ঢাকা: ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫০। সরকারি তথ্যের উদ্ধৃতি দিয়ে এ খবর প্রকাশ করেছে নিউজিল্যান্ডের গণমাধ্যম। ওদিকে শোকার্ত মুসলিমদের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন প্রধানমন্ত্রী জাসিনদা আরডেন। হতাহতদের তিনি প্রিয়জন বলে আখ্যায়িত করেছেন। বলেছেন, তারা নিউজিল্যান্ডের মানুষ। নিহতদের অল্প কয়েকজনের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। হামলাকারী অস্ট্রেলিয়ান ব্রেনটন টেরেন্টের বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ আনা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, হামলাকারী ৫টি অস্ত্র ব্যবহার করেছিল।
তার ছিল অস্ত্রের লাইসেন্স। হামলায় আটক অন্য তিনজনের মধ্যে একজন নারীকে শনিবার কোনো অভিযোগ ছাড়া ছেড়ে দেয়া হয়েছে। ফলে পুলিশি হেফাজতে রয়েছে অন্য দু’জন পুরুষ। হামলার নিন্দা জানিয়ে ও হতাহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সিডনির অপেরা হাউস সাজানো হয়েছিল ভিন্ন আঙ্গিকে। তাতে সিলভার ফার্ন অঙ্কিত করা হয়। নিউজিল্যান্ডের প্রতীকও তুলে ধরা হয় এর মাধ্যমে। শনিবার নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিনদা আরডেনকে দেখা গেছে শোকার্ত মুসলিমদের সঙ্গে সাক্ষাত করছেন। এ সময় তিনি মুসলিম রীতি অনুযায়ী মাথায় কাপড় দিয়েছিলেন।
বলেছেন, রোববার থেকে ক্রাইস্টচার্চে অতিরিক্ত ১২০ জন পুলিশ কর্মকর্তা মোতায়েন থাকবেন। যখনই মসজিদ খোলা হবে তখন তারা তার পাহারা দেবেন। তা ছাড়া ক্রাইস্টচার্চে মোতায়েন থাকবেন আরো অনেক স্টাফ। তিনি নিশ্চিত করেন রোববার মন্ত্রিপরিষদ এ নিয়ে বৈঠক করবে। এ ছাড়া তিনি সেবা দেয়ার জন্য পুলিশ, হাসপাতাল, প্রথমে সহায়তায় এগিয়ে যাওয়া লোকজন ও শিক্ষকদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। তিনি আরো নিশ্চিত করেন, অভিযুক্তদের বিচার হবে নিউজিল্যান্ডেই।
তবে সন্দেহভাজন আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে টেরোরিজম সাপ্রেশন অ্যাক্টের অধীনে অভিযোগ আনা হবে কিনা সে বিষয়ে কিছু বলেন নি তিনি। তবে অস্ত্র আইন পরিবর্তন হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। তিনি ওয়েলিংটনে অবস্থিত কিলবারনিতে মসজিদ পরিদর্শন করেছেন রোববার। সেখানে তিনি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। বলেছেন, সেখানেও এক শোকের ছায়া বিরাজ করছে।
ওদিকে রোববার ক্রাইস্টচার্চে আল নূর মসজিদের বাইরে সমবেত হন শোকার্ত জনতা। তারা হতাহতদের জন্য প্রার্থনা করেন। ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তাদের সবার প্রতি। এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন অনেকে। এক আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয় সেখানে। ফুলের তোড়া দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী জাসিনদা আরডেন। তিনি শোকার্ত, ক্রন্দনরত নারী, পুরষ ও শিশুদের জড়িয়ে ধরেন। তাদের শান্তনা দেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন মেয়র জাস্টিন লেস্টার। তারা পরে মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।