ডেস্ক: নারী স্বাধীনতায় আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল সৌদি আরব। নারীদের স্বাধীনভাবে ভ্রমণের অধিকার দিল দেশটি। পূর্বে নারীদের কোথাও ভ্রমণের জন্য বা পাসপোর্টের জন্য আবেদন করার ক্ষেত্রে তাদের পুরুষ অভিভাবকদের সঙ্গে নিয়ে যেতে হতো বা তাদের অনুমতির প্রয়োজন পড়তো। কিন্তু শুক্রবার রাজ পরিবারের এক নির্দেশে বলা হয়েছে, এখন থেকে নারীদের ভ্রমণের ক্ষেত্রে পুরুষ অভিভাবকদের অনুমতির প্রয়োজন পড়বে না। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।
খবরে বলা হয়, শুক্রবার ঘোষিত নতুন নিয়ম অনুসারে, ২১ বছরের বেশি বয়সের যেকোনো নারী স্বাধীনভাবে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এজন্য আলাদা করে তাদের পুরুষ অভিভাবকদের অনুমতির প্রয়োজন পড়বে না। এতে করে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সকল প্রাপ্তবয়স্করা একই অধিকার ভোগ করবে। নারী-পুরুষের মধ্যে আলাদা করে বৈষম্য থাকবে না।
রাজ পরিবারের নির্দেশ অনুসারে, ভ্রমণের পাশাপাশি শিশু জন্ম নিবন্ধন, বিয়ে বা বিচ্ছেদের জন্য নিবন্ধন করার অধিকারও দেয়া হয়েছে নারীদের।
এছাড়া, কর্মক্ষেত্রে নারীদের জন্য সুযোগ বৃদ্ধি করা হয়েছে। নতুন নিয়ম অনুসারে, সকল নাগরিককে কাজ করার অধিকার দেয়া হয়েছে। লিঙ্গ, বিকলাঙ্গতা ও বয়স ভিত্তিক বৈষম্য যেন কাজ করার পথে বাধা না হয়ে দাঁড়ায় সেদিকে নজর দেয়া হয়েছে।
সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান সাম্প্রতিক বছরগুলোয় কট্টর ইসলামি শাসন ব্যবস্থার দেশটিতে পরিবর্তন আনছেন। ২০১৬ সালে তিনি ২০৩০ সালের মধ্যে দেশটির অর্থনীতিতে পরিবর্তন নিয়ে আসার এক পরিকল্পনা প্রকাশ করেন। ওই পরিকল্পনা অনুসারে, ২০৩০ সালের মধ্যে সৌদির শ্রমবাজারে নারীদের অংশগ্রহণ ২২ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সে লক্ষ্যমাত্রা পূরণেই নারীদের ওপর থেকে বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়া হচ্ছে। এর আগে নারীদের গাড়ি চালানো, সিনেমা দেখার ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয় সৌদি কর্তৃপক্ষ।
তবে এসব সংস্কারের মধ্যেও একাধিক নারী লিঙ্গ বৈষম্যতার অভিযোগে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। এতে ক্রাউন প্রিন্সের সংস্কারমূলক পদক্ষেপগুলো সমালোচিত হয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ১৮ বছর বয়সী রাহাফ মোহাম্মদ আল-কুনুন নামের এক তরুণী পালিয়ে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার চেষ্টা করলে থাইল্যান্ডের বিমানবন্দরের এক হোটেল কক্ষে আটকা পড়েন। সেখান থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক সহায়তা চান তিনি। পরবর্তীতে তাকে কানাডায় আশ্রয় প্রদান করা হয়।