কার্ডিফ: কার্ডিফে বাংলাদেশের বিপক্ষে রানের বন্যা বইয়ে দিয়েছে ইংল্যান্ড। ৫০ ওভার শেষে তাদের স্কোর ৬ উইকেটে ৩৮৬
ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা উড়িয়ে মারছেন আর বলের দিকে সূক্ষ্ম নজর রাখতে হচ্ছে দর্শকদের, বল স্টেডিয়াম পার হলো না তো? মেহেদী হাসান মিরাজের করা ৩৫তম ওভারের কথায় ধরুন। জেসন রয় টানা তিন বলে ছক্কা মারলেন। একটা তো মনে হচ্ছিল প্রেসবক্সে এসে পড়বে! রয় হচ্ছেন আজ ইংল্যান্ড ইনিংসের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন। অবশ্য তাঁকে মিরাজই আউট করছেন। কিন্তু তার আগে ৩৮৬ রানের বিশাল স্কোরের শক্ত ভিত গড়ে দিয়ে এসেছেন ইংলিশ ওপেনার।
মাশরাফি বিন মুর্তজা অবশেষে টস জিতলেন। দুদিন উইকেটে ছিল কাভারে ঢাকা। উইকেটে ঘাস, বইছে বাতাস—মাশরাফি টস জিতে ফিল্ডিংই নিলেন। বাংলাদেশ অধিনায়ক বললেন, ‘দুদিন পিচ কাভারে ঢাকা ছিল। আশা করি প্রথম ঘণ্টায় কিছু থাকবে।’ প্রথম ঘণ্টায় কিছুই পেল না বাংলাদেশ। উল্টো দুই ইংলিশ ওপেনার প্রথম ঘণ্টায় দারুণ সময় কাটালেন উইকেটে। তাঁদের ওপেনিং জুটিতেই এল ১২৮।
রয়-বেয়ারস্টো শুরুটা একটু ধীরলয়েই করেছিলেন। ‘অনেক সমীহ করা হয়েছে, এবার শুরু করা যাক’—এ ভাবনায় কিনা ৫ ওভার শেষেই তাঁরা খোলস থেকে বেরিয়ে এলেন। বাংলাদেশের বোলারদের জন্য ওভারে একটি করে চার যেন বরাদ্দ করেই দিলেন ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা! শুধু চার দেখতে দেখতে দর্শকদের যেন একঘেয়েমি না পেয়ে বসে, তাই ঠিক করলেন ফাঁকে ফাঁকে মারতে হবে ছক্কা! বাংলাদেশের বোলারদের প্রথম সাফল্য ২০ ওভারে, মিরাজের অসাধারণ এক ক্যাচে পরিণত করে বেয়ারস্টোকে যখন ফেরালেন মাশরাফি।
বাংলাদেশের বোলারদের এই সাফল্য নিয়মিত দেখা যায়নি। মাশরাফি বাদে সবারই ইকোনমি ৬ ছাড়িয়েছে। সবচেয়ে ব্যয়বহুল সাকিব আল হাসান ১০ ওভারে ৭১ রান দিয়ে উইকেটশূন্য। বাংলাদেশের বোলারদের হতাশার দিনে নিয়মিত দেখা গেল ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের ঝড়। আর তাতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিলেন রয়, পেলেন বিশ্বকাপে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি। ১০০ পেরিয়ে ১৫০—দুর্দান্ত গতিতে ছুটতে থাকা রয়কে থামালেন মিরাজ। কিন্তু তাতেও যে ইংল্যান্ডের রানবন্যা থামানো যায়নি। গত কিছুদিনে অতি আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করেছে ইংল্যান্ড, বিশেষ করে নিজেদের মাঠে। ৩৫০-৩৬০ রান তোলা ইংলিশদের কাছে এখন আর কোনো ব্যাপারই নয়। আজও সেটি অব্যাহত থেকেছে।
ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা যখন চালাচ্ছেন, কার্ডিফের প্রেসবক্সে বারবার ‘প্রেডিকশন’ হচ্ছে, ইংল্যান্ড আজ কত করবে? ৩৭০? শেষের দিকে লিয়াম প্লাংকেট আর ক্রিস ওকসও মেরে খেললেন খুব সহজেই। ২.৫ ওভারে এই দুজনের জুটি ৪৫ রানের! ইংলিশরা আফসোস করতেই পারে ৪০০ হলো না! খুব কাছে গিয়ে থেমেছে তারা। ফিল্ডিং শেষে বড় করুন মুখেই মাঠ ছাড়লেন মাশরাফিরা। রান তাড়ার দুশ্চিন্তায় নয়, বোলিংয়ের কঙ্কালসার চেহারাটা বেরিয়ে পড়ল যে এ ম্যাচেই।