রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর মোড়ে একটি ট্রাককে থামার সংকেত দিয়েছিল ট্রাফিক পুলিশ। কিন্তু ট্রাক চালক না থামিয়ে চলে আসছিলেন। তখন ট্রাকের পিঁছু নেয় দুই পুলিশ। ট্রাকটিকে ধাওয়া করে তারা রাজশাহী মহানগরীর শাহ মখদুম থানা এলাকায় চলে আসেন।
কিন্তু এখানে এসে ট্রাক শ্রমিকদের তোপের মুখে পড়েন তারা।
পরে খবর পেয়ে শাহ মখদুম থানা পুলিশ তাদের উদ্ধার করে। এরপর থানা থেকে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদুল হাসান তাদের নিয়ে যান।
ওই দুই ট্রাফিক পুলিশ এখন পুলিশ লাইনে আছেন।
জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) বলছেন, তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শুক্রবার এভাবেই ‘সীমানা জ্ঞান’ হারিয়ে বিপাকে পড়েছেন পুঠিয়ার বানেশ্বর ট্রাফিকের দুই পুলিশ।
এরা দুজন হলেন, জেলা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের অ্যাসিসট্যান্ট টাউন সাব-ইন্সপেক্টর (এটিএসআই) জিয়াউর রহমান ও কনস্টেবল মেহেদী হাসান। নগরীর শাহ মখদুম থানার নওদাপাড়া এলাকায় ‘লতা ফিলিং স্টেশন’ নামের একটি পেট্রোল পাম্পের সামনে ট্রাক শ্রমিকরা তাদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। পরে শাহ মখদুম থানা পুলিশ গিয়ে তাদের শ্রমিকদের হাত থেকে উদ্ধার করে।
শাহ মখদুম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মাসুদ পারভেজ বলেন, শুক্রবার দুপুরে ট্রাকটিকে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর মোড়ে থামার জন্য সংকেত দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সংকেত অমান্য করে ট্রাক চালক চলে আসছিলেন। এ সময় ওই দুই পুলিশ সদস্য মোটরসাইকেল নিয়ে ট্রাকটির পিঁছু নেন। তারা পুঠিয়া থানা ছেড়েও মাঝে বেলপুকুর, চন্দ্রিমা ও মতিহার থানা পার হয়ে শাহ মখদুম থানা এলাকায় ঢুকে পড়েন।
এরপর নওদাপাড়া এলাকায় তারা ট্রাকটিকে ধরে ফেলেন। এ সময় ট্রাক চালকের সঙ্গে দুই পুলিশের কথা কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে অন্য শ্রমিকরা চলে আসলে দুইপক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়।
পরে খবর পেয়ে ওই দুই ট্রাফিক পুলিশকে উদ্ধার করে থানায় আনা হয়। এরপর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মাহমুদুল হাসান এটিএসআই জিয়াউর রহমান ও কনস্টেবল মেহেদী হাসানকে থানা থেকে নিয়ে যান। এর আগে থানায় শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বসে বিষয়টির মিমাংসা করা হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদুল হাসান জানিয়েছেন, শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বসে বিষয়টির মিমাংসা করা হয়েছে। তবে সংকেত অমান্যকারী ট্রাক চালকের বিরুদ্ধে কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি। এটিএসআই জিয়াউর রহমান ও কনস্টেবল মেহেদী হাসানকে জেলা পুলিশ লাইনে রাখা হয়েছে। আর এ বিষয়টি এসপিকে জানানো হয়েছে।
পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ বলেন, ঘটনাটি তিনি শুনেছেন। এটিএসআই জিয়াউর রহমান ও কনস্টেবল মেহেদী হাসানকে তিনি জেলা পুলিশ লাইনেই রাখতে বলেছেন। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।