মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজারে বড়লেখা উপজেলায় নারী আইনজীবী আবিদা সুলতানা নিজ বাসায় নৃসংশভাবে খুন হয়েছেন। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আইনজীবীর ভাড়াটিয়া স্থানীয় একটি মসজিদের ইমাম তানভির আহমদকে (৩২) কে আটক করা হয়েছে। আজ দুপুরে শ্রীমঙ্গল থানার পুলিশ বরুনা এলাকা থেকে তাকে আটক করে। এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
পুলিশ, নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার দক্ষিণভাগ উত্তর ইউপির মাধবগুল গ্রামের মৃত হাজী আব্দুল কাইয়ুমের তিন মেয়ের মধ্যে আইনজীবী আবিদা সুলতানা সবার বড়। আবিদা মৌলভীবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী। স্বামী শরীফুল ইসলাম একটি ওষুধ কোম্পানিতে কর্মরত আছেন। তিনি স্বামীর সঙ্গে মৌলভীবাজার শহরে বসবাস করতেন।
আবিদা সুলতানার বাবার বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে স্থানীয় এক মসজিদের ইমাম জকিগঞ্জ উপজেলার আমান্দি গ্রামের মইনুল ইসলামের ছেলে মাওলানা তানভীর আহমদ থাকতেন।
গতকাল রোববার সকাল আনুমানিক সাড়ে ৮টায় আবিদা বিয়ানীবাজারে বোনের বাড়ি থেকে জরুরি প্রয়োজনে বাবার বাড়িতে যান। বিকেল আনুমানিক চারটার দিকে আবিদার বোন তার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাচ্ছিলেন না। পরে আবিদার বোনেরা তাকে খুঁজতে বাবার বাড়ি দক্ষিণভাগ উত্তর ইউপির মাধবগুল গ্রামে আসেন। বাড়িতে এসে তারা কাউকে পাননি। এ সময় ঘরের একটি কক্ষ বন্ধ দেখতে পেয়ে তাদের সন্দেহ হয়। পরে তারা পুলিশ নিয়ে গিয়ে ঘরের মেঝেতে বোনের লাশ পড়ে থাকতে দেখেন।
নিহত আবিদার বোনের স্বামী মারুফ আহমদ বলেন, দু’দিন আগে তিনি আমাদের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। রোববার সকালে আবিদা আপা মৌলভীবাজারে যাওয়ার জন্য আমাদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন। এরপর থেকে তার কোনো খোঁজ মিলছিল না। ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়। পরে আমার স্ত্রী খুঁজতে এখানে (মাধবগুলে) আসেন। বাড়িতে একটি কক্ষ বন্ধ দেখতে পান। পরে পুলিশ নিয়ে গিয়ে কক্ষ থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইয়াছিনুল হক বলেন, নিহতের মাথা ও গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। ঘটনারপর থেকে ভাড়াটিয়া তানভির আহমদ পলাতক থাকায় তানভীরের মা ও স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেয়া হয়েছে।
এদিকে দুপুরে শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুস ছালেক মুঠোফোনে জানিয়েছেন আজ দুপুর দেড়টার দিকে মাওলানা তানভির আহমদকে শ্রীমঙ্গল উপজেলার বরুনা এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে। তার জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।