ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের রাজধানী কলকাতাতে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৯তম জন্মবার্ষিকী। একইসাথে এই দিনটিকে বাংলাদেশের জাতীয় শিশু দিবস হিসেবেও পালন করা হল। এ উপলক্ষ্যে কলকাতার বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন প্রাঙ্গনে দিনভর বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
এদিন, প্রধান অনুষ্ঠানটি হয় কলকাতার ৮ নং স্মিথ লেন-এ অবস্থিত বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত ‘বেকার গভর্নমেন্ট হোস্টেল’-এ।
সকালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান কলকাতার বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশার তৌফিক হাসান, বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু, উপ-হাইকমিশনের প্রথম সচিব (প্রেস) মোহ. মোফাকখারুল ইকবাল, কাউন্সেলর (কনস্যুলার) মনসুর আহমেদ, কাউন্সেলর বি.এম জামাল হোসেন, কাউন্সেলর (শিক্ষা ও ক্রীড়া) শেখ শফিউল ইমাম, কাউন্সেলর শাহনাজ আখতার রানু, দ্বিতীয় সচিব (রাজনৈতিক) মিজ মৌসুমী ওয়াইজ প্রমুখ। পৃথক ভাবে সোনালী ব্যাংক, বাংলাদেশ বিমানের পক্ষে থেকেও বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
এদিন, বিকাল ৩টায় উপ-হাইকমিশন প্রাঙ্গণে শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
বিকাল ৫টায় মিশন প্রাঙ্গণে বানীপাঠ, শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বঙ্গবন্ধুর উপর প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। সন্ধ্যা ৭টায় রয়েছে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান।
এদিকে, বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বিমান বসু জানান, ‘আমি কলকাতায় থাকলে এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করি। বঙ্গবন্ধু ১৯৪৫-৪৬ শিক্ষাবর্ষে বর্তমানে মৌলানা আজাদ কলেজ (পূর্বতন ইসলামিয়া কলেজ)-এ লেখাপড়া করতেন। আমিও ওই কলেজে পড়তাম এবং বঙ্গবন্ধু এই বেকার হস্টেলের ২৪ নম্বর ঘরে থাকতেন। আমি তখন ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বলেছিলাম যে এই ঘরটিকে সংরক্ষণ করে রাখা উচিত। যাই হোক উনি তখনও এত বড় মাপের ছিলেন না, কিন্তু পরবর্তীতে আন্দোলন সময়ের মধ্যে দিয়ে আমাদের কাছে লড়াই সংগ্রামের প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন। তারপর আমরা দেখলাম রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে তিনি একটি রাষ্ট্র গঠনে ভূমিকা নিয়েছিলেন। ’
অনুষ্ঠানের ফাঁকেই নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিমান বসুর মন্তব্য ‘হিউম্যান রাইটস এবং জাতিসংঘ-উভয়েরই হস্তক্ষেপ করা উচিত যে, কেন এই ধরনের ঘটনা ঘটল। যা হয়েছে সেটা মোটেই সমর্থন যোগ্য নয়। ’
অন্যদিকে তৌফিক হাসানও নিউজিল্যান্ডে জঙ্গি হামলা প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমরা যে কোন সন্ত্রাসবাদেরই তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই। আমরা শান্তিপ্রিয় জাতি। সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে আমাদের অবস্থান হল জিরো টলারেন্স। যারা এই ধরনের নারকীয় কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি, যাতে পরবর্তীতে এই ধরনের ঘটনা না ঘটে। যে পরিবারগুলির ক্ষতি হয়েছে তাদের প্রতিও আমাদের আন্তরিক সমবেদনা রইল। ’