হাসানুজ্জামান হাসান,লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ ২৫ বছর বয়সী আপিয়া বেগম নামে এক গৃহবধুকে মারধরের পর কড়াইভর্তি গরম সেমাই শরীরে ঢেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামীর বিরুদ্ধে।ওই নারীকে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তির পর থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
মঙ্গলবার, ১১ জুন সকালে হাতীবান্ধা উপজেলার পশ্চিম সারডুবি গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটেছে। আপিয়ার স্বামী মাসুদ মিয়া বিয়ের পর থেকেই স্ত্রীকে নানাভাবে নির্যাতন করে আসছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। আপিয়া পশ্চিম সারডুবি গ্রামের আব্দুর রহমানের মেয়ে।
তবে এ বিষয়ে কথা বলতে মাসুদ মিয়াকে পাওয়া যায়নি। একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। সে পশ্চিম সারডুবি গ্রামের আব্দুস সামাদের ছেলে।
মঙ্গলবার দুপুরে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের বেডে শুয়ে কাতরাচ্ছে আপিয়া। তার ঘাড় ও পিঠের বেশ কিছু অংশ ঝলসে গেছে।
আপিয়া বেগম বলেন, ‘সকালে আমি সেমাই রান্না করছিলাম। এ সময় বাচ্চারা দুষ্টুমি করলে তাদের একটু বকাককি করি। এতে ক্ষীপ্ত হয়ে আমার স্বামী মারধর করে কড়াই ভর্তি গরম সেমাই আমার শরীরে ঢেলে দেয়।’
!
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘টাকার জন্য সব সময় আমাকে মারধর করা হতো। আমি ইটভাটায় কাজ করে টাকা আয় করে তাকে(স্বামী) দেই। আর সেই টাকা দিয়ে সে জুয়া খেলে। সোমবারও (১০ জুন) আমাকে বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনতে বলে। কিন্তুটাকা আনতে রাজি না হওয়ায় আমার উপর রেগে ছিলেন তিনি।’
হাতীবান্ধা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার নাঈম হাসান নয়ন বলেন, ‘আপিয়ার শরীরের কিছু অংশ ঝলছে গেছে।’
জানা গেছে, প্রায় ১৩ বছর আগে ৫০ হাজার টাকা যৌতুকের বিনিময়ে মাসুদের সাথে আপিয়ার বিয়ে হয়। বর্তমান তাদের তিনটি সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে মাসুদ আরও টাকার জন্য আপিয়াকে নির্যাতন করে আসছিল। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার গ্রামে শালিস হয়েছে।
বড়খাতা ইউপি চেয়ারম্যান আবু হেনা মোস্তফা কামাল সোহেল বলেন, ‘মাসুদ-আপিয়ার বিষয় নিয়ে একাধিকবার বিচার করা হয়েছে। তবে এবার আপিয়াকে আইনের আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’