ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল): টাঙ্গাইলে চলন্তবাসে এক গৃহবধূকে গণধর্ষণ মামলায় চার আসামীর সবাইকে যাবজ্জীবন কারাদ- দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে অর্থদ- করা হয়েছে। টাঙ্গাইল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) বেগম খালেদা ইয়াসমিন আজ বুধবার দুপুরে ৩ আসামীর উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন। এ মামলার চার আসামীর মধ্যে একজন পলাতক রয়েছে।
দণ্ড প্রাপ্তরা হলো, গাড়ি চালক হাবিবুর রহমান (নয়ন, হেলাপার মো. খালেক ভুট্টো, অপর আসামী আশরাফুল। এ ঘটনায় পলাতক রয়েছে গাড়ির সুপার ভাইজার রেজাউল করিম জুয়েল।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন টাঙ্গাইল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিশেষ পিপি নাসিমুল আক্তার নাসিম। তাকে সহায়তা করেন মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা টাঙ্গাইল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আতাউর রহমান আজাদ।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১লা এপ্রিল কালিয়াকৈরের মৌচাকে কর্মরত এক গার্মেন্টস কর্মী টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী বাসস্ট্যান্ড থেকে ভোর পাঁচটার দিকে ‘বিনিময় পরিবহনের’ একটি বাসে কালিকৈরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। এ সময় বাসে যাত্রী না থাকার সুযোগে বাসটি কিছুদূর যাওয়ার পর কন্টাকটার বাসের জানালা দরজা বন্ধ করে দেয়। পরে গাড়ির চালক হাবিবুর রহমান নয়ন তাকে পেছনের ছিটে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পালাক্রমে বাসের কন্টাকটার ও হেলপার ধর্ষণ করে। পরে বাসটি ঢাকা না গিয়ে টাঙ্গাইল ময়মনসিংহ রোডের একটি ফাঁকা জায়গায় ওই গৃহবধুকে নামিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে ওই গৃহবধু মধুপুর সাসস্ট্যান্ড এসে তার স্বামীকে বিষয়টি জানালে স্বামী তাঁকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাসের চালক, হেলপার ও সুপার ভাইজারকে ওইদিনই গ্রেপ্তার করে।
গৃহবধূ স্বামী বাদী হয়ে টাঙ্গাইল মডেল থানায় ৯ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করে। পরে পুলিশ তদন্ত শেষে চার জনকে আসামী করে চার্জশিট দিয়ে ছয়জনকে অব্যহতি প্রদান করে। গ্রেপ্তারকৃত তিন আসামী আদালতে স্বীকারোক্তি জবানবন্দী প্রদান করেন। গৃহবধূকে আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দী প্রদান করা হয়। জবানবন্দীতে গৃহবধূ আশরাফুল নামের আরো একজনের নাম উল্লেখ করে। এতে মোট আসামীর সংখ্যা দাড়ায় ১০ জন। এ মামলায় বাদীসহ ৯ জন আদালতে স্বাক্ষী প্রদান করে।