বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি সংসদকে জানিয়েছেন, বিশ্বের প্রায় ১০০টি দেশের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এসব দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ছিল ১৬ হাজার ২৮৪.৮৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এরমধ্যে চীনের সাথে ঘাটতি সবচেয়ে বেশি, পরিমাণ ১১ হাজার ১১ মিলিয়ন। এরপরই রয়েছে ভারতের অবস্থান।
ঘাটতির পরিমাণ ৭ হাজার ৭৪৮.২ মিলিয়ন ডলার। সবচেয়ে কম ঘাটতি উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে, পরিমাণ ৩.১ মিলিয়ন ডলার। এছাড়া সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেমিয়া, ব্রাজিল, মালয়শিয়া, থাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, ভিয়েতনাম, সৌদি আরব, পাকিস্তান, মিয়ানমার, রাশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, মিশর, অষ্ট্রেলিয়া, শ্রিলংকা ও মালদ্বীপের সাথে বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বাজেট অধিবেশনে আজকের বৈঠকে লিয়াকত হোসেন খোকার (নারায়ণগঞ্জ-৩) লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব তথ্য জানান। প্রশ্নোত্তর পর্ব টেবিলে উপস্থাপিত হয়। এসময় বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বাণিজ্য ঘাটতির অবসান ও গ্রাস করতে এসব দেশের সাথে রপ্তানী বৃদ্ধির লক্ষে নেওয়া পদক্ষেপসমুহ সবিস্তারে তুলে ধরেন।
১১ মাসে রপ্তানী ৩৭ বিলিয়ন ডলার: সরকারি দলের মো: ইসরাফিল আলমের (নওগাঁ-৬) লিখিত প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানান, চলতি অর্থ বছরের প্রথম ১১ মাসে সার্বিকভাবে পণ্যখাতে রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৭.৭৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। চলতি অর্থ বছরের ১১ মাসে পণ্যখাতে সার্বিকভাবে রপ্তানী হয়েছে ৩৭.৭৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এসময় কৃষিপণ্য রপ্তানী বেড়েছে ৪০.৩ শতাংশ, তৈরী পোশাক খাতে বেড়েছে ১২.৮২ শতাংশ, পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানী খাতে বেড়েছে ১২.১৭ শতাংশ, হিমায়িত চিংড়ি ও মাছ খাতে বেড়েছে ১.৮৭ শতাংশ।
এসময় বাণিজ্য মন্ত্রী আরো জানান, ১০০ শতাংশ হালাল মাংস রপ্তানী খাতে সরকার ২০ শতাংশ হারে ভর্তুকি ঘোষণা করেছে। এছাড়া হিমায়িত চিংড়ি ও মাছ খাতে বরফ আচ্ছাদনের ভিত্তিতে ২ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশ রপ্তানি ভতুর্কি দেওয়া হচ্ছে।
পাকিস্তানের সাথে বাণিজ্য ঘাটতি: মহিলা এমপি বেগম হাবিবা রহমান খানের লিখিত প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে ৭ হাজার ৭২০ কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য আমদানি হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে, কাপড়, হিমায়িত মাছ, চামড়াজাত পণ্য, মেশিনারিজ, প্লাস্টিক, রাবার, সবজিজাত পণ্য, সুগন্ধি চাল, গোলাপ ফুল, বেবি ফুড, মসলা, চিপস ও খেজুর ইত্যাদি। এ বাংলাদেশ থেকেই সময়ে পাকিস্তানে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৭৩৮.৮ ৭৩৮ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার। এসময় মন্ত্রী আরো জানান ভারত ও পাকিস্তান থেকে বিভিন্ন পণ্য আমদানি করা হয় বলেই আমাদের বাজারে এসব দেশের পণ্য থাকাটাই স্বাভাবিক।
৩৮টি দেশে জিএসপি সুবিধা : মোঃ মামুনুর রশীদ কিরণের (নায়াখালী-৩) প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ ৩৮টি দেশে জিএসপি সুবিধা পাচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে ইউরোপিয়ানভুক্ত ২৮টি দেশ। এছাড়া অষ্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, নরওয়ে, সুইজারল্যান্ড, জাপান, তুরস্ক, রাশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, কানাডা ও চিলিতে রপ্তানিখাতে জিএসপি সুবিধা পাচ্ছে।