর্কেও অশালীন বক্তব্য দেন। ক্ষুব্ধ হয়ে স্থানীয় কয়েকজন তাকে সদর থানা পুলিশের কাছে তুলে দেন। একইদিন বিকেলে প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তি করার অভিযোগে স্থানীয় রাজিব রানা নামে এক যুবক তার বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা করেন। এরপর সেদিনই তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
আইনজীবী পলাশকে গত ২৬শে এপ্রিল বিকেলে ঢাকা পাঠানোর কথা ছিল। কিন্তু সকালে হঠাৎ হাসপাতালের বাইরে থাকা একটি টয়লেট থেকে তিনি অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় দৌঁড়ে বের হন। এ সময় কারারক্ষীরা তাকে উদ্ধার করে শরীরের আগুন নেভান। আগুনে তার শরীরের ৪৭ শতাংশ পুড়ে যায়। রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পরদিনই তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। পরে গত ৩০শে এপ্রিল দুপুরে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।