ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের আন্দোলনে যাওয়ার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। মারধরের শিকার ওই শিক্ষার্থীরা হলেন আরবী বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের আবু রায়হান এবং প্রথম বর্ষের ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের আহনাফ তাহমিদ। বুধবার সকাল সাড়ে ৮টায় পুষ্টি বিজ্ঞান ইন্সটিটিউটের সামনে এই ঘটনা ঘটে।
ছাত্রলীগের ১৩-১৪ জন মিলে এই দুইজনকে মারধর করা হয় বলে জানা গেছে।
মারধরে নেতৃত্ব দেয় সলিমুল্লাহ মুসলিম(এসএম) হল ছাত্রলীগের কর্মী এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নাবিল হায়দার। তিনি ছাত্রলীগের ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর এজিএস সাদ্দাম হোসেনের অনুসারী বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবনগুলোতে তালা লাগিয়ে টানা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
তবে তালা লাগানো ঠেকাতে আজ ভোর থেকেই ভবনগুলোর সামনে অবস্থান নেয় ছাত্রলীগের বিভিন্ন হলের নেতা-কর্মীরা। হামলায় আহত আহনাফ তাহমিদের আঘাত লেগে চোখের কর্নিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তিনি বাসায় ফিরে গেছেন।
হামলার শিকার আবু রায়হান জানান, আমি আর ৪-৫ জন আপু আন্দোলন শুরু হয়েছে শুনে আগেভাগেই ক্যাম্পাসে আসি। পুষ্টি বিজ্ঞান ইন্সটিটিউটের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় ছাত্রলীগের ১৩-১৪ জন মিলে আমাদের আটকায় এবং পুষ্টি বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে কারা তালা লাগিয়েছে তা জানতে চায়।
আমরা তালা লাগাইনি বললে খারাপ ব্যবহার শুরু করে এবং আমাকে মারধর করে।
আবু রায়হান আরও জানায়, তাহমিদ সে সময় আমাদের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। সে আমাদের ছেড়ে দেওয়ার কথা বললে তাকেও মেরে জখম করে ছাত্রলীগের কর্মীরা। তার চোখে মারাত্মক আঘাত লেগেছে। আমি হামলাকারীদের মধ্যে নাবিল হায়দারকে চিনতে পেরেছি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে নাবিল হায়দার তা অস্বীকার করে বলেন, আমি সকাল থেকে ক্যাম্পাসেই ছিলাম না। তিনি পাল্টা জানতে চান, ‘কী নিয়ে মারধর করা হয়েছে?’
তবে, আজ সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নাবিল তার নিজের ফেসবুক আইডিতে মোকাররম ভবন এলাকায় দাঁড়ানো অবস্থায় ছবি পোস্ট দিয়েছেন।
মারধরের বিষয়ে জানতে ছাত্রলীগের ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর এজিএস সাদ্দাম হোসেনকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
মারধরের ঘটনায় পৃথকভাবে ডাকসু নির্বাচনে অংশ নেওয়া স্বতন্ত্র জোটের অরণী সেমন্তী খান এবং সাত কলেজের অধিভুক্তি দাবিতে আন্দোলনকারীরা একটি সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ এনেছেন।