রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গু। হাসপাতালগুলোতে বেড়েই চলছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা।
আগের সব রেকর্ড ভেঙে রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছেই।
জুলাই মাস ডেঙ্গু বিস্তারে উপযুক্ত সময়।
আগের যেকোনও সময়ের তুলনায় হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি। প্রতিদিনই এই সংখ্যা দেড়শ’ ছাড়াচ্ছে। এছাড়া বহিঃবিভাগ থেকেও চিকিৎসা নিয়ে ফিরছেন অনেকেই।
চাপ সামলাতে এখন অনেকটাই বেহাল দশা চিকিৎসকদের।
চলতি বছর এরই মধ্যে রাজধানীতে ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৪ হাজার ২৪৮ জন। যার মধ্যে ১৪ জুলাই পর্যন্ত ভর্তি হয়েছে ২ হাজার ১৬৪ জন। আর এজন্য নগর কর্তৃপক্ষকেই দায়ী করছেন নগরবাসী।
স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) তেজগাঁও, তুরাগ, পল্লবী, মগবাজার, উত্তরা, গুলশান, বনানী, কাফরুল, খিলগাঁও, রামপুরা, মিরপুর, পীরেরবাগ, মোহাম্মদপুর, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া, বনানী, গুলশান, বারিধারায় সবচেয়ে বেশি এডিস মশার প্রজননক্ষেত্র হিসেবে চিহ্নিত করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) দয়াগঞ্জ, নারিন্দা, স্বামীবাগ, গেন্ডারিয়াসহ আশপাশের এলাকা, দক্ষিণ মুগদাপাড়া, বাসাবো, মানিকনগর বিশ্বরোড, শেরেবাংলা রোড, হাজারীবাগ, মগবাজার ও রমনা, সেগুনবাগিচা, শাহবাগ, ফরাশগঞ্জ, শ্যামপুর, উত্তর যাত্রাবাড়ীতে এডিস মশার প্রজননক্ষেত্র বেশি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। রাজধানীকে কেন্দ্র করে ডেঙ্গু নিয়ে জরিপ পরিচালনা করা হলেও দেশেব্যাপী ডেঙ্গু নিয়ে নেই কোনো কার্যক্রম। এর ফাঁকে রাজধানীর গি পেরিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে ডেঙ্গু।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, এ বছর ডেঙ্গু জ্বরে রোগীর শরীরের তাপমাত্রা খুব বেশি উঠছে না। কিন্তু দুই-তিন দিনের মধ্যে রক্তের পাল্টিলেট কমে হেমরেজিকের ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। অন্যান্য বছর ডেঙ্গু আক্রান্তদের শরীরে র্যাশ উঠত এবং প্রচ ব্যথা হতো।
তিনি আরও বলেন, ডেঙ্গুজ্বর সাধারণত ৫-৬ দিন থাকে এবং তারপর সম্পূর্ণ ভালো হয়ে যায়। জ্বর কমে গেলে অনেক রোগী এমনকি ডাক্তারও মনে করেন রোগ সম্পূর্ণ ভালো হয়ে গেছে। কিন্তু ডেঙ্গুজ্বরে মারাত্মক সমস্যা হওয়ার সময় আসলে এটাই। এসময়ই প্লাটিলেট কমে যায় এবং রক্তক্ষরণসহ নানা জটিলতা দেখা দিতে পারে। জ্বর কমে যাওয়ার পরবর্তী সময়টাকে তাই বলা হয় ‘ক্রিটিক্যাল পিরিয়ড’। এ সময় সচেতন থাকা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অত্যন্ত জরুরি।
শুধু ঢাকা নয়, দিনাজপুর, চট্টগ্রাম, খুলনা ও কুমিল্লা ছাড়াও আরও বেশ কিছু জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গু।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন্স সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের দেওয়া তথ্যে জানা যায়, এ পর্যন্ত চট্টগ্রামে তিনজন এবং খুলনায় চারজন ডেঙ্গু আক্রান্তকে শনাক্ত করা হয়েছে।
খুলনায় আক্রান্তদের মধ্যে দুজন ছাড়পত্র নিয়েছেন বাকি দুজন এখনও চিকিৎসাধীন রয়েছেন।