ঢাকা: ২৯ এপ্রিল তাঁর কেন্দ্রে ভোট মিটে যাওয়ার পর থেকে শহরের শাড়ির দোকান চষে ফেলেছেন তিনি। নতুন কেনা শাড়ির মধ্যে থেকে আজ, বৃহস্পতিবার বিশেষ দিনের জন্য আলাদা করে কয়েকটি শাড়ি বেছে রেখেছেন। সকাল সকাল তার মধ্যে থেকে একটি পরে ফল ঘোষণা শোনার ইচ্ছে রয়েছে তাঁর। বেলা বাড়লে তিনিই জয়ী হয়েছেন নিশ্চিত হলে অন্য একটি শাড়ি পরবেন বলে মনস্থির করেছেন আসানসোলে তৃণমূলের তারকা প্রার্থী মুনমুন সেন।
সেই পরিকল্পনা বিস্তারিত জানাতে গিয়ে সুচিত্রা-কন্যা বললেন, ‘‘শাড়ি আমার খুব পছন্দের। সকলেই বলছে আমি জিতব। তবে আমি জানি না। যেমন ভেবে রেখেছি, তেমন ভাবেই শাড়িগুলো পরার সুযোগ পাব আশা করি।’’ শেষ মুহূর্তের টেনশন নেই? তারকার উত্তর, ‘‘ভয় পেলে মানুষের কাজ করা যায় না। ছোটবেলায় এ সব বিশেষ দিনের আগে একটু ভয় করত। তবে আমার জন্য যাঁরা এত দিন খেটেছেন, ওঁদের কথা ভেবেই ভয় চলে গিয়েছে।’’ শাড়ি সঙ্গে নিয়েই বুধবার বিকেলে মুনমুন বেরিয়ে পড়েছেন আসানসোলের পথে।মুনমুনের মতোই জয়ের ব্যাপারে নিশ্চিত আসানসোলের আর এক তারকা-প্রার্থী বিজেপির বাবুল সুপ্রিয়। প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মুনমুনের নাম ঘোষণার পরেই তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় টিপ্পনী কেটে পোস্টও দিয়েছিলেন। ভোট মিটতে রাজ্যের অন্যত্র প্রচার সেরে বাবুল এখন আবার আসানসোলের নিজের ফ্ল্যাটে। বুধবার জানালেন, মোদী হাওয়া আর বিজেপিতে মানুষের আস্থা এই দু’য়ে ভর করে জিতবেন তিনিই। তাঁর কথায়, ‘‘সারা দিন মজা করে কাটালাম। কাল সকাল থেকে ইভিএম জানিয়ে দেবে মানুষ কার সঙ্গে রয়েছেন। তৃণমূল রিগিং করার চেষ্টা করেছে, তবে সুবিধা করতে পারেনি। কর্মীদের বলছি, শান্তিপূর্ণ ভোট গণনা হচ্ছে কি না, সে দিকে খেয়াল রাখুন।’’
আগাম শান্তির বার্তা দিয়ে রেখেছেন ঘাটালে তৃণমূলের প্রার্থী, অভিনেতা দেব। তাঁকে ঘিরে ভোটের দিনই বুথে বুথে যে গণ-উন্মাদনা দেখা গিয়েছিল, তাতে তাঁর বড় প্রতিদ্বন্দ্বীও দেবকে হারানো যাবে বলে নিশ্চিত নন। অভিনেতা অবশ্য বললেন, ‘‘যে-ই হারুক, যে-ই জিতুক, দেশে যেন কোনও ভাবেই অশান্তি না ছড়ায়, তা সকলকেই নিশ্চিত করতে হবে। যাঁকে কাজের লোক মনে করবেন মানুষ, তাঁকেই বাছবেন তাঁরা। এতে ঝামেলার কিছু নেই।’’ কথা শেষ করেই জানিয়ে দিলেন, সকাল সকাল ভোট গণনার জন্য ঘাটালে রওনা দেবেন। কোনও টেনশন নেই? অভিনেতার উত্তর, ‘‘আগের বার একটু হয়েছিল। এ বার জানি, মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেই আছেন।’’এ দিন ভোট গণনার আগের দুপুরে বিজয়গড়ের কাছে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের সাংগঠনিক কার্যালয়ে সব কাউন্সিলর, দলীয় কর্মীদের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজ সারেন যাদবপুরের তৃণমূল প্রার্থী মিমি চক্রবর্তী। তাঁর কথায়, ‘‘দেড় মাস পরিবারের মতো সবাই মিলে কেটেছে। সেটা মনে রেখেই খাওয়াদাওয়া হল।’’ সন্ধ্যায় বই পড়ে এবং পোষ্য দুই সারমেয়র সঙ্গে খুনসুটিতেই সময় কেটেছে তাঁর। ফল বেরোনোর কয়েক ঘণ্টা আগে টেনশনে নেই তিনি। বরং পরীক্ষার পরে যে পড়ুয়ার হাতে আর কিছু থাকে না, তা-ই বলছেন তৃণমূলের তারকা প্রার্থী। ‘‘আমি আমার পরীক্ষা দিয়ে ফেলেছি। এখন আর আমার কিছু করার নেই।’’ মঙ্গলবারই পুরী থেকে ফিরেছেন মিমি। তাঁর কথায়, ‘‘পুরীতে খুব ভাল ভাবে জগন্নাথ দর্শন সেরেছি।’’
মঙ্গলবার অবশ্য শহরের বাইরেই কাটিয়েছেন তৃণমূলের আর এক তারকা প্রার্থী নুসরত জহান রুহি। তাঁর সঙ্গে ফোন বা টেক্সট মেসেজে যোগাযোগ করা যায়নি। নুসরতের ঘনিষ্ঠেরা বলছেন, ‘‘দিদি বাইরে রয়েছেন।’’ আজ, বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ি থেকেই ফলাফলের দিকে নজর রাখবেন বসিরহাটের প্রার্থী। তবে বসিরহাটে গণনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা এবং প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। বসিরহাট দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক দীপেন্দু বিশ্বাস তেমনই জানিয়েছেন এ দিন।
সূত্রঃ আনন্দবাজার পত্রিকা