আজব তালগাছটি আর নেই

বিচিত্র

talকুমিল্লা জেলার তিতাস উপজেলার ঐচারচর গ্রামের আজব তালগাছটি আর নেই। রোগমুক্তি কামনায় যে তালগাছটিকে ঘিরে হাজারো মানুষ জড়ো হচ্ছিলেন, সেটি কে বা কারা শনিবার রাতে করাত দিয়ে কেটে ফেলেছে।

এতে করে এলাকাবাসীর মধ্যে দেখা দিয়েছে তীব্র ক্ষোভ। এই কারণে ওই এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। মৃত গাছটিকে দেখতে ছুটে আসছে আশপাশের উপজেলা থেকে হাজারো মানুষ। তারা তালগাছটি হত্যাকারীদের বিচার দাবি করছেন।

আজব তালগাছ ঘিরে প্রতিদিন জড়ো হতেন হাজারো মানুষ (ছবি : মামুন)

এলাকাবাসী বলছেন, তালগাছটি কি দোষ করেছে! কি দরকার ছিল এই তালগাছটি কেটে ফেলার? কেন কবরের ওপর থাকা তালগাছটি রাতের আঁধারে কেটে ফেলা হলো- এমন প্রশ্ন এলাকাবাসীর। কেউ কেউ বলছে তালগাছটি নেই তাতে কী হয়েছে। তালগাছটির গোড়া তো আছে। এটাকে সংরক্ষণ করতে হবে। এই জন্য এর চারপাশে বেড়া তৈরি করতে হবে। যাতে এর শেষ চিহ্নটুকু অন্তত থাকে।

এলাকাবাসী এখন মৃত তালগাছটির গোড়ায় চুমু খাচ্ছেন। এখনো তাদের বিশ্বাস- গাছটি না থাকলেও এর গোড়ায় তার আত্মা (!) বেঁচে আছে। যে আত্মা তাদের রোগমুক্তি করে দেবে। যে কারণে সৃষ্টি হয়েছে প্রচণ্ড ভিড়। ভিড়ের কারণে গাছটির কাছে যাওয়া যাচ্ছে না। কাটা অংশটিকে ঘিরে এখন আবার শুরু হয়েছে তোলপাড়। যিনিই কাটা অংশটির কাছে যাচ্ছেন, তার আর সেখান থেকে ফিরে আসতে মন চাইছে না। কাটা অংশটিকে জড়িয়ে ধরে অনেকে কেঁদে ফেলছেন।

উল্লেখ্য, তালগাছটি একটি কবরস্থানের মাঝখানে ছিল। এই তালগাছটি ঘিরে দুই সপ্তাহ ধরে তোলপাড় ছিল অত্র উপজেলায়। বিশেষ করে শনি ও মঙ্গলবারে সেখানে জনসমুদ্রে পরিণত হতো। কেউ কেউ এই জায়গাটি সংরক্ষণের জন্য টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

গত দুই সপ্তাহ যাবৎ একাধারে তিন দিন এই তালগাছটির চারদিকে একবার করে ঘুরে যার যা ইচ্ছা অনুযায়ী রোগমুক্তি হচ্ছিল। সে জন্য শিশু থেকে শুরু করে যুবক-যুবতী, বৃদ্ধ সবাই এই তালগাছটির চারদিকে ঘুরত। আর তাতেই তাদের রোগমুক্তি হতো বলে বিশ্বাস। কেউ কেউ গাছের গোড়া থেকে মাটি সংগ্রহও করেছেন। বিশ্বাস করত, এই মাটি শরীরে লাগালেও বিভিন্ন রোগমুক্তি হয়।

এ জন্য ঐচারচর গ্রামে আসতে আরেকটি গ্রাম আবদুল্লাহপুরের মানুষের জন্য নদীর মাঝখানে তিনটি অস্থায়ী বাঁশের সাঁকো তৈরি করে দেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া জায়গাটির আশপাশের জমির ফসল তুলে ফেলা হয়েছিল, যাতে করে মানুষ সহজেই ওই জায়গাটিতে আসতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *