নিউ ইয়র্কে টাইমস স্কয়ারে সন্ত্রাসী হামলা পরিকল্পনায় অভিযুক্ত বাংলাদেশী আশিকুল

Slider ফুলজান বিবির বাংলা


ডেস্ক: নিউ ইয়র্কের টাইমস স্কয়ারে সন্ত্রাসী হামলা চালানোর পরিকল্পনা করার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে বাংলাদেশী অভিবাসী আশিকুল আলমকে (২২)। ৭ই জুন তার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। এর আগে ৬ জুন তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি কুইন্সে বসবাস করতেন। কর্তৃপক্ষ বলেছে, জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস এবং আল কায়েদার সাবেক প্রধান ওসামা বিন লাদেনের ভীষণ প্রশংসা করেন আশিকুল আলম। তিনিই টাইমস স্কয়ারে সন্ত্রাসী হামলা চালানোর পরিকল্পনা করেছিলেন। এ জন্য ছদ্মবেশী এক গোয়েন্দা এজেন্টের কাছ থেকে একজোড়া আধা-স্বয়ংক্রিয় পিস্তল কেনার বন্দোবস্ত করেছিলেন। বলা হয়েছিল, ওই পিস্তলের সিরিয়াল নাম্বার তুলে ফেলে তার কাছে সরবরাহ করতে হবে।

এই অস্ত্র দিয়ে তিনি জনবহুল ম্যানহাটানে উত্তম স্থানে হামলা চালাবেন। যুক্তরাষ্ট্রের আইন মন্ত্রণালয় থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়েছে বলে খবর দিয়েছে ভারতের সরকারি বার্তা সংস্থা পিটিআই। একই খবর প্রকাশ করেছে টাইমস অব ইসরাইল, মালয়েশিয়ার নিউ স্ট্রেইটস টাইমস।

এতে বলা হয়েছে, আশিকুল আলম চোখে চশমা ব্যবহার করেন। কিন্তু হামলা চালানোর সময় যদি তা পড়ে যায় তাহলে তার দৃষ্টিশক্তির সমস্যা হবে। এ জন্য তিনি সম্প্রতি চোখের দৃষ্টিশক্তি উন্নত করাতে অপারেশন করিয়েছেন। ফেডারেল চার্জে এ কথা বলা হয়েছে। তিনি টাইমস স্কয়ারে আত্মঘাতী ভেস্ট অথবা এআর-১৫ রাইফেল দিয়ে হামলা চালাতে চেয়েছিলেন। এ জন্য তিনি ও ছদ্মবেশী ওই এজেন্ট বেশ কয়েকবার প্রাথমিক অনুমান হিসাব নির্ধারণে টাইমস স্কয়ার পরিদর্শন করেছেন। তারা মনে করেছিলেন, সেখানে এমন হামলা চালানো গেলে তারা ‘লিজেন্ডে’ পরিণত হবেন।
কিন্তু তাকে সঙ্গ দেয়া ব্যক্তি যে ছদ্মবেশী এজেন্ট তা বুঝতে পারেন নি আশিকুল আলম। অভিযোগে বলা হয়েছে, তার খায়েস ছিল একটি রকেট লঞ্চার দিয়ে লোয়ার ম্যানহ্যাটানে নতুন বিশ্ববাণিজ্য কেন্দ্র ধ্বংস করে দেয়ার। তিনি ওসামা বিন লাদেনের ভূয়সি প্রশংসা করেন। বলেন, লাদেনের মিশন পুরোপুরি সফল হয়েছে। তার হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের হাজার হাজার সেনা নিহত হয়েছে এবং শত শত কোটি ডলার ক্ষতি হয়েছে যুদ্ধে। নিউ ইয়র্কে এফবিআইয়ের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা উইলিয়াম স্বয়েনি বলেছেন, তার উদ্দেশ্য ছিল একটি সন্ত্রাসী হামলা চালানো। তিনি অস্ত্র কিনে এই ভয়াবহ হামলার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। হত্যা করতে চেয়েছিলেন নিউ ইয়র্কারদের, টার্গেট করতে চেয়েছিলেন নির্বাচিত কর্মকর্তাদের এবং হামলা করতে চেয়েছিলেন পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।

অভিযোগে আরো বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের আগস্টে ছদ্মবেশি ওই গোয়েন্দা এজেন্টের সঙ্গে আশিকুল আলমের প্রথম সাক্ষাত হয়। তবে কিভাবে তারা দু’জন একত্রিত হয়েছিলেন সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলা হয় নি। এ নিয়ে ওই ছদ্মবেশী এজেন্টের সঙ্গে তার মোমের আলোতে ১০ মাস ধরে বৈঠক চলতে থাকে। এতে পরিকল্পনা, অস্ত্র কেনা নিয়ে আলোচনা হয়। এ সময়ই আশিকুল আলম আল কায়েদা ও আইএসের প্রশংসা করেন। কোর্টের ডকুমেন্ট অনুযায়ী, ২০১১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলাকে তিনি একটি পরিপূর্ণ সফলতা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

উল্লেখ্য, মিডটাউন ম্যানহ্যাটানে টাইমস স্কয়ারের চারপাশে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ সব স্থাপনা। এখানে সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কিছু হামলার চেষ্টা হয়েছে। ২০১৭ সালে এক ব্যক্তি একটি পাতালপথের করিডোরে পাইপবোমা বিস্ফোরণ ঘটায় এক ব্যক্তি। এই করিডোরটি ব্যস্ততম পোর্ট অথরিটি বাস টার্মিনাল থেকে টাইমস স্কয়ার পর্যন্তু সংযুক্ত করেছে। ওই বিস্ফোরণে তখভন কমিউটার যোগাযোগ বিঘ্নিত হয়। ভীতি ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। যে ব্যক্তি এই হামলা করেছিলেন তিনিই এতে গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় গত বছর সন্ত্রাসের অভিযোগে অভিযুক্ত হন আইএসের আদর্শে উদ্বুদ্ধ বাংলাদেশী আকায়েদ উল্লাহ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *