পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিতে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এর ফলে উপজেলার ৬টি গ্রামের এক হাজারের অধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। পানিবন্দি পরিবারগুলোকে ইতোমধ্যে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।
দুর্যোগপূর্ণ এলাকাগুলোতে মাইকিং করা হচ্ছে।
সবাই যাতে নিরাপদ স্থানে চলে যায় সে বিষয়ে বিশেষ সতর্ক বার্তা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার ভোর থেকে পাহাড়ি ঢলে বৃদ্ধি পাচ্ছে কাচালং নদীর পানি। তাতে প্লাবিত হচ্ছে বাঘাইছড়ির নিম্নাঞ্চল।
বর্ষার বর্ষণে উজান থেকে নামছে পাহাড়ি ঢলের স্রোত। পানিবন্দি হয়ে পড়ছে সাধারণ মানুষ। বিলিন হয় যাচ্ছে ফসলি জমিও। এরই মধ্যে উপজেলার তুলাবান, বারিবিন্দুঘাট, মধ্যম ডেবার পাড়া, মুসলিম ব্লক, পুরান মারিশ্যা, মাস্টার পাড়া বটতলী এলাকাসহ বেশ কয়েকটি এলাকা পানিতে প্লাবিত হয়েছে। মারাত্মক দুর্ভোগে পরেছেন সাধারণ মানুষ। এদিকে তাদের জন্য তাৎক্ষনিক ত্রাণ সহায়তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এব্যাপারে বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আহসান হাবিব জিতু জানান, রাঙামাটিতে টানা বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। এতে পাহাড় ধসের প্রবণতা যেমন বেড়েছে, তেমনি পাহাড়ি ঢলে বৃদ্ধি পাচ্ছে হ্রদের পানি। বাঘাইছড়ি উপজেলায় বন্যা কবলিত মানুষদের জন্য ২৪টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। দুযোর্গ মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে প্রশাসন। পানিবন্দিদের সড়িয়ে আনা হচ্ছে।
অন্যদিকে গত বুধবার রাতে রাঙামাটির বরকল উপজেলায় পাহাড়ি ঢলের স্রোতে তলিয়ে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে এক কৃষকের। নিহতের নাম, বৃদ্ধ বিজু রাজ চাকমা (৬৭)।
রাঙামাটির বরকল উপজেলার ৪নং ভূষনছড়া ইউনিয়নের বড় উজ্জ্যাংছড়ির আগোরো আদাম গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সেখানেও পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে গেছে বেশ কিছু বাড়ি-ঘর।
এদিকে টানা বৃষ্টিতে ভাঙছে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়ক। এরই মধ্যে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের ঘাগড়ার কলাবাগন এলাকায় সড়কের একপাশ ভেঙে ছড়ায় বিলিন হয়ে গেছে। এমন বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে সড়কটি ভেঙে ব্যাহত হতে পারে রাঙামাটি সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ ব্যাপারে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশিদ জানান, অতিবৃষ্টিতে রাঙামাটির যেসব সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেগুলো পরিদর্শন করেছি। বড়ধরনের ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতে সড়ক মেরামতের কাজ চলছে। তবে বৃষ্টির কারণে কাজ কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। এখনো পর্যন্ত রাঙামাটিতে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক রয়েছে।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন রশিদ জানান, প্রতি তিন ঘণ্টায় ১০৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হচ্ছে। বৃষ্টি আরও কয়েকদিন স্থায়ীত্ব হতে পারে।