সাধারণ যাত্রীদের সর্বোচ্চ টিকিট প্রাপ্তির স্বার্থে এবার রমজানের ঈদে ট্রেন ভ্রমণে কোটার বাইরে ভিআইপিদের টিকেট সংরক্ষণ করছে না বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ট্রেনের টিকেট পেতে প্রতি বছরই চরম ভোগান্তি ও কষ্ট পেতে হয় যাত্রীদের।
এসব বিষয়ে আসন্ন ঈদে ভিআইপিদের জন্য টিকিটের বিশেষ বরাদ্দ না রাখতে নিদের্শনা দিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, কোটার বাইরে বিশেষ কারণ দেখিয়ে টিকিট আটকে রাখা হবে না।
এ কারণে এবার স্থানীয় পর্যায়ে রাজনৈতিক সুপারিশ ছাড়াও বিভিন্ন ধরণের টিকেট ক্রয় করতে আসা লোকজনের সাথে স্টেশনে অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটতে পারে বলেও আশঙ্কা করছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, একটি ট্রেনের যে পরিমাণ টিকিট থাকে তার একটি নির্দিষ্ট অংশ কোটা ও ভিআইপিদের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়। এ কারণে অধিকাংশ সময় বিক্রি কার্যক্রম শুরু হওয়া মাত্রই টিকিট শেষ হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে।
কাউন্টারে, রেল স্টেশনে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। অনেক সময় ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েন যাত্রীরা। যাত্রীদের আস্থা ধরে রাখতে এবার অনুরোধের বিশেষ টিকিট সার্ভিসের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে না বলে দাবি করেছেন রেলওয়ে সংশ্লিষ্টদের।
পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (সিসিএম) এস এম মুরাদ হোসেন বলেন, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী গুরুত্বপূর্ণ কোটা ছাড়া সব ধরনের কোটা সাময়িক ভাবে বাতিল করা হয়েছে। এক্ষেত্রে রেলওয়ে কর্মীরাও বরাদ্দপত্র ছাড়া তাদের নিজেদের জন্য টিকিট নিতে পারবে না। সাধারণ যাত্রীদের সর্বোচ্চ টিকিট প্রাপ্তির স্বার্থে নেয়া এ সিদ্ধান্ত শতভাগ বাস্তবায়ন করতে রেলওয়ে কাজ করছে। তাছাড়া এবার অ্যাপের মাধ্যমে ৫০ শতাংশ টিকিট বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে এ বিষয়ে কোন ধরণের বিশৃংখলা না হয় সে জন্য আইনশৃংখলা রক্ষাকারি বাহিনীর সদস্যসহ রেল কর্মকর্তা-কর্মচারিরা প্রতিনিয়ত সহযোগিতা করবেন বলেও জানান তিনি।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবছর রোজা আসলেই রেলের বাণিজ্যিক বিভাগ ভিআইপিদের টিকিটের চাহিদাপত্র তৈরি করেন। ভিআইপিদের মধ্যে রয়েছে রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন, রাজনৈতিক নেতা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সাংসদ, মন্ত্রী, ব্যবসায়ী, আইনজীবি, বাণিজ্যিক সংগঠন ও ক্লাব, সরকারি বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তা, রেলওয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী, গণমাধ্যমকর্মী। চাহিদা অনুযায়ী নিয়মের চেয়েও বেশি টিকিট সিএনএস অর্থাৎ রেলের অনলাইন টিকিট ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সার্ভার থেকে ব্লক (সংরক্ষণ) করে রাখা হয়। এরপর ঢাকার কমলাপুর ও বিমানবন্দর স্টেশন ও চট্টগ্রাম স্টেশনের বিশেষ কাউন্টার থেকে আগে থেকেই আটকে রাখা টিকিটগুলো পর্যায়ক্রমে প্রদান করা হয়। কিন্তু এবছর শুধুমাত্র প্রতিবন্ধী, এমপি, মন্ত্রী, বিচারপতি ও রেলওয়ে কর্মচারীদের পাসের টিকিট ছাড়া আর কোন টিকিট আগাম সংরক্ষণ যাবে না।