হাফিজুল ইসলাম লস্কর, সিলেট থেকে :: পবিত্র ঈদু-উল-আযহার আর মাত্র ৫৪ ঘন্টা বাকি। আর ঈদ-উল-আযহাকে সামনে রেখে সিলেটে বসেছে ছোট বড় বেশকয়েকটি গরুর হাট। প্রত্যেক হাটেই এবার প্রচুর গরু রয়েছে। এছাড়া প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গরু নিয়ে আসছেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু প্রতিটি বাজারেই ক্রেতা উপস্থিতি অপেক্ষাকৃত কম লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ফলে ঈদের শেষ সময়ে এসেও ক্রেতা উপস্থিতি কম থাকায় গরু বিক্রি হচ্ছে মন্তর গতিতে। বিক্রি কম থাকায় হতাশ হয়ে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।
সরেজমিনে সিলেটের প্রধানতম গরুর হাট কাজির বাজারে প্রচুর গরু থাকলে ক্রেতা উপস্থিতি কম। অনেকে গরু ধরে দাঁড়িয়ে আছে কিন্তু বিক্রি নেই। গত কয়েক হাটের চেয়ে আজ হাটে গরু প্রতি দাম কমেছে ৫ থেকে ৮ হাজার টাকা। যার কারণে মুখে হাসি নেই গরু বিক্রেতা ও ব্যাপারিদের। এক গরু বিক্রেতা জানান, তিনি হাটে বিক্রি করার জন্য ৪টি গরু নিয়ে আসেন। একটি গরু মাত্র ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। বাকি তিনটি দাম কম হওয়ায় তা এখনো বিক্রি করতে পারেননি। তিনি আরো জানান, বিক্রি হওয়া গরুটি ৬৫ থেকে ৭৫ হাজার টাকা দাম হওয়ার কথা ছিল।
সুনামগঞ্জ থেকে আসা এক ব্যাপারী বলেন, তিনি ২০ বছর ধরে গরুর ব্যবসার সাথে জড়িত। কাজীর বাজারের হাটে আনুমানিক ৬ কোটি টাকা মূল্যের প্রায় ৭ হাজার গরু উঠেছে। কিন্তু ক্রেতা কম। শেষ বাজারে এসে গরুর দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি আরো বলেন, এবার অনেকে বেশি বেশি করে গরু পোষ করেছে। যার কারণে হাটে অনেক বেশি গরু উঠেছে। তা ছাড়া ২০ জেলারও বেশি এলাকায় বন্যা হয়েছে। এসব কারণে গরু দাম পাওয়া যাচ্ছে না বলেও উল্লেখ করেন। তিনি হাটে ৩টি গরু এনেছিলেন। ৮০ হাজার টাকায় মাত্র ১টি গরু বিক্রি করতে পেরেছেন। বাকি ২টি গরু বিক্রি করতে পারেননি। তিনি আরো বলেন, হাটে গরু বেশি কিন্তু ক্রেতা কম।
নেত্রকোনা থেকে আসা এক ব্যবসায়ী জানান, তিনি নিজ এলাকা থেকে কয়েকটি গরু ক্রয় করে ৬ মাস পালন করে কাজির বাজারে বিক্রি করতে এসে
৫৬ হাজার টাকা দিয়ে কেনা একটি গরু মাত্র ৫০ হাজারে বিক্রি করেন। ফলে তার প্রায় খরচসহ ১২হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে। বাকি গরু গুলোও ভাল দামে বিক্রির আশা দেখছেন না তিনি।
কাজীর বাজার হাটের ইজারাদাররা বলেন, আমাদের হাটটি বাংলাদেশের কয়েকটি জেলার মধ্যে উন্নত। প্রতিবছরই এই হাটে হাজার হাজার গরু ওঠে। বেচা-কেনাও ভালো হয়। কিন্তু অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার গরু বেচা-কেনার অবস্থা খুব এটা সুবিধাজনক হয়নি। হাটে অনেক গরু উঠেছে কিন্তু বিক্রি কম হয়েছে। ক্রেতা উপস্থিতিও অন্যান্যবারের চেয়ে অনেক কম।