বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিকেএসপিতে বাৎসরিক বনভোজন। খেলাধুলা, নাঁচগান, মধ্যাহ্নভোজ-এই ছিল বনভোজনের মূল আয়োজন। কিন্তু বিকেএসপিতে পা রেখেই চোঁখ কপালে উঠল বনভোজনে আসা শিক্ষার্থীদের। সবাই ছুটতে থাকলেন বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠের দিকে। বনভোজনের সব আয়োজনই যেন তুচ্ছ হয়ে উঠল তাদের কাছে।
তবে বনভোজনের বাড়তি পাওয়াটাই শেষ পর্যন্ত অধরা হয়ে থাকলো ঢাকার আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজের এক হাজার ৭০০ শিক্ষার্থীর। এদের সবাই ক্রিকেট দুনিয়ার সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের দারুণ ভক্ত। বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠে নিজেদের প্রিয় তারকা সাকিব আল হাসানকে কাছে পেয়েও মনের স্বাদ মেটাতে পারেননি এই ভক্তকুল।
ওয়ালটন রেফ্রিজারেটর ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের খেলায় বুধবার সকালে বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠে নেমেছিলেন লিজেন্ডস অব রুপগঞ্জের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। সাকিব আসার খবরে হইচই পড়ে যায় স্থানীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের মাঝেও।
তবে বিকেএসপির শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মতো নিরাপত্তা বেষ্টনী পেরিয়ে সাকিবের খেলা উপভোগ করার সাধ্য হইনি সবার।
সকাল ৯ টায় টসে হেরে ফিল্ডিং করতে মাঠে নামে সাকিবের দল। দুপুরের দিকে প্রথম ইনিংস শেষ হলে ড্রেসিং রুমে চলে যান অধিনায়ক সাকিব।
কয়েক মিনিটের মাথায় ড্রেসিংরুম ঘিরে ফেলে বনভোজনে আসা শিক্ষার্থীরা। সবার হাতে ছিল স্মার্টফোন ও ডিজিটাল ক্যামেরা। সব ক্যামেরাই যেন খুঁজে ফিরছিল সাকিবের মুখ। কিন্তু সাকিব কোথায়? সেই প্রশ্নটাই এখন সবার।
ভক্তদের চাওয়া কি হতে পারে সেটা নিশ্চয়ই বোঝার বাকি ছিল না সাকিব আল হাসানের। তাই বাইরে যখন সাকিব-সাকিব প্রতিধ্বনির জোয়ার তখন নিজেকে ড্রেসিংরুমে লুকিয়ে ফেললেন সাকিব।
কেন সাকিবকে দেখতে ভিড় করছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে সুলতান আহমেদ নিলয় নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘টেলিভিশনের বাইরে বাস্তব সাকিব কেমন, সেটাই দেখার ইচ্ছা। একবার তাকে মুখোমুখি দেখতে চাই। নিজের ক্যামেরায় সাকিবের একটি ছবি তুলতে চাই।’
আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। টিভির পর্দায় ছাড়া বাস্তবে দেখা হয়নি তাকে। কিন্তু এখানে এসে বাস্তব সাকিবকে পাবো সেটা ভাবতেও পারিনি। সাকিবের একটা ছবি তুলতে পারলে বনভোজনটা আরো স্বরণীয় হয়ে থাকতো।’
ড্রেসিং রুমের বাইরে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকার পর যখন কাজ হচ্ছিল না, তখন সাকিবের মন গলাতে স্লোগান ধরে বসলেন ওই শিক্ষার্থীরা। সাকিব ভাই বাইরে আসেন। সাকিব ভাই দেখা দেন। সাকিব, সাকিব…।
তবে শিক্ষার্থীদের এই স্লোগানে খেলা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়লে ছুটে আসেন নিরাপত্তা কর্মীরা। শেষ পর্যন্ত মাঠের বাইরে চলে যেতে হয় সব শিক্ষার্থীকে। নিরাশ হয়ে বিকেল ৪ টার দিকে বিকেএসপি ছেড়ে চলে যান ওই শিক্ষার্থীরা।