ডেস্ক: বাংলাদেশে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর হেফাজতে নিয়মিতই বন্দি নির্যাতনের যেসব বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ রয়েছে, তা তদন্ত করতে সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছে জাতিসংঘের একটি মানবাধিকার সংস্থা। এছাড়া দায়ীদের বিচারের মুখোমুখি করারও আহবান জানানো হয়েছে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
১৯৯৯ সালে নিরাপত্তা বাহিনীর হেফাজতে বন্দি নির্যাতন নিষিদ্ধ করার আন্তর্জাতিক সংবিধিতে স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ। কিন্তু এই সংবিধি কতটা অনুসৃত হয়েছে, তার প্রতিবেদন প্রস্তুত করে জমা দিতে ২০ বছর সময় লেগেছে সরকারের। গত মাসে সরকার এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর, বাংলাদেশ এই সংবিধি কতটা অনুসরণ করছে তা প্রথমবারের মতো নিরীক্ষা করেছেন স্বতন্ত্র ও স্বাধীন বিশেষজ্ঞরা।
জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার প্যানেল সদস্য ফেলিস গার ব্রিফিং-এ বলেন, ‘এই ২০ বছরে বাংলাদেশ আমাদেরকে কোনো প্রতিবেদন জমা দেয়নি। শুধু একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে, যেখানে শুধু এই সংক্রান্ত আইনের কথা বলা আছে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের অনুসিদ্ধান্ত খুব সুখকর কিছু নয়। আমাদের হাতে ১৬ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন, যা শুরুই হয়েছে ব্যাপক ও নিয়মিত নির্যাতনের বর্ণনা প্রদানের মাধ্যমে।’
তবে আইন ও বিচারমন্ত্রী আনিসুল হকের নেতৃত্বে ২০ সদস্যের একটি বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল জাতিসংঘের নির্যাতন বিরোধী কমিটিকে জানায়, সহিংস সাজা ও নির্যাতনের ঘটনা বন্ধে বাংলাদেশ সরকার বদ্ধপরিকর।
আনিসুল হক বলেন, বাংলাদেশ কারা সংস্কার শুরু করেছে এবং নিরাপত্তা বাহিনীর হেফাজতে নির্যাতনের মাধ্যমে মৃত্যুর ব্যাপারে সরকারের ‘জিরো-টলারেন্স’ নীতি রয়েছে।
ফেলিস গার জানান, বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিদল জানিয়েছে নির্যাতন সংক্রান্ত মৃত্যুর ১৭টি অভিযোগ উঠেছে। তবে সরকার এ সংক্রান্ত বিস্তারিত জানাতে পারেনি। জাতিসংঘের নির্যাতনরোধী প্যানেল মানবাধিকার কর্মী ও জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে তথ্য পেয়েছে। প্যানেলের বর্ণনায় বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশে আইন প্রয়োগকারী বাহিনী বন্দিদের কাছ থেকে স্বীকারোক্তি আদায়ে বা ঘুষ পেতে ব্যাপক ও নিয়মিতভাবে নির্যাতনের আশ্রয় নিয়ে থাকে।’ এ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে প্যানেল। বিভিন্ন প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে প্যানেল জানিয়েছে, ‘ভুক্তভোগী ও তাদের স্বজনরা যদি নির্যাতন বা গুমের অভিযোগ দায়ের করতে যান, পুলিশ তা গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানায়।’