স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা: আপন ভাই ধানের শীষের কর্মীর সঙ্গে “স” অক্ষরের মিল থাকায় আটক নৌকার কর্মী মো সামাদকে গাজীপুর থেকে আটকের পর ঢাকার আশুলিয়া থানা হাজতে পাওয়া গেছে দুই দিন পর।
আজ শুক্রবার আটককৃতদের স্বজনরা খুঁজতে খুঁজতে আশুলিয়া থানায় গিয়ে হাজতে দেখা পায় সামাদের। এর আগে বুধবার রাতে গাজীপুর মহানগরের ৩২ নং ওয়ার্ডের গুতিয়ারা গ্রামের হাজী কফিল উদ্দিনের ছেলে আঃ সামাদ নিজ বাসা থেকে সাদা পোষাকধারী পুলিশের হাতে আটক হয়। ধানের শীষের কর্মী সন্দেহে পুলিশ তাকে আটক করে। প্রকৃত অর্থে সামাদ নৌকার কর্মী ও তার ভাই আঃ সালাম ধানের শীষের স্থানীয় কেন্দ্র কমিটির আহবায়ক। আটকের পর সামাদের পরিবার গাজীপুর থানা ও ডিবিতে গিয়ে তার কোন সন্ধান পায়নি। পুলিশ আটকের সময় গাজীপুর ডিবিতে যোগাযোগের কথা বললেও গাজীপুর ডিবি তা অস্বীকার করে। আজ শুক্রবার সামাদের পরিবার তাকে আশুলিয়া থানা হাজতে পাওয়া গেছে বলে জানায়।
আটকের পর আটককৃত সামাদের স্ত্রী মানছুরা আক্তার শিমু জানান, বুধবার রাত দেড়টায় স্থানীয় আতাউর রহমানের কথা বলে পুলিশ দরজায় নক করে। এক পর্য়ায়ে সামাদের মা সাহারা খাতুন(৬৫)দরজা খোলে বের হলে পুলিশ তার সাথে খারাপ আচরণ করেন। এই সময় সামাদ দরজা খোলে বের হলে পুলিশ তার নাম জিজ্ঞাসা করে আটক করে।
সামাদ ও তার স্ত্রী শিমু পুলিশকে জানায়, তারা নৌকা প্রতীকের পক্ষে কাজ করছেন ও তাদের বাসার ভেতরে থাকা কয়েকশত নৌকার লিফলেট দেখানো হয়। কিন্তু পুলিশ তা না শুনে সামাদকে আটক করে নিয়ে যায়। তবে পুলিশ বলেছিল, নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম ফোন করলে ছেড়ে দিবে কিন্তু এত রাতে জাহাঙ্গীর আলমকে ফোনে না পাওয়ায় পুলিশ তাকে নিয়ে যায়।
সামাদের ভাই আঃ সালাম জানান, সামাদ নৌকার কর্মী, আর তিনি ধানের শীষের কর্মী। আঃ সালাম ৩২নং ওয়ার্ডের সাক্রাউড়ি ভোট কেন্দ্রের ধানের শীষের কেন্দ্র পরিচালনা কমিটির আহবায়ক। আর তার ভাই সামাদ নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের কর্মী।
নৌকা প্রতীকের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম তিতুমীর জানান, অনেক লোক বুকে নৌকার প্ল্যাকার্ড লাগিয়ে পকেটে ধানের শীষের প্ল্যাকার্ডবহন করছেন। আটক আঃ সামাদ আমাদের কর্মী কি না যাচাই করে দেখা হচ্ছে।
ধানের শীষ প্রতীকের মিডিয়া সেল থেকে বলা হয়েছে, সামাদ তাদের কেন্দ্র পরিচালনা কমিটির সদস্য। কিন্তু সামাদের ভাই আঃ সালাম বলেছেন, সামাদ না, তিনি(সালাম) ধানের শীষের কেন্দ্র পরিচালনা কমিটির আহবায়ক। আটককৃত সামাদ নৌকা প্রতীকের একজন বলিষ্ঠ কর্মী।
সাধারণ মানুষ মনে করছেন, দুই ভাই দুই প্রতীকের কর্মী হলেও নামের মধ্যে “স” অক্ষরটির মিল থাকায় এই ঘটনা হয়ে থাকতে পারে।
স্থানীয় ভোগড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জাকির হোসেন জানান, সামাদ নামের কেউ আটক হয়নি।
জয়দেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) আমিনুল ইসলাম জানান, আমি এই নামে কাউকে গ্রেফতার বা আটক করিনি।
এ বিষয়ে জানতে ফোন দিলে গাজীপুর ডিবির দায়িত্বশীল কোন কর্মকর্তা ফোন রিসিভ করেননি।
আজ বেলা আড়াইটা পর্যন্ত সামাদের পরিবার সামাদ কোথায় আছেন, তা জানতে পারেনি। গাজীপুর পুলিশ ও আদালতে খোঁজ নিয়ে কোথাও তাকে পাওয়া যায় নি বলে জানিয়েছেন সামাদের পরিবার। একই সঙ্গে তারা সামাদের অবস্থান নিশ্চিত করার দাবী জানান।