ডেস্ক: সুন্দরবন ও কুমিল্লায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে পৃথক বন্দুকযুদ্ধে ৬ জন নিহত হয়েছে। এরমধ্যে সুন্দরবনে ৪ বনদস্যু ও কুমিল্লায় দুই মাদক ব্যবসায়ী রয়েছে। মঙ্গলবার রাতে র্যাব ও বিজিবির সঙ্গে পৃথক এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। বিস্তারিত আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো রিপোর্টে-
স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা থেকে জানান, সুন্দরবনে র্যাবের সঙ্গে বনদস্যুদের কথিত বন্দুকযুদ্ধে বাহিনী প্রধান হাসানসহ চারজন নিহত হয়েছে। গত মঙ্গলবার দিবাগত গভীর রাতে পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের জোংড়ার খাল এলাকায় এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলো- হাসান বাহিনীর প্রধান হাসান (৪০), তার সহযোগী মোস্তাঈন (৩৭), মাইনুল (৩৫) এবং হায়দার (৪৪)। তবে নিহতদের ঠিকানা জানাতে পারেনি র্যাব। এ সময় ১১টি আগ্নেয়াস্ত্র ও কয়েকটি ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। অস্ত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে পাঁচটি পাইপ গান, তিনটি ওয়ান শুটার গান, দু’টি বন্দুক ও একটি এয়ার গান। গতকাল দুপুরে নিহতদের লাশ ও উদ্ধার হওয়া অস্ত্র-গুলি খুলনার দাকোপ থানায় হস্তান্তর করেছে র্যাব। র্যাব-৮ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. তাজুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে র্যাব-৮ এর একটি দল নিয়মিত টহলে বের হয়। ওই সময় টহল দল পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের জোংড়ার খাল এলাকায় পৌঁছালে একদল বনদস্যুরা র্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এ সময় র্যাবও পাল্টা গুলি ছোড়ে। রাত ১২টা থেকে থেমে থেমে বুধবার ভোররাত পর্যন্ত দুই পক্ষের মধ্যে কথিত বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। পরে দিনের আলো ফুটলে র্যাব সদস্যরা বনের জোংড়া খাল এলাকায় তল্লাশিতে নেমে চারজনের গুলিবিদ্ধ লাশ ও বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করে। ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালিয়ে একটি এয়ারগান, দু’টি বন্দুক, তিনটি ওয়ান শুটার গান, পাঁচটি পাইপগান ও দেশীয় ধারালো অস্ত্রসহ বিপুল পরিমাণ গুলি উদ্ধার করে। এ ছাড়া দস্যুদের ব্যবহৃত কাপড় এবং আস্তানায় রক্ষিত বিপুল পরিমাণ রসদ সামগ্রী ও তৈজসপত্র উদ্ধার করা হয়। নদীতে মাছ ধরা জেলেরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে নিহত ব্যক্তিদের সুন্দরবনের দস্যু হাসান বাহিনী বলে শনাক্ত করেন। এর মধ্যে বাহিনী প্রধান হাসানকেও শনাক্ত করা হয়।
তাজুল ইসলাম বলেন, সাগর ও সুন্দরবন দস্যুমুক্ত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি নিয়েছে। র্যাব যখন সুন্দরবনে কঠোর নজরদারিতে, তখন হাসান নামের এক ব্যক্তি দলছুট কিছু দস্যুকে নিয়ে সম্প্রতি নিজ নামে বাহিনী গঠন করেন। এ বাহিনী সাগর ও সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল জেলে, বাওয়ালি ও মৌয়ালদের অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করে আসছিল।
দাকোপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, র্যাবের পক্ষ থেকে চারজনের লাশ, অস্ত্র ও বেশকিছু রসদ হস্তান্তর করা হয়েছে। দস্যুদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
স্টাফ রিপোর্টার, কুমিল্লা থেকে: কুমিল্লায় বিজিবির সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দুই মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। নিহতরা হলো, রুবেল (৩৪) ও সেলিম (৩৮)। গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে জেলার চৌদ্দগ্রাম পৌর এলাকার নাটাপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গতকাল সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ১০ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল আবু মোহাম্মদ মহিউদ্দিন। নিহত রুবেল চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আমানগণ্ডা গ্রামের গোলাম মোস্তফার ছেলে এবং সেলিম (৩৬) একই উপজেলার শালুকিয়া (আদর্শগ্রাম) গ্রামের আলী আহাম্মদের ছেলে। বিজিবি জানায়, নিহত রুবেল ও সেলিম বিজিবি ও পুলিশের তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী। পৌর এলাকার নাটাপাড়া এলাকায় মাদক ব্যবসায়ী রুবেল ও সেলিমসহ তাদের সহযোগীরা অবস্থান করছে এমন গোপন খবর পেয়ে বিজিবি সেখানে অভিযান চালায়। মাদক ব্যবসায়ীরা বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। বিজিবিও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালালে রুবেল ও সেলিম নামে ২ মাদক ব্যবসায়ী গুলিবিদ্ধ হন। এ সময় অন্যরা পালিয়ে যায়। পরে আহত মাদক ব্যবসায়ীদের উদ্ধার করে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। এ সময় তাদের কাছ থেকে ২ হাজার ১৫৫ পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়। এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম থানায় মামলা হয়েছে। এদিকে একই রাতে জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার বৌয়ারা বাজার সংলগ্ন মান্দারী কবরস্থান এলাকায় বিজিবির সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ বকুল মিয়া ও আবদুল করিম নামে আরো দুই মাদক ব্যবসায়ী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ ওই ২ মাদক ব্যবসায়ীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বিজিবি ঘটনাস্থল থেকে ৩ হাজার ৭৫০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করেছে।