হাসানুজ্জামান হাসান,লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ বিষবৃক্ষ তামাকের গন্ধ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে লালমনিরহাটের ৫ উপজেলার অধিকাংশ কৃষক। মাঠ থেকে তামাক সংগ্রহ করে সেটিকে বাজারজাতকরণের ক্ষেত্রে সরাসরি পুরুষের পাশাপাশি লালমনিরহাটের নারী ও শিশুরা কাজ করছে। ফলে দিন দিন নানা ধরনের অজানা রোগের শিকার হচ্ছে তারা।
অল্প খরচে বেশি লাভের আশায় লালমনিরহাটের কৃষকরা তামাক চাষের দিকে ঝুঁকছে।
মাঠের পর মাঠ শুধু তামাক আর তামাক। বিষবৃক্ষ তামাক চাষের ফলে যেমন ক্ষতি হচ্ছে আবাদি কৃষি জমির, তেমনি স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে এ অঞ্চলের কৃষকের।
একদিকে জমিতে বছরের পর বছর তামাক চাষের কারণে জমি হারাচ্ছে জৈবনিক শক্তি ও উর্বরতা অন্যদিকে তামাক উৎপাদন ও প্রক্রিয়াকরণে যুক্ত কৃষক পরিবারের লোকজন থাকছেন স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে।
ফুসফুসের রোগসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন তারা। জ্বর, সর্দি, কাশির মতো সাধারণ উপসর্গগুলো তাদের নিয়মিত সমস্যা।
কৃষি বিভাগ সাড়ে ৯ হাজার হেক্টর জমিতে তামাক চাষের খবরাখবর রাখলেও বাস্তবে চাষ হয়েছে দ্বিগুণেরও বেশি জমিতে।
সেই সঙ্গে বিভিন্ন তামাক কোম্পানি কৃষকদের তামাক চাষে উৎসাহী করতে সার, বীজ ও সুদমুক্ত ঋণ সুবিধা দিচ্ছে।
তাৎক্ষণিক লাভের আশায় কৃষকরাও তামাক চাষে মনোনিবেশ করছেন পরিবার পরিজন নিয়ে।
যেসব কৃষক তাদের পরিবারের সদস্যদের তামাক চাষে যুক্ত করছেন তাদের শ্রমিক মজুরী বাবদ খরচ না লাগলেও যারা শ্রমিক দিয়ে কাজ করান তাদের লাভ চলে যায় প্রায় শূন্যের কোঠায়।
তামাক চাষের কারণে জমি উর্বরতা হারিয়ে ফেলায় অন্যান্য ফসল উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।
বিকল্প ফসল চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে সরকারের কৃষি বিভাগ প্রচারণা চালালেও তা কাজে আসছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কালীগঞ্জ উপজেলার তিস্তা চরাঞ্চলের এলাকার নারী শ্রমিক বলেন, ‘আমরা সাধারণত বাড়ির কাজ সম্পূর্ণ করে অবসর সময়ে তামাক সংগ্রহের কাজ করে থাকি।
তবে যখন তামাকের পাতাগুলো বাছাই করে গাঁথি তখন এর গন্ধ আমাদের খুব খারাপ লাগে। নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু কী করব? টাকার জন্য আমরা অনেক কষ্ট শিকার করে এ কাজ করি।’