শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ হামলার ঘটনার প্রেক্ষিতে দেশবাসীকে সতর্ক করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশবাসীকে সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেন, পৃথিবীর কোথাও এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটুক তা আমরা চাই না। কোথাও এ ধরনের অস্বাভাবিক কিছু দেখলে সাথে সাথেই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করবেন।
বুধবার একাদশ সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশনে সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর পর্বে নওগাঁ-২ এলাকার এমপি শহীদুজ্জামান সরকারের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে নাতি জায়ানের মৃত্যুতে শোকাহত প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
এর আগে সন্ধ্যা পৌনে ৭টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরু হয়।
সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সন্ত্রাস জঙ্গীবাদ কোনো কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না। আবার মনুষ্য সৃষ্ট সন্ত্রাসও আমরা দেখি।
নুসরাতকে গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারল। যে একটা অন্যায়ের প্রতিবাদে সে করেছিল, এই ধরনের যে অমানবিক ঘটনাগুলো ঘটে এটা সত্যিই মানব জাতির জন্য অত্যন্ত অকল্যাণকর। আমাদের দেশে আমরা এরকম বোমা হামলা, জঙ্গি হামলা তা কঠোর হাতে হস্তে দমন করেছি।
আমি দেশবাসীকে বলব, দেশবাসীকে সতর্ক থেকে যদি কোথাও কোনো অস্বাভাবিক কোনো কিছু তারা পান, সঙ্গে সঙ্গে যেনো তারা আমাদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাকে জানান। আমরা চাই না এ ধরনের ঘটনা পৃথিবীর কোথাও ঘটুক। এ ধরনের ঘৃণ্য হামলা যারা করে তারা সন্ত্রাসী, জঙ্গিবাদ। তাদের কোনো ধর্ম নাই। তাদের কোনো দেশ, কাল, পাত্র নেই। জঙ্গি জঙ্গিই, সন্ত্রাসী সন্ত্রাসীই। আর ইসলাম ধর্মের নামে যারা সন্ত্রাস করে, তারা আমাদের পবিত্র এই ধর্মকে সকল মানব জাতির কাছে হেয় প্রতিপন্ন করে দিচ্ছে। ইসলাম শান্তির ধর্ম। সব ধর্মেই হিন্দু, মুসলমান, খ্রিস্টান, বোদ্ধ সব ধর্মেই কিন্তু শান্তির কথাই বলা আছে। কিন্তু তারপরও যে, কিছু লোক ধর্মীয় উন্মাদনায় তারা যে, মানুষের প্রতি আঘাত আনে জীবন কেড়ে নেয় এটা মানব জাতির জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক এবং কষ্টকর।
তিনি আরো বলেন, জায়ান চৌধুরী একটা ছোট্ট বাচ্চা। মাত্র আট বছর বয়স। আজকে সে আমাদের মাঝে নেই। তার বাবাও মৃত্যুশয্যায়। বাবাকে এখনো জানতে দেওয়া হয়নি যে, জায়ান নেই। সে বারবার খুঁজছে। আর তার মা, বাবা পরিবারের অবস্থা আপনারা বুঝতেই পারেন। আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে বলবো, এ ঘটনায় যারা মারা গেছে শুধু তারা নয়, যাদের জন্য আমরা শোক প্রস্তাব নিলাম, তাদের সকলের আত্মার মাগফেরাত আমি কামনা করছি।