কেন্দুয়া (নেত্রকোনা): কেন্দুয়ায় বেড়াতে গিয়ে প্রেমিকের সামনেই এক নারী গণধর্ষণের শিকার হয়েছে । ঘটনার পর থেকে প্রেমিক উধাও হয়ে গেছে। এ ঘটনায় গত শুক্রবার ধর্ষিতা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ৩ জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন। এরই প্রেক্ষিতে পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে উপজেলার রাজিবপুর বৈরাটি গ্রামের রঙ্গু মিয়ার ছেলে টিপু মিয়া (২৩) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। পরে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী গতকাল একই গ্রামের আব্দুল কাদিরের ছেলে আনোয়ার (২৬)কে ইশ্বরগঞ্জ উপজেলা ও তার বন্ধু আমীর হামজা (২৫) কে গৌরীপুর থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কেন্দুয়া উপজেলার কুন্ডলী এলাকায় শাপলা ইটখলায় ধর্ষণের শিকার হন ৩০ বছরের এই মহিলা। তিনি গাজীপুরে একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। তার বাবার বাড়ি কেন্দুয়া উপজেলার মাসকা গ্রামে। তিনি ঈদের ছুটিতে বাবার বাড়ি বেড়াতে আসেন।
উপজেলার রাজিবপুর বৈরাটি গ্রামের প্রেমিক নুরে আলম ওরফে সুমনের (৩৫) সাথে ঈদের পরেদিন বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হন তিনি। কেন্দুয়া থানার ওসি মো. রাশেদুজ্জামান জানান, বেশ কয়েক বছর আগে ময়মনসিংহের আঠারবাড়ি এলাকার এক ছেলের সাথে ওই ধর্ষিতার বিয়ে হলেও তা ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। তার একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। গত তিন বছর ধরে নুরে আলম ওরফে সুমনের সাথে গাজীপুরেই পরিচয় থেকে প্রেম হয়। পরে মৌখিকভাবে বিয়ের সূত্রে তারা স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে চলতেন।
তবে সুমন তার প্রেমিকার কাছে পরিচয় গোপন রাখেন। এবং কখনই সুমনের বাড়িতে যাননি বা সুমনের আত্মীয়-স্বজনের সাথেও এই মহিলার পরিচয় হয়নি। এমনকি সুমনের কোন ছবিও তার কাছে ছিল না। ঘটনার দিন মোটরবাইকে চড়ে সুমনের সাথে বেড়ানোর এক পর্যায়ে ইটখলাটির কাছে মোটরসাইকেল থামায় সুমন। এ সময় গ্রেপ্তার হওয়া ৩ জনের সাথে তারা ইটখোলায় যায়। সন্ধ্যা ঘনিয়ে অন্ধকার হয়ে আসলে সুমনকে আটকে রাখার নাটক সাজিয়ে ওই মহিলাকে ধর্ষণ করে তারা। পরে সুমনসহ ধর্ষিতাকে ছেড়ে দিলে সুমনও পালিয়ে যায়। মহিলা সেখান থেকে একটি রিকশায় চড়ে থানায় এসে ঘটনা জানালে ওসি তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে যান এবং জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালান। তিনি আরো জানান, গ্রেপ্তার হওয়া ৩ জনই প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাদের ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে। এবং ঘটনার সাথে ওই গণধর্ষণের শিকার মহিলার কথিত স্বামী সুমনও জড়িত। ধর্ষিতাকে ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়েছে। কথিত স্বামী নুরে আলম ওরফে সুমনকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।