কলকাতা: সদ্য শেষ হওয়া লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের ব্যাপক পরাজয়ের পর চারটি পৌরসভা দখল করে নেয় বিজেপি। দলটি আজ শনিবার রাজ্যের পার্বত্য এলাকা দার্জিলিং পৌরসভার দখলও নিল।
পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির উত্থানে গোটা রাজ্যের রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। বহু তৃণমূল নেতা-কর্মী দল ছেড়ে যাচ্ছেন বিজেপিতে। রাজ্যের বহু গ্রাম পঞ্চায়েতের দখল নিয়েছে বিজেপি। এখন তৃণমূলের বহু নেতা বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জন্য মুখিয়ে আছেন। এবারের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি রাজ্যের ৪২টি আসনের মধ্যে ১৮টি দখল করে নিয়েছে। ২০২১ সালে হবে এই রাজ্যের বিধানসভার নির্বাচন। সেদিকে লক্ষ্য রেখে এখন তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদানের হিড়িক চলছে।
ইতিমধ্যে ভাটপাড়া, নৈহাটি, কাঁচরাপাড়া এবং হালিশহর পৌরসভার দখল নিয়েছে বিজেপি। সেখানে এত দিন রাজত্ব করেছে তৃণমূল।
পশ্চিমবঙ্গের একমাত্র পাহাড়ি জেলা দার্জিলিং পৌরসভার আজ কার্যত দখল নিয়েছে বিজেপি। এত দিন এই পৌরসভা দখলে ছিল বিনয় তামাংপন্থী গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার হাতে। এর আগে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেতা বিমল গুরুংয়ের হাতে। কিন্তু ২০১৭ সালের জুন মাসে দার্জিলিংয়ে পৃথক গোর্খাল্যান্ড রাজ্যের দাবিতে আন্দোলন শুরু হলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা কাছে টেনে নেন বিমল গুরুংয়ের প্রতিপক্ষ বিনয় তামাংকে। তাঁকে বসানো হয় জিটিএর শীর্ষ পদে। একই সঙ্গে এই পৌরসভার দখল নিয়ে নেন বিমল গুরুংবিরোধী নেতা বিনয় তামাং। মমতার সমর্থন থাকে বিনয় তামাংয়ের ওপর।
এবারের লোকসভা নির্বাচনে বিনয় তামাংদের প্রার্থী অমর সিং রাই হেরে যান বিজেপি প্রার্থী রাজু সিং বিস্তার কাছে। রাজু সিংকে সমর্থন জানান বিমল গুরুংরা। লোকসভা নির্বাচনের পরই রাজু সিং বিস্ত দার্জিলিং পৌরসভাকে বিনয় তামাংদের হাত থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নেন।
দার্জিলিং পৌরসভায় রয়েছে ৩২ জন কাউন্সিলর। এর মধ্যে একজন মারা গেছেন। একজন পদত্যাগ করেছেন। ফলে সেই সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় ৩০ জনে।
আজ দার্জিলিং পৌরসভার ১৭ জন কাউন্সিলর দিল্লিতে বিজেপির সদর দপ্তরে গিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দেন বিজেপিতে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিজেপির পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাশ বিজয়বর্গীয়, কেন্দ্রীয় নেতা মুকুল রায় এবং দার্জিলিংয়ের নতুন সাংসদ রাজু সিং বিস্ত। ফলে এবার দার্জিলিং পৌরসভাও বিজেপির দখলে চলে গেল।