গাজীপুর: গাজীপুরে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হিজবুত তাহরীর বাংলাদেশ’র ‘‘থিংক ট্যাঙ্ক’ ও অর্থদাতাসহ দুই সক্রিয় সদস্যকে আটক করেছে র্যাব-১ এর সদস্যরা। এসময় তাদের কাছ থেকে উগ্রবাদী কার্যক্রমে উদ্বুদ্ধ করনের বইসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি জব্দ করেছে। বৃহষ্পতিবার র্যাব-১’র স্পেশালাইজ কোম্পানী পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার লেঃ কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল-মামুন এ তথ্য জানিয়েছেন।
আটককৃতরা হলো- সিরাজগঞ্জ জেলা সদরের বহুলী এলাকার সুরুজ্জামান শেখ এর ছেলে মোঃ হামিদ সিরাজী (৩৩) এবং ঢাকার ধানমন্ডি এলাকার মৃত আবু হেনা ফজলে এলাহীর ছেলে মোঃ ওসামা ফজলে এলাহী (২৯)। হামিদ সিরাজী গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার রাজেন্দ্রপুরের সাটিয়াবাড়ি এলাকায় এবং ওসামা ফজলে এলাহী চট্রগ্রামের বায়েজীদ বোস্তামী থানাধীন কুঞ্জছায়া এলাকায় থাকত।
র্যাব-১’র স্পেশালাইজ কোম্পানী পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার লেঃ কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল-মামুন জানান, বাংলাদেশ সরকার কর্র্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষিত সংঘঠন ‘হিজবুত তাহ্রীরের বেশ কিছু সদস্য দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি ও নাশকতা ঘটানোর উদ্দেশ্যে গত ১৪ মে গাজীপুরের শ্রীপুর থানাধীন সাটিয়াবাড়ি গ্রামের মোল্লাবাড়ি রোডের দেলোয়ারের বাড়িতে হামিদ সিরাজীর ভাড়াকৃত বাসায় একত্রিত হয়ে গোপন মিটিং করছে। এ গোপন সংবাদ পেয়ে র্যাব-১’র স্পেশালাইজ কোম্পানী পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার লেঃ কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল-মামুনের নেতৃত্বে র্যাব সদস্যরা ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত ‘‘হিজবুত তাহরীর বাংলাদেশ’’ এর সক্রিয় সদস্য মোঃ হামিদ সিরাজীকে (৩৩) আটক করে।
এসময় তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে র্যাব সদস্যরা বাসার কক্ষ হতে উগ্রবাদী কার্যক্রমে উদ্বুদ্ধ করনের ২৩ টি বই, টি শার্টসহ বিভিন্ন মালামাল ও সরঞ্জমাদি জব্দ করেছে। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে চট্টগ্রামের বায়েজীদ বোস্তামী থানা এলাকার একটি ভবনে অভিযান চালিয়ে ওই সংগঠনের অন্যতম ‘‘থিংক ট্যাঙ্ক’’ ও অর্থদাতা ওসামা ফজলে এলাহীকে আটক করা হয়।
র্যাব-১ এর ওই কর্মকর্তা আরো জানান, জিজ্ঞাসাবাদে তারা নিজেদের হিজবুত তাহরীরের সক্রিয় সদস্য বলে র্যাবকে জানায়। ওসামা ফজলে এলাহী উক্ত সংগঠনের অন্যতম থিংক ট্যাঙ্ক ও অর্থদাতা।
তারা osama abdullah নামক ফেইসবুক আইডি ব্যবহার করে ওসামা ফজলে এলাহী যুক্তরাজ্য ভিত্তিক দাওয়াতী সংগঠন ও IERA এর অনুসরণে Mission dawah Bangladesh নামক ফেইসবুক পেইজ খুলে ওই পেইজের এ্যাডমিন হিসেবে আন্তর্জাতিক উগ্রবাদি মতাদর্শের সমর্থনে বিভিন্ন পোস্ট করে। ওই পোস্ট লিফলেট আকারে প্রচারের জন্য সে হামিদ সিরাজীকে বিকাশের মাধ্যমে আট হাজার টাকা দেয়।
আটককৃতরা আরো জানায়, তারা তাদের অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালিত করার জন্য ওইসব বইপুস্তক বিলি-বন্টন, প্রশিক্ষণ ও তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে তথ্য আদান-প্রদান করে একে অপরকে সাহায্য সহায়তা ও প্ররোচিত করাসহ বিভিন্নভাবে উগ্রবাদী কার্যক্রমকে বেগবান ও অর্থায়ন করে আসছিল। আটককৃতদের মধ্যে অনেকই তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ে বিশেষজ্ঞ। তারা দেশের জন নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার লক্ষ্যে নাশকতা করে জনগণের মধ্যে আতংক সৃষ্টি করার জন্য ষড়যন্ত্র করে আসছিল। এব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।