টেকনাফ, কক্সবাজার: কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলা থেকে ৯ লাখ ৬২ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। তবে এ সময় কাউকে আটক করা যায়নি।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের দমদমিয়াসংলগ্ন নাফ নদী এলাকা থেকে ইয়াবার এই চালান উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে টেকনাফ ২ বিজিবির সদর দপ্তরের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করেন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ ফয়সল হাসান খান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সহকারী পরিচালক (কোয়াটার মাস্টার) নুরুল হুদা।
মোহাম্মদ ফয়সল হাসান খান বলেন, গতকাল রাতে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে তাঁরা জানতে পারেন, নাফ নদী দিয়ে মিয়ানমার থেকে ইয়াবার বড় চালান ওমর খাল এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করবে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে তাঁর নেতৃত্বে দমদমিয়া চৌকির বিশেষ দল নাফ নদীতে টহল জোরদার করে। একপর্যায়ে নাফ নদীর জাদিমোরা এলাকা দিয়ে হাতে চালানো একটি নৌকা বাংলাদেশের দিকে আসতে চায়। এ সময় বিজিবি তাদের চ্যালেঞ্জ করে। ইয়াবা চোরাকারবারিরা বিজিবি টহল দলের উপস্থিতি টের পেয়ে তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়।
এ সময় আত্মরক্ষার্থে ৮টি গুলি চালায় বিজিবি। পাচারকারীরা নৌকায় করে পালানোর চেষ্টা করলে বিজিবির ধাওয়ায় নদীতে ঝাঁপ দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে নৌকাটিতে তল্লাশি চালিয়ে ৯ লাখ ৬২ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় কাউকে আটক করতে না পারলেও নৌকাটি জব্দ করা হয়েছে।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ ফয়সল হাসান খান আরও বলেন, উদ্ধার করা ইয়াবাগুলো ব্যাটালিয়ন সদরে জমা রাখা হয়েছে। ঈদকে সামনে রেখে ইয়াবার চালান পাচার করা হচ্ছিল। বিজিবি সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে পরে তা ধ্বংস করা হবে।
বিজিবি সূত্র জানায়, এ বছরের ১ জানুয়ারি থেকে গতকাল (১ জুন) পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৪১ লাখ ৫৩ হাজার ৪৯২ পিস ইয়াবাসহ ১১৫ জনকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে টেকনাফে বিজিবির সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন ১৭ জন ইয়াবা ব্যবসায়ী ও পাচারকারী।
চলতি বছরের গত ১১ মার্চ হ্নীলার দমদমিয়া ওমরখাল এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল ৮ লাখ ৪০ হাজার ইয়াবার একটি চালান। গতকাল উদ্ধার করা ৯ লাখ ৬২ হাজার ইয়াবার এ চালান বিজিবির সর্বোচ্চ উদ্ধার।
গত বছরের ৪ মে থেকে দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশেষ মাদকবিরোধী অভিযান শুরু হয়। এ নিয়ে র্যাব-পুলিশ-বিজিবির সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধ ও এলাকায় মাদকের প্রভাব বিস্তারের ঘটনায় কক্সবাজার জেলায় ১০৭ ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এক রোহিঙ্গা নারীসহ ২২ রোহিঙ্গা নাগরিক রয়েছেন। ‘বন্দুকযুদ্ধে’ টেকনাফে ৬৬ ও উখিয়ায় দুজন নিহত হন।