এক বা একাধিক ব্যক্তি এসে বাসা-বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর পাওয়া যায় লাশ! সিলেটে এই কায়দায় একের পর এক খুনের ঘটনা ঘটেই চলেছে। গত প্রায় এক মাসে এই কায়দায় ঘটেছে ছয়টি খুনের ঘটনা। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন সাধারণ মানুষ।
শুরুটা হয় গত ২৩ ফেব্রুয়ারি। সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার সাকরপুর গ্রামের সাবুল নম (২৪) নামের এক তরুণকে রাত সাড়ে ৮টার দিকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। পরদিন সকালে উপজেলার আলীরগাঁও ইউনিয়নের কোটাপাড়া নামক স্থান থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা হয়।
২৪ ফেব্রুয়ারি একই কায়দায় খুনের ঘটনা ঘটে সিলেট নগরীর হাউজিং এস্টেট এলাকায়। শাহেদ আহমদ (১৬) নামের এক স্কুলছাত্রকে বাসা থেকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যায় তার বন্ধুরা। পরে আম্বরখানা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হয় শাহেদ। হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যায় সে। পরে তার বন্ধুসহ ১৯ জনকে আসামি করে মামলা হয়।
চলতি মার্চ মাসের ১২ থেকে ১৮ তারিখের মধ্যে সিলেটে এই কায়দায় খুন হন চারজন।
গত ১২ মার্চ নগরীর মদিনা মার্কেট এলাকায় ছুরিকাঘাতে খুন সাব্বির আহমদ (২২) নামের এক যুবক। ওইদিন সন্ধ্যায় তাকে নগরীর মজুমদারিস্থ তার বাসা থেকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল তার বন্ধুরা। এ খুনের ঘটনায় মামলা হয় সাব্বিরের বন্ধুসহ ১৮ জনকে আসামি করে।
এর পরদিন, ১৩ মার্চ কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার দরাকুল এলাকায় বাড়ি থেকে ডেকে নেয়া হয় বদরুল আমিন (২০) নামের এক তরুণকে। পরদিন সকালে গলাকাটা লাশ মিলে তার। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়।
১৫ মার্চ ওসমানীনগর উপজেলার মান্দারুকা গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমান মছু (১৫) নামের কিশোরের লাশ স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের মাঠ থেকে উদ্ধার করা হয়। আগের দিন সন্ধ্যায় তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল তার তিন বন্ধু। পরে পুলিশ মো. জীবন নামে মছুর এক বন্ধুকে গ্রেফতার করে। সিলেট জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) মাহবুবুল আলম জানিয়েছেন, তিন বন্ধু মিলে মছুকে হত্যার বিষয়টি আদালতে স্বীকার করেছে জীবন।
১৮ মার্চ ভোরে ওসমানীনগর উপজেলা পূর্ব তাজপুর গ্রামে এক প্রবাসীর বাড়ির পানির ট্যাঙ্ক থেকে আনিছ উল্লাহ আনিক (৫০) নামের এক বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার করা হয়। তার স্ত্রী আফসা বেগম হাফসা জানিয়েছেন, আগের রাতে আনিককে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় এক ব্যক্তি। পরে পুলিশ এ হত্যার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করে। এরা আদালতে হত্যার স্বীকারোক্তি দিয়েছে বলে জানান ওসমানীনগর থানার ওসি আল মামুন।