ঢাকা: জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলায়য় চাল রপ্তানি ভবিষ্যৎ খাদ্য সংকট ঝুঁকি বহন করে। পরীক্ষা-নিরিক্ষা ছাড়া তড়িৎ সিদ্ধান্ত নেয়া কোনোভাবেই ঠিক হবে না। উদ্বৃত্ত চাল বিদেশে রপ্তানি করতে সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তার জন্য ‘বড় মাশুল দিতে হতে পারে’। এখন চাল রপ্তানি করা শুরু করলে দুর্যোগের সময়ে বহু দরেও বাজার থেকে আর চাল কেনা যাবে না। শনিবার জাপা চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, মিল মালিক নয়, সরকারীভাবে কৃষকদের কাছ থেকে উৎপাদিত উদ্বৃত্ত ধান নির্ধারিত ন্যায্যমূল্যে কিনতে হবে। প্রয়োজনে বেসরকারী মালিকানাধীন গুদামগুলো সরকারী নিয়ন্ত্রণে নিয়ে জরুরি ভিত্তিতে ধান সংরক্ষণ করতে হবে। জাপা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বোরো ধান নিয়ে কৃষকরা বিপাকে পড়েছেন। হতাশাগ্রস্থ কৃষকরা বোরো মৌসুমে ধান কাটতে পারছেন না। গণমাধ্যমের খবর ও স্থানীয় কৃষক ও কৃষি বিভাগের বরাত দিয়ে প্রচারিত সংবাদে জানা যায়, প্রতি মণ ধান উৎপাদনে কৃষকদের খরচ পড়েছে ৯০৬ টাকা ৫০ পয়সা। অথচ বাজারে প্রতি মণ ধানের দাম ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা। এছাড়া ধান কাটতে একজন কৃষি শ্রমিককে তিন বেলা খাবার সহ মজুরি বাবদ খরচ হয় ৬০০ থেকে ১০০০ টাকা দিতে হচ্ছে। এতে কৃষকরা মাঠের ধান কাটতে উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছেন।
এদিকে প্রতি মণ ধান যখন ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, ঠিক তখনই স্থানীয় বাজারে মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে প্রতি মন ১৬০০ থেকে ২০০০ টাকায়। কৃষকদের অভিযোগ রয়েছে মধ্যস্বত্বভোগীদের প্রতি, তাদের কাছেই আমাদের কৃষি জিম্মি হয়ে পড়েছে। সরকার ধান ক্রয় করে মিল মালিকদের কাছ থেকে, এতে কৃষকরা ন্যায্যমূল্য পায় না।
তিনি আরো বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার বিদেশে চাল রপ্তানি করতে বিবেচনা করছে। আমরা মনে করি, চাল রপ্তানির পূর্বে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে হবে। কোনো বিশেষ পরিস্থিতিতে চাল/খাদ্যদ্রব্য প্রয়োজন হলে, দ্রুততার সাথে আমদানী করা সম্ভব নয়। এতে ভয়াবহ খাদ্য সংকটের ঝুঁকি সৃষ্টি হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন জাপা মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা, প্রেসিডিয়াম সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী, আলমগীর সিকদার লোটন, নাজমা আক্তার, এমরান হোসেন মিয়া, যুগ্ম- মহাসচিব শফিকুল ইসলাম শফিক, জহিরুল আলম জহির, হাসিবুল ইসলাম জয়, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল্লাহ শফি, মনিরুল ইসলাম মিলন, মো. হেলাল উদ্দিন, যুগ্ম-দপ্তর সম্পাদক এম এ রাজ্জাক খান, কেন্দ্রীয় নেতা আদেলুর রহমান আদেল প্রমুখ।