যশোর: শার্শা উপজেলার গোগার কালীয়ানি গ্রামে নিহত নূর জামাল ওরফে ছোট বাবু (২৪) হত্যার অভিযোগে ৫ বন্ধুকে আটক করেছে পুলিশ। একই সঙ্গে হত্যাকাজে ব্যবহৃত দুটি চাকু জব্দ করা হয়েছে। ছোট বাবু ঝিকরগাছা উপজেলার কৃষ্ণনগর গ্রামের নজর আলীর ছেলে। নিহত ছোট বাবুকে গত ৩০শে জুলাই সাতক্ষীরা থেকে মোবাইল ফোনে ডেকে ঝিকরগাছায় নিয়ে আসে এবং ফেনসিডিল সেবনের নাম করে বেনাপোলে নিয়ে গিয়ে হত্যা করা হয়। গতকাল শুক্রবার দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে একটি প্রেস ব্রিফিং এ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) সালাউদ্দিন সিকদার এই তথ্য জানান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সহকারী পুলিশ সুপার (নাভারণ সার্কেল) জুয়েল ইমরান, ডিবি পুলিশের ওসি মারুফ আহমদ, শার্শা থানার ওসি মশিউর রহমান প্রমুখ।
আটক ৫ জন হলো, ঝিকরগাছার মোবারকপুর গ্রামের আবদুর রউফ ওরফে বাবলু ডাক্তারের ছেলে তাজরিয়ান মাহমুদ তুর্য্য (১৯), ইমরান রেজা খোকনের ছেলে তাহজীবুল বিশ্বাস স্বাক্ষর (২০), মল্লিকপুর গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে সাজ্জাদুল ইসলাম (১৯), মোবারকপুর গ্রামের আবদুর রহিমের ছেলে আবু জাফর (১৯) এবং কামরুল ইসলামের ছেলে শাহিন হোসেন (২০)। পুলিশ জানিয়েছে, ছোট বাবুর পিতা এক সময় ঝিকরগাছা রেলস্টেশনের কোয়ার্টারে বসবাস করতেন।
তার পিতার সঙ্গে মায়ের তালাক হয়ে যাওয়ার পর সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার মাঝিপাড়া গ্রামের থাকতো। সে মাদক সেবন করতো নিয়মিত। মাঝেমধ্যে ঝিকরগাছায় আসতো। সে সময় তার বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরে বেড়াতো। সে প্রায় সময় বন্ধু তুর্য্যের মোটরসাইকেলটি নেয়ার বায়না করতো।
না দেয়ায় টাকা চাইতো। বাবুর স্বভাব ভালো না এবং মোটরসাইকেল ফিরে পাবে না এই কারণে অপর বন্ধুর সঙ্গে পরামর্শ করে তুর্য্য। পরিকল্পনা অনুযায়ী ৩০শে জুলাই তাকে সাতক্ষীরা থেকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে আসে। এরপর আসামি সাজ্জাদের পরিকল্পনায় তিনটি মোটরসাইকেলে করে ছোট বাবুসহ ৬ জন বেনাপোলে যায় ফেনসিডিল সেবনের জন্য। গোগার কালীয়ানি গ্রামের জাফর আলীর জমিতে নিয়ে গিয়ে প্রথমে তুর্য্য ও পরে স্বাক্ষর দুটি চাকু দিয়ে তার শরীরে আঘাত করে। পরে তার মরদেহ ফেলে তারা ঝিকরগাছায় ফিরে আসে।
পুলিশ আরো জানিয়েছেন, ছোট বাবুর মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয় মরদেহের পকেট থেকে। পাশ থেকে দুটি চাকুও উদ্ধার করে। পরে তার নম্বর ট্রাকিং করে তুর্য্য, স্বাক্ষর ও সাজ্জাদুলের অবস্থান জানতে পারে। ৩১শে জুলাই ঝিকরগাছা রেলস্টেশন এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। পরে তাদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক জাফর ও শাহিনকে আটক করা হয়। তারা পুলিশের কাছে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। এই হত্যার সঙ্গে আরো একজন জড়িত। তার নাম আল-আমিন। তবে সে পলাতক রয়েছে।
পুলিশ আরো জানিয়েছে, ছোট বাবু নানা ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল। তার বড় ভাই বড় বাবু ১৬টি মামলার আসামি। ছোট বাবুর নামে ঢাকার দারুস সালাম থানায় একটি মামলা আছে বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। পলাতক এক মাত্র আসামি আল-আমিনকে আটকের চেষ্টা চলছে।