হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জ শহর থেকে পাচারকালে প্রায় ২ হাজার বস্তা সরকরি চাল জব্দ করেছে জেলা প্রশাসন। বুধবার রাতে শহরের গরুর বাজার এলাকার একটি গুদাম থেকে এসব চাল জব্দ করা হয়।
‘শেখ হাসিনার বাংলাদেশ ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ’ স্লোগান লেখা খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির এ চাল বিভিন্ন ইউনিয়নে হতদরিদ্রদের মাঝে চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়ে থাকে। আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে হতদরিদ্রদের মধ্যে বিতরণের জন্য ভিজিএফ এর চাল সরকার থেকে বিশেষভাবে বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রত্যেকের মাঝে ১৫ কেজি করে বিতরণের কথা রয়েছে। আর ভিজিডি প্রত্যকের মধ্যে ৩০ কেজি করে বিতরণের কথা।
হবিগঞ্জের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইয়াছিন আরাফাত রানা জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গরুর বাজার এলাকার হাবিবুর রহমান খানের মালিকানাধীন সুরমা অটোরাইস অ্যান্ড ফ্লাওয়ার মিলে অভিযান চালানো হয়। এ সময় মিলের গুদামে রাখা সরকারি ১০৫০ বস্তা, একটি ট্রাকে ভর্তি ৮৬০ বস্তা এবং বিপুলপরিমাণ খোলা চাল জব্দ করা হয়। যা পাচারের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল। সরকারি বস্তা থেকে চালগুলো খুলে অন্য বস্তায় ভরা হচ্ছিল।
খাদ্য অধিদপ্তরের সিল-সংবলিত প্রতিটি বস্তাই ৩০ কেজি ওজনের। এগুলো দরিদ্রদের মাঝে বিতরণের ভিজিডি এবং ভিজিএফ এর চাল বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদস্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি ওই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার নয়নের বরাত দিয়ে জানান, চালগুলো বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের কাছ থেকে কেনা হয়েছে। অভিযানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আনিছুর রহমানসহ সদর থানার পুলিশ ও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। অভিযানকালে ট্রাকচালক পালিয়ে যান এবং ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান খান গুদামে ছিলেন না।
ব্যবসায়ীদের একটি সূত্র জানায়, হাবিবুর রহমান খান দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন স্থান থেকে অবৈধভাবে সরকারি চাল ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবসা করে আসছেন। তিনি সরকারি এসব চাল এনে খুলে অন্য বস্তায় ভরে তা পাচার করেন।
এদিকে এই চাল আটকের ঘটনা তদন্তের জন্য জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদ বৃহস্পতিবার সকালে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে দেন। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মর্জিনা আক্তারকে প্রধান করে গঠিত কমিটির সদস্যরা হলেন পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি একজন ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা।