স্পোর্টস: বৃষ্টি বিঘিœত ম্যাচে আগে ব্যাট করে ৩৬.৫ ওভাওে ২০১ রানে অলআউট হয়েছিল শ্রীলঙ্কা। ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে আফগানিস্তানের লক্ষ্য ৪১ ওভারে ১৮৭ রান। খুব কঠিন কিছু নয়। কিন্তু মামুলি এই টার্গেটও তাড়া কওে জিততে পারেনি আফগানিস্তান। কার্ডিফে ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে শ্রীলঙ্কা ম্যাচটি জিতেছে ৩৪ রানে।
দারুণ বোলিংয়ে শ্রীলঙ্কাকে ম্যাচটি হাতে এনে দিয়েছেন নুয়ান প্রদীপ। আফগানিস্তানের মিডল অর্ডার ধসিয়ে দেন দিয়েছেন পেসারই। ওপেনিংয়ে নেমে ২৫ বলে ৩০ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন হজরতউল্লাহ জাজাই। তারপরও ৫৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে আফগানরা।
ষষ্ঠ উইকেটে হাল ধরেন অধিনায়ক গুলবাদিন নাইব আর নাজিবুল্লাহ জাদরান। এরা দু’জন যোগ করেন ৬৪ রান। নাইবকে (২৩) এলবিডব্লিউ করে এই জুটিটিও ভেঙে দেন প্রদীপ। এরপর একাই লড়াই করে গেছেন জাদরান। কিন্তু ৫৬ বলে ৪৩ রান করে নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে তিনি রানআউটের কবলে পড়লে আর স্বপ্নপূরণ হয়নি আফগানিস্তানের। শ্রীলঙ্কার পক্ষে নুয়ান প্রদীপ ৪টি আর লাসিথ মালিঙ্গা নিয়েছেন ৩টি উইকেট।
এর আগে বৃষ্টিবিঘিœত ম্যাচে এক দফা খেলা বন্ধ থাকার পর ওভার কমিয়ে দেয়া হয়। তবে বৃষ্টির আগেই কাজের কাজ সেরে নিয়েছিল আফগানরা। ৩৩ ওভারে যখন খেলা বন্ধ হয়, ৮ উইকেটে শ্রীলঙ্কা তখন ১৮২ রানে। পরে দ্বিতীয়বার খেলা শুরু হলে ৪১ ওভার করা হয়। তারপরও পুরো ওভার খেলতে পারেনি লঙ্কানরা। ৩৬.৫ ওভারে তাদের ইনিংস থেমেছে ২০১ রানেই। ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে আফগানিস্তানের লক্ষ্য কমিয়ে দেয়া হয়েছে। জয়ের জন্য ৪১ ওভারে তাদের করতে হবে ১৮৭ রান।
অথচ টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা দুর্দান্ত ছিল শ্রীলঙ্কার। দিমুথ করুনারতেœ আর কুশল পেরেরা উদ্বোধনী জুটিতে তুলেন ৯২ রান। করুনারতেœ ৩০ রান করে ফিরলেও ২১ ওভারেই ১ উইকেটে ১৪৪ রান তুলে ফেলেছিল শ্রীলঙ্কা। কিন্তু ২২তম ওভারে এসে চমক দেখালেন মোহাম্মদ নবী। ওভারের দ্বিতীয় বলে সেট ব্যাটসম্যান লাহিরু থিরিমান্নেকে (২৫) ইনসাইড এজে বোল্ড করেন। চতুর্থ বলে কুশল মেন্ডিসকে (২) স্লিপে বানান ক্যাচ। এক বল বিরতি দিয়ে ওভারের শেষ ডেলিভারিতে একইভাবে স্লিপে ক্যাচ অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ (০)। ১ উইকেটে ১৪৪ রান তোলা শ্রীলঙ্কা পরিণত হয় ৪ উইকেটে ১৪৬ রানে। ২ রানেই হারায় ৩ উইকেট। লঙ্কানদের সেই ধাক্কা কাটিয়ে উঠার সুযোগ না দিয়ে পরের ওভারে আঘাত হানেন পেসার হামিদ হাসান। এবার উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ শাহজাদের ক্যাচ ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। এমন পরিস্থিতিতে বোকার মত রানআউট হন থিসারা পেরেরা (২)। ১০ রান করে দৌলত জাদরানের বলে বোল্ড হন ইসুরু উদানা। শেষ পর্যন্ত ধৈর্য্য ধরে রাখতে পারেননি কুশল পেরেরাও। লঙ্কান এই ওপেনারের ৮১ বলে ৮ বাউন্ডারিতে গড়া ৭৮ রানের ঝকঝকে ইনিংসটি থামে রশিদ খানের বলে উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ শাহজাদের ক্যাচ হয়ে। এরপরই বৃষ্টি হানাদেয় কার্ডিফে।
এর আগে কার্ডিফে টস জিতে আগে বোলিং করার পেছনে মেঘলা আবহাওয়ার কারণ উল্লেখ করেছেন আফগান অধিনায়ক গুলবাদিন নায়েব। বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার কাছে নিজেদের প্রথম ম্যাচে হারলেও, এ ম্যাচের একাদশে কোনো পরিবর্তন আনেনি আফগানিস্তান। একটি পরিবর্তন এসেছে লঙ্কান একাদশে। জিভান মেন্ডিসের বদলে সুযোগ পেয়েছেন নুয়ান প্রদীপ।
শ্রীলঙ্কা একাদশ: দিমুথ করুনারাতেœ, লাহিরু থিরিমান্নে, কুশল পেরেরা, কুশল মেন্ডিস, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ, ধনঞ্জয় ডি সিলভা, থিসারা পেরেরা, ইসুরু উদানা, সুরাঙ্গা লাকমল, নুয়ান প্রদীপ এবং লাসিথ মালিঙ্গা।
আফগানিস্তান একাদশ: মোহাম্মদ শাহজাদ, হযরতউল্লাহ জাজাই, রহমত শাহ, হাশমতউল্লাহ শহিদি, মোহাম্মদ নবী, গুলবদিন নায়েব, নাজিবউল্লাহ জাদরান, রশিদ খান, দাওলাত জাদরান, মুজিব উর রহমান এবং হামিদ হাসান।