ঢাকা: গতকাল ঘোষণা হওয়া ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি নিয়ে একের পর এক বিতর্ক সৃষ্টি হচ্ছেই। সোমবার বিকালে কমিটি ঘোষণার পরপরই ক্যাম্পাসে উত্তেজনা শুরু হয়। পদবঞ্চিতরা বিক্ষোভ শুরু করেন। এর জের ধরে ব্যাপক মারধরের শিকারও হতে হয় তাদের। তবে রাত না গড়াতেই কমিটি নিয়ে বেরিয়ে আসে নতুন আরো চাঞ্চল্যকর তথ্য। ছাত্রলীগের কমিটিতে এবার স্থান পেয়েছেন বিবাহিতরা। অভিযোগ রয়েছে একাধিক পদ পাওয়া নেতা-নেত্রী বিয়ে করেছেন। শুধু তাই নয়, বয়স ত্রিশের বেশি এমনও কয়েকজনও রয়েছেন এই পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে। আরো অবাক করা বিষয়, ছাত্রত্ব নেই, ব্যবসায়ীরা কমিটিতে স্থান পেয়েছেন।
ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রের ৫-এর গ ধারা অনুযায়ী, কোনো বিবাহিত ব্যক্তি সংগঠনটির পদে আসতে পারবেন না বলে উল্লেখ আছে। তবে সদ্য ঘোষিত সংগঠনটির ৩০১ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটিতে বেশ কয়েকজন বিবাহিত হয়েও ঠাঁই হয়েছে।
পদবঞ্চিতদের অভিযোগ ও কমিটির বিশ্লেষন বলছে, কেন্দ্রীয় কমিটিতে সহ-সভাপতি পদ পাওয়া সোহানী তিথি, উপসম্পাদক রুশি চৌধুরী, সাংস্কৃতিক বিষয়ক উপ-সম্পাদক পদ পাওয়া আফরিন সুলতানা লাবণী, সহ-সম্পাদক পদ পাওয়া আনজুমান আরা আনু ও সামিহা সরকার সুইটি বিবাহিত। এছাড়াও সহ-সভাপতি ইশাত কাসফিয়া ইরাও বিবাহিত বলে অভিযোগ অনেকের।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হলের সাধারণ সম্পাদক জেয়াসমিন শান্তা ফেসবুকে লেখেছেন, নারীদের বিবাহিত হওয়া ও আন্ডারগ্রাউন্ড প্রটোকল দেয়া বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটিতে বড় পোস্ট পাওয়ার মূলমন্ত্র।
এদিকে গতকাল বিক্ষোভকারীরা জানিয়েছেন, ছাত্রলীগে প্রতিষ্ঠিত ঠিকাদারি ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে বয়স্ক, বিভিন্ন মামলার আসামিরাও রয়েছেন। পদ দেওয়ার ক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতিরও অভিযোগ উঠেছে। কমিটিতে সহসভাপতি পদ পেয়েছেন সাদিক খান। তার স্ত্রী সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেলে এর প্রতিবাদে রাজু ভাস্কযের সামনে মানববন্ধন হয়েছিল। ঠিকাদারি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত আছেন সহসভাপতি তানজিল ভূঁইয়া তানভীর। তার বয়সও ত্রিশের ঊর্ধ্বে। ছাত্রলীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর কোটায় তানভীর পদ পেয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন এক ছাত্রলীগকর্মী।
এ ছাড়া বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে আল নাহিয়ান খান জয় ও তৌফিকুল হাসান সাগরের বিরুদ্ধে। ছাত্রলীগ সভাপতির আপন ভাই আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক রাকিনুল হক চৌধুরী। তিনি এর আগে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগে সক্রিয় ছিলেন। সহসভাপতি আতিকুর রহমান খানের বিরুদ্ধে মারামারিসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। পরিবারের সদস্যদের প্রায় সবাই বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত সহসভাপতি পদ পাওয়া জহিরুল ইসলাম জহিরের। পরীক্ষায় নকলের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার হয়েছিলেন সহ-সভাপতি প্রদীপ চৌধুরী। সাংগঠনিক সম্পাদক শাকিল ভূঁইয়ার পরিবারের সব সদস্যই বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। সৃজন ভূঁইয়া সরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা। অভিযোগ রয়েছে, সভাপতি শোভনের বন্ধু হিসেবে পদ পেয়েছেন তিনি।