ঢাকা: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ আগের অবস্থান থেকে সামান্য উত্তরপশ্চিম দিকে এগিয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরও ঘণীভূত হয়ে উত্তর বা উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। ফলে দেশের সমুদ্র বন্দরগুলোকে চার নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আগামী ৩রা মে এটি প্রবল বেগে আঘাত হানতে পারে ভারতের উড়িষ্যায়। এরপর তা বাংলাদেশের সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায় আছড়ে পড়তে পারে। এ জন্য সমুদ্রবর্তী এলাকায় ৪ নম্বর সতর্কতা সংকেত জারি করা হয়েছে। চট্টগ্রাম এলাকার সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। খুলনায় জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে খোলা হয়েছে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়, বুধবার দুপুর ১২টায় ঘূর্ণিঝড়টি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ২৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল।
ঘূর্ণিঝড়টি আরো ঘনীভূত হয়ে উত্তর বা উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে বলে পূর্বাভাসে বলা হয়।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রে ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের এক টানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে।
সাগর উত্তাল থাকায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে দুই নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে চার নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সাগরে মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোতে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
এদিকে ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের খবর, ঘূর্ণিঝড়টি প্রচণ্ড শক্তিশালী (ভেরি সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম) রুপ নিয়ে উড়িষ্যা উপকূলে আঘাত হানতে পারে। স্থলভূমিতে ঢোকার সময় তার গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৭০ থেকে ২০০ কিলোমিটার।
তারা বলছে, আগামী ১২ ঘণ্টার মধ্যে শক্তি বাড়িয়ে অতি ভারী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে ফণী। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণী আরও শক্তিশালী হয়ে হারিকেনের তীব্রতাসম্পন্ন অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে বলে গতকাল জানানো হয়।
উড়িষ্যায় আঘাত হানার পর ঘূর্ণিঝড়ের অভিমুখ হবে পশ্চিমবঙ্গের দিকে। ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, প্রবল এই ঘূর্ণিঝড়েরর কবলে পড়ে মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি থেকে মানুষকে বাঁচাতে ট্রেন চলাচলের ক্ষেত্রে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হতে পারে।