হাসানুজ্জামান হাসান,লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ পাল্টে যাচ্ছে লালমনিরহাটের তিস্তারচরের মানুষের জীবনযাত্রা। ঘুরে দাড়িয়েছে চিরকালের অভাবি মঙ্গা কবলিত চরাঞ্চলের মানুষেরা।
শুস্ক মৌসুমে পানি শুণ্য নদীর বিস্তীর্ণ মরুর বুকে ঘটছে সবুজের বিপ্লব।
তিস্তা নদীর ভাঙ্গনের শিকার হয়ে বন্যা কবলিত এলাকার লোকজন সহায় সম্পদ হারিয়ে নি:স্ব হয়ে পড়ে। অন্যের জমি, রাস্তায় কিংবা আশ্রয়ন কেন্দ্রে হয় ওইসব লোকজনের মাথা গোঁছার ঠিকানা।
ঠিক সে সময় ভূট্টার চাষাবাদ চরাঞ্চলের মানুষজনের কাছে হয়ে উঠে আর্শীবাদ স্বরুপ। জেগে উঠা চরে ভূট্টার চাষাবাাদ তাদের ভাগ্যবদলে নিয়ামক হয়ে দেখা দিয়েছে।
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়নের তিস্তা চরের মোঃ আজাহার মিয়া(৪৭), বলেন, তিস্তা নদীর ভাংগনের শিকার হয়ে সহায় সম্পদ হারিয়ে নি:স্ব হয়ে পড়ি। কিন্ত জেগে উঠা চরে ভূট্টা চাষাবাদ আমাদের ভাগ্য বদলে গেছে।
তবে স্থানীয়ভাবে ক্রয় কেন্দ্র না থাকায় ভূট্টার ন্যায্য মূল্য পায়না বলে দাবী তাদের। এছাড়া তিস্তার বামতীরে বাঁধ হলে চরে আরো অনেক কৃষি জমি জাগবে বলে দাবী তাদের।
রফিকুল ইসলাম (৪০) একই অভিমত ব্যক্ত করেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সেচ প্রদানের মাধ্যমে ভূট্টা চাষ করে স্বাবলম্বি হয়ে উঠছে কৃষকরা। তবে উৎপাদিত ভূট্টার নির্দিষ্ট কোন ক্রয় কেন্দ্র না থাকার কারনে বিপাকে পড়েছেন তারা।
পানি শূণ্য তিস্তা। কিন্তু দুপারের চরাঞ্চলে সবুজের সমারোহ। শত শত একর জমিতে চর এলাকার স্থানীয় মানুষ আবাদ করেছেন ভূট্টা।
আর এই ভূট্টা-ই পাল্টে দিয়েছে এক সময়ের অভাবী কর্মহীন মানুষের জীবন চিত্র। বালু মাটিতে তামাক ও ভূট্টা ছাড়া অন্যান্য ফসল আবাদ না হওয়ায় বেশী লাভের আশায় ভূট্টা চাষ করেছেন কৃষকরা। তারা জানান, মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ভুট্টা চাষ করছি আমরা কিন্তু লাভবান হচ্ছে মধ্য সত্যভূগীরা।
আমাদের উৎপাদিত ভূট্টা নির্দিষ্ট ক্রয় কেন্দ্র না থাকার কারনে নিরুপায় হয়ে তাদের কাছে বিক্রি করতে হচ্ছে।এছাড়া তিস্তার বামতীরে নির্মিত বাঁধটি সম্প্রসারিত হলে আরো কৃষি জমি বাড়বে। তাই এ নদীর বামতীরে বাঁধ সময়ের দাবী।
হাতীবান্ধা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন জানান, মোট ১২ হাজার ৮শ’ হেক্টর জমিতে ভূট্টা চাষ হয়েছে।
গত বছর ছিল ১০ হাজার ২০ হেক্টর জমি। গত বছরের চেয়ে ২৮ শ’ হেক্টর জমিতে বেশি ভুট্টার চাষাবাদ হয়েছে।