ঢাকা: সর্বশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী কাল শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে ১০টার মধ্যে ভারতের ওড়িশা উপকূলে আছড়ে পরবে ঘূর্ণিঝড় ফণী। প্রথমে শুক্রবার রাত বা শনিবার সকালে আঘাত হানার কথা বলা হলেও ঝড়ের গতি বাড়তে থাকায় ধারণা করা হচ্ছে কাল ভোরেই আঘাত হানছে মহাশক্তিধর এ ঘূর্নিঝড়। এটি এখন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। প্রথমে ফণীর মুখে পরবে ওড়িশার গোপালপুর-চাদবাড়ি জেলা। ওড়িশার পর ফণী ধেয়ে আসবে পশ্চিমবঙ্গের দিকে। ফণী এই রাজ্যের ১৫টি জেলার ওপর তান্ডব চালাবে বলে মনে করা হচ্ছে। ফণীর প্রভাবে প্রবল ঝড় বৃষ্টি হবে ২৪ পরগনা, মেদিনীপুর, কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, মুর্শিদাবাদ, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বীরভূম, বর্ধমান, নদিয়াতে। কাল দুপুরে কলকাতায় আঘাত হানবে ফণী।
পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে এ সময় ঝড়ের গতিবেগ থাকবে ১০০ থেকে ১১৫ কিলোমিটারের বেশি। সেখান থেকে শুক্রবার বিকেলে বাংলাদেশে প্রবেশ করবে ফণী। তারপর তা উপকূল ঘেঁষে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে চলে যাবে। বাংলাদেশের থেকে আয়তনে প্রায় দ্বিগুন এই ঘূর্নিঝড়ের প্রভাব দেশের প্রায় প্রতিটি জেলাতেই অনুভব করা যাবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। ধারণা করা হচ্ছে, খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর উপকূলে আঘাত হেনেই বাংলাদেশে প্রবেশ করবে ফণী। বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ক্রমশ চীনের দিকে গিয়ে দুর্বল হবে ফনী।
এদিকে ফণীকে নিয়ে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো জুড়ে। ওড়িশায় বন্ধ করে দেয়া হয়েছে ১০০টিরও অধিক ট্রেন। উপকূলীয় জেলা পুরী, জগতসিংহপুর, কেন্দ্রাপাড়া, ভাদ্রক, বালাসোর, ময়ুরভঞ্জ, গানজাম, খোরদা, কাট্টাক ও জয়পুরে যুদ্ধকালীন প্রস্তুতির মতো করে শুরু হয়েছে উদ্ধার অভিযান। উচ্চ সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে প্রতিরক্ষা বাহিনীকে। সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে এমন এলাকায় আগে থেকেই মোতায়েন করা হয়েছে নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, কোস্ট কার্ড, জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের (এনডিআরএফ) কর্মকর্তাদের, ওড়িশা ডিজাস্টার র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স ও অগ্নিনির্বাপণকারীদের। ওড়িশায় আগামী তিন দিনের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়েছে সব স্কুল ও কলেজ।
ফণীকে কেন্দ্র করে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে বাংলাদেশের ঘূর্ণিঝড় প্রস্ততি কেন্দ্র। দেশের সবগুলো প্রস্তুতি কেন্দ্রকে ইতোমধ্যেই সতর্ক করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচীর বরগুনা অঞ্চলের উপ-পরিচালক কিশোর কুমার সরদার গণমাধ্যমকে বলেছেন, কী কী করণীয় দিকনির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, পরিস্থিতির যদি অবনতি হয় তাহলে মাইকিং করে লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে আনতে মাঠে নামার কাজও শুরু হবে।