ডেস্ক: অফিস টাইম। রাস্তায় প্রচণ্ড জ্যাম। গাড়ি পাচ্ছেন না। এই জটিলতা থেকে মুক্তি দিতে বেসরকারি উদ্যোগে অনেক পরিবহন সেবা এসেছে বিশ্বে। মোবাইল অ্যাপভিত্তিক এসব সেবার মধ্যে রয়েছে ট্যাক্সি, মোটরসাইকেল ভাড়া পাওয়ার ব্যবস্থা। তাতে খরচ একটু বেশি পড়লেও জীবন হয়েছে অনেকটা সহজ। কিন্তু সেই সুযোগকে আরো এক ধাপ বাড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্য স্থির হয়েছে। একবার ভাবুন তো, অফিসে যাবেন।
রাস্তায় জ্যাম। হাতে সময় নেই। এমন সময় কোনো একটি অ্যাপের বাটন চাপলেন। অমনি আপনার বাসার ছাদে বা উপযুক্ত একটি স্থানে উড়ে এলো একটি ট্যাক্সি। আপনি তার ভিতর উঠে বসলেন। আপনাকে নিয়ে আকাশপথে উড়ে চলল সেই ট্যাক্সি গন্তব্যে। যথাসময়ে অথবা তার আগেই আপনি পৌঁছে গেলেন গন্তব্যে। বিজ্ঞান কল্পকাহিনীর মতো শোনালেও এটাই বাস্তবে রূপ নিতে যাচ্ছে।
হ্যাঁ, এমনই এক উচ্চাকাঙ্খী পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে এসেছে উবার। তারা প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক বাজারে এমন সেবা নিয়ে আসছে। এ সেবা নিচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। সেখানে যাত্রী নিয়ে আকাশে উড়বে যে ট্যাক্সি তার নাম দেয়া হয়েছে ‘উবার এয়ার’। এ জন্য উবার বেছে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নকে। এমন কর্মসূচি চালু হচ্ছে তিনটি পাইলট সিটি মেলবোর্ন, ডালাস ও লস অ্যানজেলেসে। ২০২০ সাল থেকে এমন ফ্লাইট পরীক্ষামূলকভাবে চালু হওয়ার কথা রয়েছে। আর বাণিজ্যিকভিত্তিতে তা চালু হওয়ার কথা ২০২৩ সাল থেকে।
ভবিষ্যত পরিবহনের জন্য এরই মধ্যে বেশ কিছু কোম্পানি উড়ন্ত ট্যাক্সি উন্নয়নের কাজ করে যাচ্ছে। সে যাত্রায় উবার অগ্রগামী। তারা এক্ষেত্রে সফল হলে শহরগুলোতে যে গা-ঘামা ট্রাফিক জ্যাম তা থেকে মানুষকে কিছুটা স্বস্তি দিতে পারবে।
উবারের বেসামরিক বিভাগ উবার এলিভেট-এর বৈশ্বিক প্রধান এরিক অ্যালিসন বলেছেন, যেহেতু বড় বড় শহরগুলো বৃদ্ধি পাচ্ছেই। তাই ব্যক্তিগত গাড়ির মালিকানা থাকলেই তার ওপর নির্ভর করা টেকসই পদক্ষেপ হবে না। এ জন্য সড়কে যানজট এড়াতে ব্যাপক সুবিধা নিয়ে আসছে উবার এয়ার।
তিনি বলেন, মেলবোর্নের মূল বাণিজ্যিক এলাকা থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত দূরত্ব ১৯ কিলোমিটার। এই পথ পাড়ি দিতে উবার এয়ারের লাগবে মাত্র ১০ মিনিট সময়। অন্যদিকে গাড়িতে করে সেখানে যেতে সময় লাগে এক ঘন্টা।
যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা এবং যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর সঙ্গে উড়ন্ত ট্যাক্সি তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছে উবার। তাদের রয়েছে দুটি এয়ারক্রাফট প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান। তা হলো এমব্রায়ের এবং পিপিস্ট্রিল এয়ারক্রাফ। গত বছর উবার বলেছে, তারা উড়ন্ত ট্যাক্সি তৈরির জন্য প্যারিসে একটি ল্যাবরেটরি খুলবে।
এখানে উল্লেখ্য, উড়ন্ত ট্যাক্সি তৈরির জন্য শুধু উবারই একমাত্র কোম্পানি এমন নয়। এ কাজ করে যাচ্ছে আরো অনেকে। যাত্রী বহনকারী স্কাই ট্যাক্সি আবিষ্কারের জন্য প্রযুক্তি বিষয়ক কোম্পানিগুলো প্রতিযোগিতা করে যাচ্ছে। এরই মধ্যে এয়ারবাস এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নিজের মতো করে উড়ন্ত ট্যাক্সির বিষয়ে পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে। ২০১৭ সালে প্রথমবার ড্রোন ট্যাক্সি চালিয়েছে দুবাই। আলাদাভাবে গুগল প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি পেজের অর্থায়নে একটি ইলেকট্রিক এবং স্বচালিত এয়ার ট্যাক্সি তৈরি করা হয়েছে, যা ঘননটায় ১৮০ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে।